দৌলতপুর খেয়া ঘাট পরিদর্শনে জেলা পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা

বিশেষ (খুলনা) প্রতিনিধি: দিঘলিয়া উপজেলার দেয়াড়া-দৌলতপুর খেয়াঘাটে পারাপারে চরম ভোগান্তি কবলিত মানুষের পক্ষে গত মাস থেকে চলমান দৌলতপুর খেয়াঘাট পার্শ্ববর্তী লঞ্চঘাটে স্থানান্তরের দাবিতে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন। দিঘলিয়ার শান্তিপ্রিয় মানুষের এ দাবী গণদাবীতে রূপ নিয়েছে। আন্দোলন ক্রমান্বয়ে জোড়ালো হয়ে উঠেছে। দেয়াড়া-দৌলতপুর এ খেয়াঘাটটি স্থানান্তরের দাবিতে শুরু হয় গণস্বাক্ষর।

দৌলতপুর খেয়াঘাট দিয়ে পারাপারকারী হাজার হাজার ভুক্তভোগী তাদের যৌক্তিক এবং ন্যায় সংগত এ গণদাবির পক্ষে গণস্বাক্ষর কর্মসূচিতে স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ নেয়।
ইতোমধ্যে আন্দোলনকারীদের পক্ষ থেকে খুলনা জেলা প্রশাসক, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও কেসিসি’র প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট ঘাট স্থানান্তরের দাবিতে গণস্বাক্ষরের কপি সম্বলিত স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে। স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে দিঘলিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এবং উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট। দিঘলিয়া উপজেলা
পরিষদ এবং উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় এবং জেলা পরিষদকে অবহিত করা হয়েছে। জেলা পরিষদের সমন্বয় কমিটির সভায়ও বিষয়টি উত্থাপিত হয়েছে।
পারাপারের এ খেয়াঘাটটি পার্শ্ববর্তী লঞ্চঘাটে স্থানান্তরের দাবির যৌক্তিকতা খতিয়ে দেখতে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, কেসিসি এবং জেলা পরিষদদের পক্ষ থেকে পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা এস এম মাহবুবুর রহমান শুক্রবার (৪ আগস্ট) সকালে দৌলতপুরের খেয়াঘাট পার্শ্ববর্তী লঞ্চঘাট, ঘাটের দুই প্রান্ত এবং দৌলতপুর বাজারের ভেতর দিয়ে যে সকল গলি খেয়াঘাটে আসতে হয় সকল পথগুলো পরিদর্শন করেন।
এ সময় জেলা পরিষদ প্রশাসনিক কর্মকর্তার সাথে ছিলেন দিঘলিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান শেখ মারুফুল ইসলাম, জেলা পরিষদ সদস্য ফারহানা হালিম, দিঘলিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও খুলনা জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য মোল্যা আকরাম হোসেন, দৌলতপুর বাজার কমিটির সভাপতি কামাল হেসেন, সাধারণ সম্পাদক মোঃ নান্নু মোড়ল, দিঘলিয়ার প্রবীন রাজনীতিক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন আলোর মিছিলের উপদেষ্টা শেখ আব্দুস সালাম, মোল্লা মাকসুদুল ইসলাম, জিএম আকরাম, সাংবাদিক সৈয়দ জাহিদুজ্জামান, সৈয়দ শাহজাহান, সৈয়দ সেকেন্দার আলী, শিক্ষক নেতা আব্দুল্লাহ আল মামুন, শেখ রবিউল ইসলাম রাজিব, শেখ রিয়াজ, সালাউদ্দিন বাবু, হাসিবুর রহমান, জাকির হোসেন ও রাতুল ইসলাম।
প্রসঙ্গত, খুলনা জেলা পরিষদ এবং জেলা প্রশাসকের কার্যালয় কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত এবং অপর প্রান্ত খুলনা সিটি কর্পোরেশন কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত খুলনা জেলার তৃতীয় বৃহত্তম পারাপারের এ খেয়াঘাটটি এ অঞ্চলের মানুষের জন্য মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। নৌকায় উঠা নামার জন্য ঘাটের দুই প্রান্তের সিঁড়ি অত্যন্ত ঢালু। ভাঁটার সময় এ ঢালু সিঁড়ি দিয়ে অসহায়, জরুরি রোগী, বিকলাঙ্গ, বৃদ্ধ, শিশু, অন্তঃসত্ত্বা মহিলাসহ নারী পুরুষদের ওঠানামার জন্য মারাত্মক দুর্ভোগ পোহাতে হয়। দুর্ভোগ পোহাতে হয় মালামাল নিয়ে ওঠানাম যাত্রীদেরও। পারাপার যাত্রীদের দুর্ভোগের শেষ এখানেই নয়।
দৌলতপুর খেয়াঘাট পার হয়ে বাজারের কাপড়ের পট্টির সরু গলি দিয়ে ক্রেতাদের ভিড় ডিঙিয়ে সাধারণ নারী-পুরুষ, শিশু, বৃদ্ধ, অন্তঃসত্ত্বা মহিলা, প্রতিবন্ধী, অসুস্থ রুগী সবাইকে ঠেলাঠেলি করে সরু গলি পার হতে হয়। স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের ঘাটের সরু গলি ও বাজারের চিপা গলি দিয়ে যাতায়াতের সময় মানসিকভাবে নির্যাতিত হতে হয়। দুই ঈদে ও পূজার সময় মানুষের বাজার গলি পার হতে বিড়ম্বনার শেষ থাকেনা। স্কুল-কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী ও সাধারণ মহিলাদের গলির দুর্ভোগ চরম।
গুরুত্বপূর্ণ এ খেয়াঘাটটি দিয়ে তেরখাদা, নড়াইল, গোপালগঞ্জ, বড়দিয়া, কালিয়া, গাজীরহাট ও দ্বীঘল দ্বীপাঞ্চল দিঘলিয়ার হাজার হাজার মানুষ পারাপার হয়।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর বিশেষ (খুলনা) প্রতিনিধি সৈয়দ আবুল কাসেম। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.