চট্টগ্রাম-মোংলা বন্দর অর্থনীতির ‘গেম চেঞ্জার’: দোরাইস্বামী

ঢাকা প্রতিনিধি: ভৌগলিক অবস্থানগত কারণে চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দর এই অঞ্চলের অর্থনীতির ‘গেম চেঞ্জার’ হিসেবে আবির্ভূত হতে যাচ্ছে বলে মনে করেন ভারতীয় হাইকমিশনার বিক্রম দোরাইস্বামী।
আজ রবিবার (২৯ আগস্ট) ঢাকাস্থ ভারতীয় হাইকমিশনে বিসনেজ অ্যান্ড ইকোনোমিক জার্নালিস্ট সেমিনারে তিনি এ কথা বলেন।
বন্দর দুটির গুরুত্ব ব্যাখ্যা করে বিক্রম দোরাইস্বামী বলেন, উত্তর ভারত বিশেষ করে ত্রিপুরা, মিজোরাম, অরুণাচলের অবকাঠামো উন্নয়নেও বন্দর দুটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এ ক্ষেত্রে উভয় দেশ লাভবান হবে। এমনকি মিয়ানমারও বন্দর দুটির সুবিধা নিয়ে বাংলাদেশের উন্নয়ন করতে পারে। নেপাল ও ভুটানের উন্নয়নও চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দর ছাড়া সম্ভব নয়।
তিনি আরও বলেন, অনেকে বাংলাদেশকে ছোট দেশ বলে, আমি এই কথায় দ্বিমত পোষণ করি। কারণ বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যা ১৭ কোটি। সুতরাং বাংলাদেশ ছোট দেশ কীভাবে হয়। বাংলাদেশ বৃহৎ অর্থনীতির একটি দেশ। এই দেশের ইকোনোমিক মার্কেট অনেক বেশি। বাংলাদেশ ও ভারতের সম্পর্ক ঐতিহাসিক। সাংস্কৃতি, বাণিজ্যিক ও স্বাধীনতা যুদ্ধ থেকে শুরু করে নানা বিষয়ে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক অনেক গভীর। বাংলাদেশ ভারতের বড় উন্নয়ন সঙ্গী।
বিদ্যুৎখাতে বাংলাদেশ-ভারতের সম্পর্ক উল্লেখ করে ভারতীয় হাইকমিশনার বলেন, জামালপুরে যমুনা নদীর পাড়ে দেশের সবচেয়ে বড় ১০০ মেগাওয়াট সৌর বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করা হবে। বাংলাদেশ সরকার দেশের মোট বিদ্যুৎ উৎপাদনের ১০ শতাংশ নবায়নযোগ্য জ্বালানি উৎপাদনের পরিকল্পনা করেছে। জামালপুর জেলার মাদারগঞ্জ উপজেলার জোড়খালী ইউনিয়নের কাইজরচর মৌজায় ১০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার সৌর বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে। এটি ভারতীয় নমনীয় ঋণের আওতায় বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। প্রকল্পে ভারতীয় ঋণ ১ হাজার ১১২ কোটি ৫০ লাখ টাকা। কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় স্থাপিত বাংলাদেশ-ভারত বিদ্যুৎ সঞ্চালন কেন্দ্রের মাধ্যমে ভারতের বহরমপুর থেকে বিদ্যুৎ আসছে। আদানির বিদ্যুৎকেন্দ্রটি নির্মাণ করা হয়েছে ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য ঝাড়খণ্ডের গোড্ডা জেলায়। শুধু বাংলাদেশে বিদ্যুৎ আমদানির জন্যই বিদ্যুৎকেন্দ্রটি নির্মাণ করেছে ভারত।
রেলপথেও বাংলাদেশ-ভারতের যোগাযোগে উন্নতি হয়েছে দাবী করে তিনি বলেন, দীর্ঘদিন পর চিলাহাটি-হলদিবাড়ি রেলপথ চালু হয়েছে। বাংলাদেশ রেলওয়ের কুলাউড়া-শাহবাজপুর সেকশন পুনর্বাসন ও খুলনা মোংলা রেলপথ ভারতীয় এলওসির আওতায় বাস্তবায়িত হচ্ছে। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ অন্য স্থানে নেওয়ার অবকাঠামো উন্নয়ন, পায়রা বন্দরের টার্মিনাল নির্মাণ, বগুড়া থেকে সিরাজগঞ্জ পর্যন্ত ডুয়েলগেজ রেলপথ নির্মাণ, সৈয়দপুর বিমানবন্দর উন্নত করা, ফরিদপুরের ভাঙ্গা থেকে বেনাপোল পর্যন্ত মহাসড়ক চার লেনে উন্নীত করা, মীরসরাইয়ের বারইয়ারহাট থেকে রামগড় পর্যন্ত সড়ক চার লেনে উন্নীত করা, মীরসরাই বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গঠন, কুমিল্লা থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহর হয়ে সরাইল পর্যন্ত চার লেন সড়ক নির্মাণ এবং ঢাকা, চট্টগ্রাম ও রাজশাহীতে এক লাখ এলইডি বাল্ব সরবরাহ প্রকল্পও বাস্তবায়নে ভারতীয় এলওসির আওতায়। ভারত সব সময় বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে গুরুত্ব দিয়ে থাকে।

সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর ঢাকা প্রতিনিধি মোমাসুদ রানা খন্দকার। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.