দোলনচাঁপা ট্রেনের মালামাল চুরির সময় হাতেনাতে ধরা প্রকৌশলী, সাময়িক বহিষ্কার

দিনাজপুর প্রতিনিধি: দিনাজপুরের পার্বতীপুর ইয়ার্ডে লকডাউনে পড়ে থাকা ট্রেনের মালামাল চুরির সময় ধরা পড়া রেলের পার্বতীপুরের টেলিকম বিভাগের ঊর্ধ্বতন উপ-সহকারি প্রকৌশলী আব্দুল মালেককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন লালমনিরহাট বিভাগের রেল ব্যবস্থাপক তাপস কুমার পাল। 

তিনি জানান, মালেকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে, আইন অনুযায়ী বিচার করা হবে।

লকডাউনে ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকায় পার্বতীপুর ইয়ার্ডে রাখা ছিলো অনেকগুলো ট্রেন। এসব ট্রেন সীলগালা করে রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীকে বুঝিয়ে দেয়া হয়। যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া ট্রেনের ভেতরে প্রবেশ নিষেধ ছিলো। এবং ইয়ার্ডে কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয় যাতে কোন কিছু চুরি না হয়।

আজ বুধবার (২৭ মে) দুপুরে দোলনচাঁপা এক্সপ্রেস নামের একটি ট্রেনে সকলের অগোচরে জানালা দিয়ে ভিতরে প্রবেশ করেন বাংলাদেশ রেলওয়ের পার্বতীপুরের টেলিকম বিভাগের ঊর্ধ্বতন উপ-সহকারি প্রকৌশলী আব্দুল মালেক। এ সময় তিনি ট্রেন থেকে বিভিন্ন ইলেকট্রিক সামগ্রী প্লাস ও স্ক্রু ড্রাইভার দিয়ে খুলে ব্যাগে ভরছিলেন। দায়িত্ব পালনের সময় ওইদিকে টহলরত রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর (আর এন বি) সদস্যরা শব্দ শুনতে পেয়ে ট্রেনের ভিতর থেকে চুরির মালসহ আব্দুল মালেককে আটক করে।

ওই সময় দায়িত্ব পালন করা নিরাপত্তাবাহিনীর এ এস আই ইলিয়াস হোসেন এসব তথ্য জানান।

এ ব্যাপারে লালমনিরহাট রেলওয়ের নিরাপত্তা বাহিনীর কমান্ডান্ট শফিকুল ইসলাম বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে জানান, একজন প্রকৌশলী ট্রেনের সামান্য ইলেকট্রিক পণ্য চুরি করার ঘটনায় বিস্মিত হয়েছেন তিনি।

তিনি বলেন, তার বিরুদ্ধে রেলওয়ে আইনে মামলা হয়েছে। এই মুহূর্তে তিনি পার্বতীপুর রেলওয়ে নিরাপত্তাবাহিনীর হাজতে আটক আছেন। আগামীকাল বৃহস্পতিবার (২৮ মে) তাকে আদালতে প্রেরণ করা হবে।

ইলিয়াস হোসেন বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে জানান, ইলেকট্রিক পণ্যগুলো নিজের বাসায় ব্যবহার করার জন্য চুরি করা হয়েছে স্বীকার করে একটি লিখিত বক্তব্য দিয়েছেন আব্দুল মালেক।

তিনি জানান, চুরির মালামাল খুবই সামান্য। ট্রেনে যাত্রীদের মোবাইল চার্জ দেয়ার জন্য থাকা ৫টি ইলেকট্রিক ডিভাইস চুরি করেছেন তিনি।

আব্দুল মালেকের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি চুরির কথা স্বীকার করেন।

তিনি বলেন, সামান্য বিষয়টি এতদূর গড়াবে আমি বুঝিনি। নিজের ভুল বুঝতে পেরেছি, আমি অনুতপ্ত।

এ সময় তিনি মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়েছেন জানিয়ে বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে বলেন, না বুঝেই ভুল করে ফেলেছি, এখন কি করবো বুঝতে পারছি না।

পার্বতীপুর রেলস্টেশনের মাস্টার আনোয়ার হোসেন বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে বলেন, একজন প্রকৌশলী ট্রেনের সামান্য মালামাল চুরি করবেন এটা আমার বুঝেই আসছে না। যেহেতু তিনি স্বীকার করেছেন তাই বিশ্বাস করতে হচ্ছে।

আনোয়ার হোসেন বলেন, দোলনচাঁপা ট্রেনে আমি গিয়েছি এবং চুরির আলামত দেখতে পেয়েছি। তাকে বহিষ্কারের জন্য বিভাগীয় ব্যবস্থাপকের স্বাক্ষরিত কাগজ রাতে হাতে পেয়েছি।

লালমনিরহাট বিভাগের রেল ব্যবস্থাপক তাপস কুমার পাল বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে জানান, প্রথমে শুনে আমি বিশ্বাসই করতে পারিনি এমন ঘটনা ঘটতে পারে। চুরি যত সামান্যই হোক, কার্যকর ব্যবস্থা নিলে আর কেউ চুরির সাহস করবে না। যেহেতু তিনি নিজেই স্বীকার করেছেন, সুতরাং রেল আইনেই তার বিচার হবে।

সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর দিনাজপুর প্রতিনিধি মোঃ ইয়ামিন সরকার। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.