টাইব্রেকারে কলম্বিয়াকে হারিয়ে কোয়ার্টারফাইনালে ইংল্যান্ড

 

বিটিসি নিউজ ডেস্ক: টাইব্রেকারে কলম্বিয়াকে হারিয়ে ফুটবল বিশ্বকাপের কোয়ার্টারফাইনালে উঠলো ইংল্যান্ড। ২০০৬ সালের পর আবারো শেষ আটে উঠলো ইংলিশরা। শেষ আটে ইংল্যান্ডের প্রতিপক্ষ সুইডেন। আগামী ৭ জুলাই টুর্নামেন্টের তৃতীয় কোয়ার্টারফাইনালে মুখোমুখি হবে ইংল্যান্ড ও সুইডেন।

ম্যাচের ৫৭ মিনিটে পেনাল্টি থেকে গোল করে ইংল্যান্ডকে ১-০ গোলে এগিয়ে দেন অধিনায়ক হ্যারি কেন। দ্বিতীয়ার্ধের ইনজুুরি সময়ের তৃতীয় মিনিটে গোল করে ম্যাচে ১-১ সমতা আনেন কলম্বিয়ার ডিফেন্ডার ইয়েরি মিনা। এরপর অতিরিক্ত

সময়ের দুই অর্ধে কোন গোল না হলে ম্যাচটি গড়ায় টাইব্রেকারে। সেখানে জয় পায় ইংল্যান্ড।

ফেভারিট হিসেবেই এ ম্যাচে মাঠে নামে ইংল্যান্ড। গ্রুপ পর্বের দুর্দান্ত পারফরমেন্স কলম্বিয়ার বিপক্ষে এগিয়ে রেখেছিলো ইংলিশদের। সেটি প্রমানের জন্য শুরু থেকে কলম্বিয়াকে চাপে রাখার চেষ্টা করে ইংল্যান্ড।

৩-১-৪-২ ফরমেশনে খেলতে নামা ইংল্যান্ড ম্যাচের প্রথম ১৬ মিনিটে চারটি আক্রমন করে কলম্বিয়ার সীমানায়। এরমধ্যে গোলের সবচেয়ে ভালো সুযোগ ছিলো ১৬ মিনিটে। ডান-প্রান্ত দিয়ে ডিফেন্ডার কিয়েরান ট্রিপায়ারের ক্রসে মাথা স্পর্শ করেন ইংল্যান্ডের অধিনায়ক হ্যারি কেন। ফাঁকা গোলপোস্ট পেয়েও বলকে বারের উপর দিয়ে মারেন কেন। তার ভুলে এগিয়ে সবচেয়ে ভালো সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয় ইংল্যান্ড।

ম্যাচের ৩১ মিনিটে আবারো ভালো একটি আক্রমন থেকে গোলের সুযোগ তৈরি করে ইংল্যান্ড। ডিফেন্ডার হ্যারি মাগুইরের পাস থেকে বল পেয়ে বক্সের বাইরে থেকে বাঁ-পায়ে শট নেন রাহিম স্টারলিং। কিন্তু সেটি রুখে দেয় কলম্বিয়ার ডিফেন্ডাররা।

ইংল্যান্ডকে সুযোগ বঞ্চিত করে পাল্টা আক্রমনে যায় কলম্বিয়া। স্ট্রাইকার রাদামেল ফ্যালকাও’র যোগান দেয়া বলে শট নেন মিডফিল্ডার হুয়ান ফার্নান্দো কুইন্টেরো। সেটি গোলবারের পাশ দিয়ে চলে যায়। ফলে প্রথমার্ধে কোন দলই গোলের দেখা পায়নি। এই অর্ধে বল দখলে এগিয়ে থাকার পাশাপাশি মোট আটবার কলম্বিয়ার সীমানায় আক্রমন করে ইংল্যান্ড।

অপরদিকে, চারবার আক্রমন করতে পারে কলম্বিয়া। কিন্তু ইংল্যান্ডের মতই গোলে ১বার শট নিতে পারে কলম্বিয়া।

দ্বিতীয়ার্ধেও গোলের জন্য মরিয়া ছিলো ইংল্যান্ড। ম্যাচের প্রথমভাগের মত কলম্বিয়াকে চাপে রেখেছিলো ইংলিশরা। ফলে গোল আদায় করে নিতে এই অর্ধে খুব বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়নি ইংল্যান্ড। ৫৪ মিনিটে নিজেদের বিপদ সীমানায় ইংল্যান্ড অধিনায়ক কেনকে ফাউল করেন মিডফিল্ডার কার্লোস সানচেজ। ফলে পেনাল্টির নির্দেশ দেন অন-ফিল্ড রেফারি।

