ত্রান বিতরনের নামে সরকার জনগনের সাথে তামাশা করছে – মন্জু 

খুলনা ব্যুরো: খুলনা মহানগর বিএনপির সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম মন্জু বলেছেন, চলমান কঠোর লকডাউনে দরিদ্র মানুষের জন্য বরাদ্দকৃত সহায়তার টাকার অংকেই বোঝা গেছে,বর্তমান সরকার কার্যকর অর্থেই একটা অমানবিক সরকার। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় থেকে গত ২৭ জুন লকডাউনে দরিদ্র, দুস্থ, অসচ্ছল ও কর্মহীন জনগোষ্ঠীকে মানবিক সহায়তা দিতে ৬৪ জেলার অনুকূলে মাত্র ২৩ কোটি ছয় লাখ ৭৫ হাজার টাকা ও পরবর্তীতে আরো ১১ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। বলা হয়েছে ৩৩৩ নম্বরে ফোন করলে মানবিক সহায়তা পাওয়ার মতো যোগ্য ব্যক্তিদের এই বরাদ্দ থেকে খাদ্য-সহায়তা দেওয়া হবে, যার মধ্যে থাকবে ১০ কেজি চাল, এক কেজি তেল, এক কেজি ডাল, পাঁচ কেজি আলু ও এক কেজি লবণ। মূল্য নির্ধারণ হিসেবে টাকার অংকে যা ১ হাজার টাকার মতো দাঁড়াবে। বরাদ্দকৃত মোট টাকার বিপরীতে সর্বোচ্চ ৩ লাখ ৩০ হাজার মানুষের মাঝে খাদ্য সহায়তা দেয়া সম্ভব।
যেখানে করোনাকালে দুই কোটির বেশি মানুষ নতুন করে দরিদ্র হয়েছে। এর সঙ্গে যদি আগের সংখ্যা যুক্ত করা হয়, তাহলে কমপক্ষে পাঁচ-ছয় কোটি হবে। তাহলে কঠোরতম এই লকডাউনে সরকার ঘোষিত বরাদ্দকৃত অর্থ একেক জনের ভাগে চার থেকে পাঁচ টাকার বেশি পড়ার কথা নয়। যা মহামারীকালে জনগণের সাথে স্রেফ তামাশা ছাড়া আর কিছু নয়।
আজ শনিবার (১০ জুলাই) নগরীর ট্যাঙ্ক রোড বড়মসজিদ এলাকায় ও কাস্টমস ঘাট এলাকায় ৩৮০ জন দরিদ্র মানুষের মাঝে রান্না খাবার বিতরণ কালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মি.মন্জু আরো বলেন, বিএনপি আগে থেকেই বলেছিলো জেলার হাসপাতালগুলো পর্যাপ্ত পরিমাণ আইসিইউ বেডের ব্যবস্থা করা হোক, অক্সিজেন সরবারহের ব্যবস্থা করা হোক, ওষুধের ব্যবস্থা করা হোক। কিন্তু সরকার সে প্রস্তাব গ্রহন করেনি। দেশের জেলাগুলোর অধিকাংশ হাসপাতালে কোনো অক্সিজেন সরবারহের ব্যবস্থা নেই। অথচ দেশের এই চরম দুঃসময়ে সরকারের লিপ সার্ভিস দেয়া মন্ত্রীরা দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে আবার জেলে নেয়ার হুমকি দিচ্ছেন। জনগণকে রক্ষা না করে, সারাদিন বিএনপির বিরুদ্ধে কুৎসা রটনা, অসত্য বয়ান আর জেল-জুলুমের হুমকি দিয়ে নিজেদের ব্যর্থতা আড়াল করার হীন প্রচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছেন।
মন্জু বলেন, সাবেক প্রধান মন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া এখনো মুক্ত নন, তিনি কার্যত বন্দী। বিভিন্ন শর্তের বেড়াজালে তার সুচিকিৎসায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা হয়েছে। করোনার বর্তমান পরিস্থিতিতে গণটিকা ছাড়া এই মহামারী মোকাবিলা করা কোনোভাবেই সম্ভব নয়। সার্বিক পরিস্থিতি মোকাবিলায় ভুল সিদ্ধান্ত, সময়মতো সঠিক সিদ্ধান্ত ও পদক্ষেপ না নেয়া, অগ্রাধিকার নির্ধারণ করতে অক্ষমতা এবং সার্বিক অদক্ষতা ও অযোগ্যতার জন্য পরিস্থিতি আজ লেজে-গোবরে তথা হযবরল অবস্থায় গিয়ে ঠেকেছে। অক্সিজেনের অভাবে প্রতিদিনই মানুষ মৃত্যু কোলে ঢলে পড়ছে,এই মৃত্যু দায়ও সরকারকে নিতে হবে। সরকারের চরম ব্যর্থতায় বাংলাদেশে কোভিড-১৯ সংক্রমণ পরিস্থিতির ক্রমাবনতিতে জনজীবন বিপন্ন হয়ে পড়েছে। জ্যামিতিক হারে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা বৃদ্ধির এই ভয়াবহ পরিস্থিতিতে জনগণ এখন দিশেহারা হয়ে কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে পড়েছে। বারবার সাধারণ ছুটি, বিধিনিষেধ, কঠোর বিধিনিষেধ, লকডাউন, সীমিত লকডাউন, কঠিন লকডাউন দিয়ে পরিস্থিতিকে আরো ভয়াবহ করে তুলেছে। সঠিক পরিকল্পনা ও সমন্বয়ের অভাবে এসব পদক্ষেপ কার্যকর হচ্ছে না, বরং জনগণের জীবন বিপন্ন হচ্ছে। রাজনৈতিক ও সামাজিক তথা জনগণকে সম্পৃক্ত করা ছাড়া কোনো পদক্ষেপই সফল হয় না।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, সেকেন্দার জাফর উল্লাহ খান সাচ্চু, রেহানা ঈসা, ইউসুফ হারুন মজনু, হাসানুর রশিদ মিরাজ, মিজানুর রহমান মিলটন, শরিফুল ইসলাম বাবু, মেজবাহ উদ্দিন মিজু, জাহিদ কামাল টিটো, সিরাজুল ইসলাম লিটন, শামীম আশরাফ, ফিরোজ আহমেদ, মোহাম্মাদ আলী মিঠু, রাজিবুল আলম বাপ্পি, এবাদুল হোসেন, সাজ্জাদ হোসেন জিতু, সামছুল আলম বাদল, আবু তালেব, শাহারুজ্জামান মুকুল, তরিকুল ইসলাম, আ. আহাদ, সেলিম বড়মিয়া, মাসুদ রুমী, আব্দুল আহাদ, ফজুলর রহমান, মোহাম্মাদ হোসেন, শহিদুল ইসলাম, নজরুল ইসলাম নান্না, তুহিন ইসলাম প্রমূখ।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর খুলনা ব্যুরো প্রধান এইচ এম আলাউদ্দিন এবং মাশরুর মুর্শেদ। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.