দ্রুত অনলাইন পরীক্ষার দাবী শিক্ষার্থীদের : মন্ত্রনালয়ের দিকে তাকিয়ে আছে হাবিপ্রবি প্রশাসন

হাবিপ্রবি প্রতিনিধি: করোনার কারণে ধাপে ধাপে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের ১৪ মাস পেরোলো। নিকট ভবিষ্যতে স্ব শরীরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার সম্ভবনা একেবারেই কম। 
পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক পরীক্ষাগুলো অনলাইনে নেয়া যাবে। তবে শিক্ষার্থীরা কিংবা সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিল না চাইলে অনলাইনে পরীক্ষা আয়োজন করা যাবে না।
গত বৃহস্পতিবার (০৬ মে) বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি) ও উপাচার্য পরিষদের বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
এবিষয়ে হাবিপ্রবির রুটিন উপাচার্য ড. বিধান চন্দ্র হালদার বলেন, ‘পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হলে অনলাইনেই সেমিস্টার ফাইনাল নেয়া হবে।’ পরীক্ষা কবে নাগাদ হতে পারে জানতে চাইলে তিনি বলেন,’ এবিষয়ে মন্ত্রনালয়ের গ্রীন সিগন্যালের অপেক্ষায় আছেন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যরা৷ পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হলে অনলাইন পরীক্ষার দিকেই এগোবে হাবিপ্রবি। ‘
অনলাইনে পরীক্ষার ধরন সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, লিখিত পরীক্ষার বিকল্প হিসেবে ভাইভা এবং ক্রিয়েটিভ এসাইনমেন্ট দেয়া হতে পারে। ল্যাব কোর্সের ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ল্যাব পরীক্ষা নেয়া যেতে পারে। পরীক্ষার নিয়মনীতি নিয়ে একাডেমিক কাউন্সিলে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
এ বিষয়ে পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থী শিহাবুজ্জামান শিহাব বলেন, “আর কতদিন বাসায় বসে থাকবো, বাবা-মায়েরও বয়স হয়ে যাচ্ছে, প্রতিটা বাবা মা’ই চায় তাদের সন্তানরা পরিবারের দায়িত্ব নিক, সেখান থেকে আমরা এক বছর পিছিয়ে গেলাম। আজ এই অবস্থায় আমার পরিবারের কর্তার যদি কিছু হয়, তাহলে আমার পড়াশুনা চালানো একদমই সম্ভব না। সে হিসেবে অনলাইন পরীক্ষা একটা কার্যকারী সিদ্ধান্ত বলে আমার মনে হয়। সেসনজট নিরসনে এবং করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব মোকাবেলায় অনলাইন পরীক্ষা খুবই কার্যকারী সিদ্ধান্ত।
তবে অনলাইন পরীক্ষার নাম করে আরও ৫-৬ মাস যেন নষ্ট না হয় তার জোর দাবি জানিয়ে অনতিবিলম্বে জুন মাসেই ফাইনাল পরীক্ষা কার্যকর করার জোর দাবি জানাচ্ছি “।
অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী ইমরান হোসাইন বলেন, ” একই দেশে বাস করে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ৪ বছরে অনার্স শেষ করবে আর পাবলিকের শিক্ষার্থী ৬-৭ বছরে করবে এটা আমার কাছে বৈষম্য মনে হয়। দেখেন এক সময় আমরা কিন্তু অনেকেই চিন্তাও করিনি যে আমরা অনলাইন ক্লাস করব। অনেকে বিরুদ্ধীতাও করেছে। কিন্তু বাস্তবতা হল সময়ের সাথে আমাদের তাল মিলিয়ে চলতে হবে। এখন সময় এসেছে অনলাইনে পরিক্ষা দিয়ে নিজেদেরকে এগিয়ে নেওয়ার। ইচ্ছা করলেই একটু কষ্ট করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের অসচ্ছলদের সহযোগিতার মাধ্যমে আমরা এটা বাস্তবায়ন করতে পারি। আর ইতিমধ্যেই ইউজিসি স্মার্ট ফোনের জন্য আর্থিক সহায়তাও করেছে। আমরা মুখে বলি ডিজিটাল বাংলাদেশ হবে কিন্তু আমরা যদি এসব প্রযুক্তির সঠিক ব্যাবহার না করি তাহলে কিভাবে ডিজিটাল হবে।
সামাজিক বিজ্ঞানের শিক্ষার্থী মোঃআনিসুজ্জামান বলেন,” বুয়েট যদি জানুয়ারি মাসে অনলাইনে পরীক্ষা নিতে পারে তবে হাবিপ্রবি প্রশাসন কেন মন্ত্রণালয়ের দিকে তাকিয়ে আছে? ইউজিসি তো পরামর্শদাতা। তারা তো মতামত দিয়েছেন। এখন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন দ্রুত একাডেমিক কাউন্সিল কিংবা ডিনস কমিটির মিটিং ডেকে সিদ্ধান্ত নিতে পারে। এটি তো এমন বড় কোনো বিষয় নয়। এটি যদি কোনো নিয়োগ প্রক্রিয়া হতো তাহলে অন্য বিষয় ছিলো। যেখানে প্রতিটি শিক্ষার্থীর মূল্যবান সময় চলে যাচ্ছে সেখানে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কেন এত উদাসীন আমার বোধগম্য নয় “।
উল্লেখ্য, করোনার কারণে দীর্ঘ ১৪ মাস ধরে বন্ধ হয়ে আছে বিশ্ববিদ্যালয়সহ সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এইচএসসি-২১ ব্যাচকে অটোপাশ দেয়া হলেও বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে অটোপাশ বা অটোপ্রমোশন সম্ভব নয় বলেই পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হলে অনলাইনে পরীক্ষার কথা ভাবছেন উপাচার্যগণ।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর হাবিপ্রবি (দিনাজপুর) প্রতিনিধি মোঃ মিরাজুল আল মিশকাত। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.