পেনাল্টি থেকে গোল করে ইংল্যান্ডকে ১-০ গোলে এগিয়ে দেন কেন। এবারের আসরে এটি কেনের ষষ্ঠ গোল। এই গোলের মাধ্যমে আসরে সর্বোচ্চ স্কোরারের শীর্ষ স্থান আরো পোক্ত করলেন ইংলিশ অধিনায়ক।

গোল হজমের পর ম্যাচের ৫৯ মিনিটে আক্রমনে যায় কলম্বিয়া। ঐ আক্রমন সাফল্য বয়ে আনতে পারেনি। মিডফিল্ডার উইলমার ব্যারিয়সের পাস থেকে বাঁ-পায়ে ৩৫ গজ দূর থেকে ইংল্যান্ডের গোলমুখে শট নিয়েছিলেন মধ্যমাঠের খেলোয়াড় কুইন্টেরো। কিন্তু সেই শট ইংল্যান্ডের রক্ষণভাগের খেলোয়াড়রা রুখে দেন।

৬৩ মিনিটে গোলের ব্যবধান দ্বিগুন করার সুযোগ পায় ইংল্যান্ড। ডিফেন্ডার কিয়েরান ট্রিপায়ারের ক্রসে হেড নিয়েছিলেন মিডফিল্ডার ডেলে আলি। কিন্তু সেই হেডের বল কলম্বিয়ার বারের উপর দিয়ে চলে যায়।

এরপর আরও কয়েকটি আক্রমন করে ইংল্যান্ড। কিন্তু সেগুলো যুতসই ছিলো না। ফলে নির্ধারিত ৯০ মিনিট শেষে নিশ্চিত জয়ের দিকেই এগিয়ে যাচ্ছিলো ইংলিশরা। কিন্তু ৯০ মিনিট শেষে ম্যাচ গড়ায় ইনজুরি সময়ে। ইনজুরি সময়ের তৃতীয় মিনিটে গোল করে ম্যাচে সমতা আনে কলম্বিয়া। মিডফিল্ডার হুয়ান চুয়াদ্রাদোর ক্রস থেকে হেডের গোল করেন কলম্বিয়ার ডিফেন্ডার ইয়েরি মিনা(১-১)। ম্যাচে সমতা আসায় অতিরিক্ত সময়ের লড়াইয়ে নামে ইংল্যান্ড ও কলম্বিয়া।
সেখানে দু’টি ভালো সুযোগ তৈরি করেছিলো ইংল্যান্ড। কিন্তু কলম্বিয়ার গোলরক্ষকের দৃঢ়তায় দু’বারই গোল বঞ্চিত হয় ইংলিশরা। তবে অতিরিক্ত সময়ে ভালো কোন সুযোগ পায়নি কলম্বিয়া। তাই ম্যাচের স্কোরলাইনে কোন পরিবর্তন হয়নি। ১২০ মিনিট ১-১ সমতা থাকায় ম্যাচটি টাইব্রেকারে গড়ায়।

টাইব্রেকারে প্রথম দু’টি শট থেকে গোল করে কলাম্বিয়া ও ইংল্যান্ড। তৃতীয় শটে কলম্বিয়া গোল করলেও, ইংল্যান্ড পারেনি। ইংল্যান্ডের ডিফেন্ডার জর্ডান হেন্ডারসনের শট রুখে দেন কলম্বিয়ার গোলরক্ষক ডেভিড ওসপানিয়া।
চতুর্থ পেনাল্টি শটে গোল আদায় করে নিতে ব্যর্থ হয় কলাম্বিয়া। মিডফিল্ডার ম্যাতেয়াস উরিবে শট গিয়ে লাগে উপরের বারে। তবে চতুর্থ থেকে গোল করে ৩-৩ সমতা নিয়ে আসে ইংল্যান্ড।

নির্ধারিত পঞ্চম ও শেষ শটে ব্যর্থ হয় কলম্বিয়া। স্ট্রাইকার কার্লোস বাক্কার শট ডান-দিকে ঝাপিয়ে পড়ে রুখে দেন ইংল্যান্ডের গোলরক্ষক জর্ডান পিকফোর্ড। ফলে শেষ শটে গোল করলেই ম্যাচ জিতে নিবে ইংল্যান্ড। এমন সমীকরনে মিডফিল্ডার এরিক ডায়ার গোল করে ইংল্যান্ডকে জয়ের স্বাদ দেন। সেই সাথে শেষ আটের টিকিটও পেয়ে যায় একবারের চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ড।সূত্রবাসস )#

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.