নওগাঁয় চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে দরপত্র ছাড়াই আম গাছের ডালপালা কাটার অভিযোগে থানায় সাধারন ডায়েরী

বিশেষ প্রতিনিধি: নওগাঁর রাণীনগর উপজেলায় রাস্তার পাশের প্রায় লক্ষাধিক টাকা মূল্যের আম গাছের ডালপালা কোনোপ্রকার দরপত্র ছাড়াই কেটে গাছ নষ্ট করার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে।
এদিকে গাছের ডালগুলো কেটে নিয়ে যাওয়ার সময় গ্রামবাসিরা বাধা দেওয়া পর খবর পেয়ে উপজেলা প্রশাসনের নির্দেশে গাছের ডালগুলো জব্দ করা হয়েছে। উপজেলার কালীগ্রাম ইউনিয়নের গৌড়দিঘী গ্রামের রাস্তায় এই ঘটনাটি ঘটেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার কালীগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদ থেকে বরেন্দ্র বহুমূখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের আওতায় গৌড়দিঘী গ্রামের রাস্তার দুই পাশ দিয়ে প্রায় ১ কিলোমিটার রাস্তায় ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে প্রায় ২০বছর আগে কয়েকশ আম গাছ লাগানো হয়।
চলচি মাসের গত রবিবার ১৫/২০ জন ব্যক্তি এসে প্রায় ৫০টি আম গাছের প্রধান ডালপালা কেটে ফেলে সেগুলো নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। যার আনুমানিক মূল্য প্রায় লক্ষাধিক টাকা।
এ সময় গ্রামবাসিরা বাধা দিলে তারা গাছের ডালগুলো কাটা বন্ধ করে দিয়ে দ্রুত পালিয়ে যায়। পরে উপজেলা প্রশাসনকে স্থানীয়রা অবগতি করলে প্রশাসনের নির্দেশে গাছের ডাল-পালা গুলো জব্দ করা হয়।
গ্রামবাসীরা জানান, গত কয়েক বছর থেকে এই গাছগুলোতে প্রচুর আম ধরে। প্রখর রৌদ্রে পথচারিসহ গ্রামবাসি গাছের ছায়ায় বসে থাকেন। গ্রামের লোকজন বাধা না দিলে হয়তো সবগাছগুলো কেটে ফেলা হোত। গ্রামবাসি বাধা দেওয়ায় সেই গাছগুলো ফেলে রেখে দ্রুত পালিয়ে যায় শ্রমিকরা। এ ঘটনায় দ্রুত তদন্ত করে জড়িদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহনের দাবী জানিয়েছেন তারা।
গ্রামবাসীরা আরো জানান প্রভাবশালী একটি দল পেশী শক্তির জোরে দীর্ঘদিন যাবত এই অঞ্চলে নানা রকমের অবৈধ কর্মকান্ড পরিচালনা করে আসছে। সাধারন মানুষরা এই দলের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে। সরকার দলীয় লোক বলে তাদের বিরুদ্ধে কোথাও কোনপ্রকার অভিযোগ করেও কোন লাভ পায়নি স্থানীয় মানুষরা।
স্থানীয় ইউপি সদস্য (মেম্বার) এবাদুল হক ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে বলেন, সংবাদ পেয়ে স্থানীয় প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। ইউনিয়ন পরিষদ থেকে গাছ কাটা হবে এমন তথ্য আমি স্থানীয় সদস্য হিসেবে জানি না। এমনকি এই বিষয়ে ইউনিয়ন পরিষদে কোনপ্রকার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়নি।
বিষয়টি নিয়ে কালীগ্রাম ইউপি চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম বাবলু মন্ডল সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে বলেন, রাস্তাটি বরেন্দ্র বহুমূখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের না কি ইউনিয়ন পরিষদের তা আমার জানা নেই। তবে ওই সব গাছ ইউনিয়ন পরিষদের। গাছের ডাল-পালা অতিরিক্ত হওয়ায় বিভিন্ন সময় দুর্ঘটনা ঘটতো। তাই ডাল-পালাগুলো কেটে দেওয়ার উদ্যোগ নেয়া হয়। টেন্ডার ছাড়াই ইউনিয়ন পরিষদ থেকে ডালগুলো কাটা হয়েছে। পরে রাজস্ব খাতে জমা দেওয়া হবে।
এ বিষয়ে বরেন্দ্র উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের সহকারি প্রকৌশলী সৈয়দ মিজানুর রহমান বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে জানান, রাস্তার গাছগুলো বরেন্দ্র উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের আওতায়। কিন্তু এই গাছগুলোর ডালপালা কাটার অধিকার সংশ্লিষ্ট দপ্তর ছাড়া কারো নেই। এই বিষয়ে গতকাল মঙ্গলবার (১ সেপ্টেম্বর) থানায় একটি সাধারন ডায়েরী দায়ের করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে রাণীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আল মামুন বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে বলেন, টেন্ডার ছাড়া সরকারি কোন গাছ বা ডাল কাটার নিয়ম নেই। ডালগুলো জব্দ করা হয়েছে। এই ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর বিশেষ প্রতিনিধি রুহুল আমীন খন্দকার। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.