ছাউনিবিহীন অদৃশ্য ঘরে বসবাস

পঞ্চগড় প্রতিনিধি: এ সংসারকে বলা যায় বিশাল এক পাগলের হাট। কিন্তু এই বিপুল সংখ্যক পাগলকে নিয়ে আলোচনা করতে গেলেই প্রথমে মনে পড়ে যায় হাটের পাগলদের কথা। প্রতিটি হাট বাজার শহর নগরে বনেদি কিছু পাগল থাকে যারা সেই এলাকার দালানকোটা রাস্তাঘাট গাছ গাছালির মতোই সত্য। তারা ব্যক্তি হয়েও ব্যক্তিত্বহীন নাগরিক হয়েও ভোটাধিকারবিহীন। তাদের নির্দিষ্ট কোনো আবাস নেই। ঘুমাবার বিছানা নেই। খাবারের টেবিল নেই। খাদ্যের মেন্যু নেই। সময় নেই অসময় নেই। এরাও ‘দুই বিঘা জমি’র উপেনের মতো ‘নিখিলবিশ্বে’র স্বত্তাধিকারী।পথেই গড়েছে চাল বেড়া আর ছাউনিবিহীন অদৃশ্য ঘর।

পঞ্চগড় শহরে কখনো দেখা যায়, পাগল হাতে লাঠি নিয়ে ছুটে যায় কোন মানুষের দিকে যেন তাকে মারবে কিন্তু মারবে না সেটা দেখে অনেকে ভয়ে কাতর। ব্যারিস্টার এলাকায় দেখা যায় অন্য একজন যানবাহন আসলেও সড়কের মধ্যস্থান দিয়ে দৌড়াচ্ছে । বিপাকে চালক।

পাগল শব্দটি বড়ই মজার তিন অক্ষরের এ শব্দের অভিব্যক্তি বহু বিচিত্র এটি যেমন মানবিক অস্তিত্বের এক বিপর্যস্ত অবস্থাকে নির্দেশ করে থাকে অর্থাৎ যার মাথাটি ফাঁকা তাকে।

পাগল কখনো অপমানজনক গালি হিসেবে ব্যবহার হয় আবার এ শব্দ দিয়ে পরম মমতারও প্রকাশ ঘটে। কথনে লেখনে সমাজে সাহিত্যে এ শব্দের ব্যাপক উপস্থিতি।

জন্মদাত্রী মায়ের কাছে প্রতিটি সন্তানই পাগল। আমার ‘পাগল ছেলে’ বলে প্রত্যেক মা’ই নিজ সন্তানের প্রতি তার শ্রেষ্ঠতম সোহাগটি দান করেন। প্রায় সব বাঙ্গালীই প্রথমবারের মত পাগল খেতাবটি অর্জন করে স্নেহময়ী মায়ের কাছ থেকে। এরকম ‘গানের পাগল’ ‘বইয়ের পাগল’ সখ বা অর্থের পাগলে সমাজটিই পরিপূর্ণ।

লাইলী প্রেমে মজনু পাগল শিরী প্রেমে ফরহাদ পাগল আর নর নারীর পরস্পরের প্রেমে পাগল হওয়ার আকুতি আর আবেগ নিয়ে কত গাঁথা কাহিনী গল্প উপন্যাস রচিত হয়েছে তার পরিসংখ্যান দেয়া কি সম্ভব ।নর নারীর এই পাগলামি হলো ভাবের কিন্তু এই ভাবের পাগল বাস্তব পাগলে রূপান্তরিত হওয়ার নজীরও অনেক।

এদেরও একদিন সমাজ সংসার ছিল। জৈবিক চাহিদা মানবিক সকল অনুভবেই পরিপূর্ণ ছিল তারা। কিন্তু মাথার কিছু তার এলোমেলো হয়ে যাওয়াতেই কিনা তারা অন্য মানুষ হয়ে গেল।

আন্তজার্তিক মানবধিকার (আসক) ফাউন্ডেশন পঞ্চগড় জেলা শাখার সভাপতি আব্দুস সাত্তার বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে বলেন, ছিন্নমুল পাগলদের পূর্ণবাসনের ব্যবস্থা জরুরী ,এরাও মানুষ এদেরও জীবন পরিবার পরিজন আছে।

পঞ্চগড় সমাজসেবা কার্যালয়ের উপ পরিচালক আল মামুন বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে জানান, ছিন্নমূল মানসিক প্রতিবন্ধীদের জন্য চট্রগ্রামে পূর্ণবাসনের কেন্দ্র আছে। কোন মানসিক প্রতিবন্ধী যদি পরিবারের অন্তগত থাকে তাহলে আমরা চিকিৎসা খরচ এর ব্যবস্থা গ্রহণ করি । সরকারি ভাবে জেলায় না হলেও বিভাগে যদি একটি করে পূর্ণবাসন কেন্দ্র হয় তাহলে ছিন্নমূল মানসিক প্রতিবন্ধীদের উপকারে আসবে।

সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর পঞ্চগড় প্রতিনিধি শেখ সম্রাট হোসেন। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.