চাঁপাইনবাবগঞ্জের টি.এইচ.ও জাহাঙ্গীর অর্থ আত্মসাৎসহ নানা অভিযোগে অবরুদ্ধ

চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি: চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা মোঃ জাহাঙ্গির হোসেন এর বিরুদ্ধে ভিটামিন এ ক্যাম্পেইনের প্রায় সাড়ে ৩ লাখ টাকা আত্মসাৎসহ নানা অভিযোগে অবরুদ্ধ করে বিভিন্ন ইউনিয়নের ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মরত ই পি আই সদস্যরা। কয়েকদিন ধরে আত্মগোপনে থাকার পর গতকাল মঙ্গলবার রাতে হঠাৎ টি এইচ ও তার কার্যালয়ে আসার খবর পেয়ে অবরুদ্ধ করে বিক্ষোভও প্রদর্শন করে তারা। ভিটামিন এ ক্যাম্পেইনের প্রায় সাড়ে ৩ লাখ টাকাই নয়, জেলার নাচোল, ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গাসহ বিভিন্ন স্থানেও তাঁর বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাৎসহ নানা অভিযোগ রয়েছে এবং দুদকেও মামলা রয়েছে বলেও জানা গেছে স্বাস্থ্য বিভাগ সুত্রে। দূর্ণীতবাজ এই কর্মকর্তা বীর মুক্তিযোদ্ধাদের অর্থও আত্মসাৎ করতে ছাড়েন নি বলেও অভিযোগ করলেন জেলার সিভিল সার্জন নিজেই। তাঁর দূর্ণীতি ও অনিয়মের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে বলে জানালেন সিভিল সার্জন ডা. এস.এফ.এম খায়রুল আতাতুর্ক।
জানা গেছে, চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা মোঃ জাহাঙ্গির হোসেন এর বিরুদ্ধে ভিটামিন এ ক্যাম্পেইনের প্রায় সাড়ে ৩ লাখ টাকা আত্মসাৎসহ নানা অভিযোগে অবরুদ্ধ করে বিভিন্ন ইউনিয়নের ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মরত ই পি আই সদস্যরা।

মঙ্গলবার রাতে হঠাৎ টি এইচ ও তার কার্যালয়ে আসার খবর পেয়ে তাঁকে অবরুদ্ধ করে তারা। বিক্ষোভকারীরা তাদের গত জাতীয় ভিটামিন এ প্লাস ক্যাম্পেইনের টাকা না পেলে আসন্ন জুনের কর্মসূচীতে তারা অংশ নেবেনা বলেও হুসিয়ারী দেন। এ সময় তার বিভিন্ন অপকর্মের দায়ে তাকে চাকুরিচ্যুত করারও দাবী জানান বিক্ষুব্ধরা। এ ব্যাপারে শিবগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মরত মেডিক্যাল টেকনোলজিষ্ট কামরুজ্জামান জানান, গত জানুয়ারী মাসে সারা দেশেরমত শিবগঞ্জেও জাতীয় ভিটামিন এ প্লাস ক্যাম্পেইন তারা নিজেদের পকেটের টাকা থেকে পালনের পর গত ১৩ জানুয়ারী সে অর্থ বরাদ্দ হয়। নিয়ম অনুযায়ী সে অর্থ স্বাস্থ্য কর্মকর্তা উত্তোলন করে তার হাতে জমা দেয়ার কথা। কিন্তু তিনি সে অর্থ গোপনে গত ২১ এপ্রিল উত্তোলন করে শিবগঞ্জ থেকে পালিয়ে যান। তাকে গত ১৬ দিন ধরে খুঁজছিলো তারা। মঙ্গলবার রাতে তার কার্যালয়ে গোপনে প্রবেশ করলে, তাকে সেই টাকার জন্য চাপ দিলে তিনি প্রথমে তা অস্বীকার করেন। পরবর্তীতে গণমাধ্যমকর্মীরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে তিনি সেই টাকা ফেরত দেয়ার আশ্বাস দেন।

এদিকে, অভিযুক্ত উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা মোঃ জাহাঙ্গির হোসেন টাকা উত্তোলনের কথা স্বীকার করলেও আতœসাতের কথা অস্বীকার করেন। তিনি জানান, উত্তোলিত সেই টাকা অন্য একটি ফান্ডে জমা রয়েছে। তিনি পরে দিয়ে দিবেন।
উল্লেখ্য, গত ২১ এপ্রিল টিএইচও জাতীয় ভিটামিন এ প্লাস ক্যাম্পেইনের ৩ লাখ ৩৪ হাজার ৩৫৫ টাকা উত্তোলন করে আত্মগোপনে করে।

এব্যাপারে সিভিল সার্জন ডা. এস.এফ.এম খায়রুল আতাতুর্ক বিটিসি নিউজকে বলেন, শিবগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা মোঃ জাহাঙ্গির হোসেন একজন দূর্ণীতিবাজ। সে যেসব স্থানে এর আগে দায়িত্ব পালন করেছে, সেখানেও অনেক অনিয়ম ও দূর্ণীতি করেছে। এর আগে জেলার নাচোলে দায়িত্ব পালনকালে সে অর্থ আত্মসাৎ করে। ফরিদপুর জেলার আলফাডাঙ্গায় কর্মরত থাকা কালে সেখানেও অর্থ আত্মসাৎসহ নানা অনিয়ম করেছে। জেলাতে দায়িত্ব পালনকালে মুক্তিযোদ্ধাগণের টাকা আত্মসাৎসহ তাঁর বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ। এই কর্মকর্তার অনিয়ম ও দূর্ণীতির বিবরণ তুলে ধরে বর্তমানে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য ঢাকায় উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে। খুব কম সময়ের মধ্যেই তাঁর দূর্ণীতি ও অনিয়মের শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেবেন উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ। এছাড়া তাঁর বিরুদ্ধে দূর্ণীতি দমক কমিশন (দুদক) এ মামলা রয়েছে।

সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি মো: আশরাফুল ইসলাম রঞ্জু।#

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.