চট্টগ্রামে আজাদ খুনে সম্পৃক্ত স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা খোকন : পুলিশ

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি: চট্টগ্রামে যুবক আজাদুর রহমান আজাদ হত্যায় স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা আবদুল মান্নান খোকনের সম্পৃক্ততা পেয়েছে নগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। তার বাসায় বসে আজাদকে হত্যার পরিকল্পনা হয় বলে পুলিশ জানিয়েছে।
রোববার খুলনার পাইকগাছা থেকে এই হত্যা মামলার দুই আসামিকে গ্রেপ্তারের পর এমন তথ্য পেয়েছে ডিবি। এরপর খোকনের বাসায় অভিযান চালানো হয়। কিন্তু তাকে পাওয়া যায়নি।
আব্দুল মান্নান খোকন ২৫ নম্বর রামপুর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আব্দুস সবুর লিটনের ছোট ভাই। হত্যাকাণ্ডের পর থেকেই স্থানীয়রা অভিযোগ করে আসছিলেন, জড়িতরা কাউন্সিলর ও তার ভাইয়ের অনুসারী।
গ্রেপ্তার দুই আসামি হলেন- নগরীর হালিশহরের মো.আবুল হাসনাত রাজু (৩৪) ও পাহাড়তলী থানার পানিরকল এলাকার মো. ওসমান (৩৫)। মৃত্যুর আগে ধারণ করা একটি ভিডিওতে আজাদ তার ওপর হামলাকারী হিসেবে এই দু’জনের নাম বলেন। 
আজ সোমবার (০৫ জুন) নগরীর মনসুরাবাদ গোয়েন্দা পুলিশ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে উপ-কমিশনার (ডিবি- পশ্চিম) মোহাম্মদ আলী হোসেন এসব তথ্য জানিয়ে বলেন, ‘হত্যাকাণ্ডের পর ওসমান ও রাজু খুলনা পালিয়ে গিয়েছিল। সেখান থেকে সাতক্ষীরা হয়ে তারা ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করছিল। এর আগেই তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।’
উপ-কমিশনার জানান, আজাদুর রহমান ও তার বড় ভাই মফিজুর রহমান নয়াবাজার মোড়ে রহিম কন্ট্রাক্টরের মালিকানাধীন একটি খালি জায়গার প্রহরী হিসেবে কাজ করতেন। গত ২৭ মে রাতে ওই জায়গার গেটের সামনে প্রস্রাব করা নিয়ে টমি নামে এক যুবকের সঙ্গে বাগবিতণ্ডা হয় মফিজের।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, আজাদের ভাইয়ের সঙ্গে যে যুবকের কথা কাটাকাটি হয় তার নাম টমি। ভোরে টমি, ফাহিম, ওসমান ও রাজু মোটরসাইকেল নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে আজাদের সঙ্গে বাগবিতণ্ডায় জড়ান। এরপর মোটরসাইকেল থেকে নেমে টমি প্রথম ছুরিকাঘাত করে আজাদকে, পরে ফাহিমসহ অন্যরা তাকে আঘাত করে। হত্যাকাণ্ডের পর তারা টমির বাসায় গিয়ে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ছুরি দু’টি রেখে আসেন এবং পরনের কাপড় পাল্টে সেগুলো ভিজিয়ে রাখেন।
মোহাম্মদ আলী হোসেন বলেন, রাজু ও ওসমানকে খুলনা থেকে গ্রেপ্তারের পর তাদের দেওয়া স্বীকারোক্তি অনুযায়ী টমির বাসা থেকে ছুরি দুইটি উদ্ধার করা হয়।
গোয়েন্দা কর্মকর্তারা জানান, আজাদ ও তার ভাইয়ের সঙ্গে বিতণ্ডার পর টমি ও অন্যরা খোকনের বাসায় গিয়েছিলেন। সেখানে তারা বৈঠক করে ভোরে হামলা চালান। হামলার পরে তারা আবার খোকনের বাসায় গিয়ে কিছু সময় অবস্থান করেন। পরে তারা একে একে সটকে পড়েন।
এ প্রসঙ্গে গোয়েন্দা পুলিশের উপ-কমিশনার আলী হোসেন বলেন, ‘বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখছি। খোকনের খোঁজে ইতিমধ্যে তার বাসায় অভিযান চালানো হয়েছে। তাকে পাওয়া যায়নি।’
গত ২৮ মে ভোরে নগরীর পাহাড়তলী থানার সরাইপাড়া নয়াবাজার মুজিবুর রহমান প্লাজার সামনে খুন হন আজাদুর রহমান আজাদ নামে এক যুবক। পরিবারের অভিযোগ, চাঁদা নিতে বাঁধা দেওয়ায় স্থানীয় কাউন্সিলরের ছোট ভাইয়ের অনুসারীরা তাকে খুন করেছে। এ ঘটনায় তার স্ত্রী বাদী হয়ে চারজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। পরদিন রাঙ্গামাটি থেকে তিনজনকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর চট্টগ্রাম প্রতিনিধি মো. মোতাহার আলী। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.