তালেবানকে স্বীকৃতি দিতে চীনের চেষ্টা, খনিজ সম্পদের দিকে নজর : এএনআই

বিটিসি আন্তর্জাতিক ডেস্কযুদ্ধ-বিধ্বস্ত দেশ আফগানিস্তানের খনিজ সম্পদের দিকে নজর রাখছে চীন। আর তাই, আফগানিস্তানে তালেবান নেতৃত্বাধীন সরকারকে স্বীকৃতি দিতে চীন তাড়াহুড়ো করছে বলে মনে করা হচ্ছে। আফগানিস্তানের মাটিতে তিন ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের অব্যবহৃত খনিজ সম্পদ এবং বিরল মাটির উপাদান রয়েছে।
বার্তা সংস্থা এএনআই-এর এক প্রতিবেদনে এ বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, অনিশ্চিত ও বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে চীন তার সীমান্ত সুরক্ষিত করতে চায় এবং তার খনিজ সম্পদের প্রয়োজনীয়তা পূরণ করতে চায়। একই সঙ্গে বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভকে কাজে লাগাতে চায়।
বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, ‘সুবিধাবাদী দেশ হিসেবে চীন বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সুযোগ নিচ্ছে। বেইজিংয়ের প্রধান অগ্রাধিকার হচ্ছে আফগানিস্তানের সঙ্গে তার সীমানা সুরক্ষিত করা। এর মাধ্যমে চীনবিরোধী গোষ্ঠী ইস্ট তুর্কিস্তান ইসলামিক মুভমেন্টকে (ইটিআইএম) দূরে রাখা বেইজিংয়ের লক্ষ্য, যেহেতু তাদের আশঙ্কা রয়েছে, অস্থিতিশীল তালেবানদের ভূমি ইটিআইএম’র আবাসস্থল হতে পারে।
গবেষকদের দাবি, আফগানিস্তানের খনিজ সম্পদের দিকেও নজর রয়েছে চীনের। কারণ, দেশটিতে আনুমানিক তিন ট্রিলিয়ন ডলার মূল্যের খনিজ সম্পদ এবং বিরল মাটির উপাদান রয়েছে। সুতরাং, তালেবানকে স্বীকৃতি দিলে চীনের লাভই হবে।
গ্লোবাল স্ট্র্যাট ভিউয়ের প্রতিবেদনে বলা হয়, ২৪ মার্চ আফগানিস্তানে চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রীর অনানুষ্ঠানিক সফরের ফলে জল্পনা তৈরি হয়েছিল, চীন আফগানিস্তানের ওপর আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে তালেবান নেতৃত্বাধীন সরকারকে বৈধ স্বীকৃতি দেওয়ার চেষ্টা করছে। তালেবান নেতৃত্বাধীন সরকার গঠনের পর এটি ছিল চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ইয়ের প্রথম সফর।
ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের মধ্যেই চীন আঞ্চলিক দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠক আয়োজনের পরিকল্পনা করছে। রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সেরগেই ল্যাভরভ এবং তাঁর অংশীদার ইরান, পাকিস্তান ও মধ্য এশিয়ার দেশগুলো বৈঠকে অংশ নেবে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, তালেবান নেতৃত্বাধীন আফগানিস্তান সরকার সারা বিশ্ব থেকে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া পাওয়ায় ওয়াং ই ইচ্ছাকৃতভাবে তার সময় নির্বাচনের বিষয়টি কাউকে জানাননি।
আফগানিস্তানে পূর্ববর্তী সরকারের সময়ের সংখ্যালঘু, নারী-পুরুষকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেওয়া ও আটকের খবর রয়েছে। এমনকি বালিকা বিদ্যালয়গুলো বন্ধ করার মতো বিষয়গুলো জাতিসংঘসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্মে আলোচনার বিষয় হয়ে উঠেছে। কিন্তু, তারপরও চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আফগানিস্তান ভ্রমণ করেছেন।
শুধু চীন নয়, পাকিস্তান ও কাতারের মতো অন্যান্য দেশও আফগানিস্তান সফর করেছিল, কিন্তু তাদের সফর তেমন মনোযোগ আকর্ষণ করতে পারেনি। চীন ছাড়াও রাশিয়া, ইরান ও পাকিস্তানও তালেবান সরকারকে স্বীকৃতি দিতে পারে বলে মনে করছেন গবেষকেরা। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.