জলাবদ্ধতায় বিপাকে টেওসাগাড়ি বিলের কৃষক

নাটোর প্রতিনিধি: কৃষি জমিতে অপরিকল্পিতভাবে পুকুর খননে পানি নিষ্কাশনের নালা বন্ধ হয়ে পড়ায় নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার মশিন্দা ইউনিয়নের টেওসাগাড়ি বিলে জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। জলাবদ্ধতার কারনে বিল এলাকার প্রায় ৫ হাজার হেক্টর জমির ফসল পানিতে নিমজ্জিত হয়ে পড়েছে।

বিলের পানি নিষ্কাশনের নানাটি দীর্ঘ দিন সংস্কার করা হয়নি। তাছাড়া গেল দুই বছরেও বেশি সময় ধরে বিলের মাঝের কৃষি জমিতে যথেচ্ছাভাবে পুকুর খননের কারনে পানি নিষ্কাশনের নালাটি ভরাট হয়ে অস্তিত্বহীন হয়ে পড়েছে। এখন সামন্য বৃষ্টিতেই জলাবদ্ধ হয়ে পড়ছেটেওয়াসাগাড়ি বিল এলাকা। বছরের পর বছর ধরে জলাবদ্ধতার সমস্যার কারনে কৃষিতে মার খাচ্ছেন ওই বিল এলাকার কৃষক। জলাবদ্ধতা পরিস্থিতি নিয়ে এমন অভিযোগ ভুক্তভোগী কৃষকদের।

টেওসাগাড়ি বিলটি কৃষকদের আর্শীবাদ। মাটির উর্বরতার কারনে ধান-পাট, রসুনসহ মসলা জাতীয় ফসল ফলে। অপেক্ষাকৃত কম সেচ সার ব্যবহার করে ভালো ফসল ফলে সেখানে। এতে আর্থিক দৈন্যতায় পড়তে হয়না স্থানীয় কৃষকদের। কিন্তু বিলের মাঝ দিয়ে বয়ে যাওয়া নালাটি সংস্কার হয়না অনেক বছর। তার ওপর বিলের মাঝে যথেচ্ছাভাবে পুকুর খননের কর্মযজ্ঞটি অভিশাপ হয়ে উঠেছে কৃষি ও কৃষকদের জন্য।

ভুক্তভোগী কৃষক হাবিবুর রহমানের অভিযোগ টেওসাগাড়ি বিলে ১০ বিঘা জমিতে ধান করেছিলেন। ধান পেকেও গেছে। কয়েক পসলা বৃষ্টিতেই দেখা দিয়েছে জলাবদ্ধতা। পাকা ধান ঘরে তোলাই কঠিন হয়ে পড়েছে তাঁর। তাঁরমত সমস্যা ভুট্রা পাট ও তিল চাষিদের। বৃষ্টির পানি নামতে না পারায় মাঠের পর মাঠ কৃষি জমিতে জলাবদ্ধতায় ডুবে থাকায় মরে যাচ্ছে এসব ফসল।

এলাকার কমপেক্ষ ২০জন কৃষক অভিযোগ করেন কৃষি জমিতে পুকুর খনন বন্ধ, নালা সংস্কার করে জলাবদ্ধতা নিরসনের জন্য গেল বছরর স্থানীয় সাংসদ,জেলা প্রশাসকসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু প্রতিকার হয়নি। উপরন্ত বেড়েছে পুকুর খননের সংখ্যা। এবছর জলাবদ্ধতার সমস্যা নতুন করে প্রকট আকার ধারন করেছে। কৃষি ও কৃষকদের স্বার্থে ভরাট হয়ে পড়া পানি নিষ্কাশনের নালাটি দ্রুত সংস্কার করার দাবী জানিয়েছেন এলাকার কৃষকরা।

মশিন্দা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মোস্তাফিজুর রহমান সত্যতা নিশ্চিত করে বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে জানান, টেওসাগাড়ি বিলটি এলাকার কৃষকদের আর্শীবাদের জায়গা। ইউনিয়নের সাহাপুর থেকে প্রায় ৮ কিলোমিটার পর্যন্ত পানি নিষ্কাশনের নালা রয়েছে। বিলের পানি ওই নালা দিয়ে ভাটির গুমানী নদীতে গিয়ে পড়ে। কিন্তু দীর্ঘ দিন সংস্কার হয়না ওই নালাটি। সাম্প্রতিক সময়ে কৃষি জমিতে পুকুর খনন করায় বিভিন্ন পয়েন্টে নালাটি ভরাট হয়ে পড়েছে। ফলে দুর্ভোগে পড়েছে কৃষি ও কৃষক। উপজেলা প্রশাসনকে জানিয়েও কাজ হচ্ছেনা।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. তমাল হোসেন বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে বলেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য কৃষি বিভাগকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আব্দুল করিম বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে বলেন, অপরিকল্পিত পুকুর খননের কারনে নালা বন্ধ হয়ে পড়ায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। নালা সংস্কারের জন্য সমন্বিত পানি উন্নয়ন কর্পোরেশন (পানাসী) দপ্তরে কথা বলে স্থায়ী সমাধানের উদ্যোগ নেওয়া হবে।#

সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর নাটোর প্রতিনিধি খান মামুন। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.