গঙ্গাসাগর মেলার অনুমতি দিল কলকাতা হাইকোর্ট

বিশেষ (ভারত) প্রতিনিধি: রাজ্যের দাবি মেনে শর্তসাপেক্ষে গঙ্গাসাগর মেলার অনুমতি দিল কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তবের ডিভিশন বেঞ্চ। করোনা বিধি মেনে যাতে গঙ্গাসাগর মেলা হয়, তার জন্য তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই তিন সদস্যের কমিটির মাথায় থাকবেন মুখ্যসচিব।
সেই কমিটিতে থাকবেন মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান বা তাঁর মনোনীত প্রতিনিধি, বিরোধী দলনেতা বা তাঁর মনোনীত প্রতিনিধি এবং রাজ্যের মুখ্যসচিব বা তাঁর মনোনীত রাজ্য সরকারের কোনও প্রতিনিধি৷ কোনও শর্ত মানা না হলে অথবা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে ততক্ষণাৎ মেলা বাতিলের ক্ষমতা থাকবে এই কমিটির হাতে৷
বর্তমান কোভিড পরিস্থিতিতে গঙ্গাসাগর মেলা বন্ধের আবেদন জানিয়ে হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেছিলেন অভিনন্দন মণ্ডল নামে এক চিকিৎসক৷ হাইকোর্টের রায়ের পর তিনি বলেন, ‘শর্তগুলি পূরণ করে মেলার আয়োজন করা যাবে কি না, সেই প্রশ্ন থাকবেই৷ কী কী শর্ত হাইকোর্ট দিয়েছে তা আগে খতিয়ে দেখতে হবে৷ মৃত্যু মিছিল আটকানোই আমাদের লক্ষ্য ছিল৷
মামলাকারীদের তরফে জানানো হয়েছে, নির্দেশিকায় হাইকোর্ট বলেছে, ধর্মীয় অনুষ্ঠানে পঞ্চাশ জনের বেশি একত্রিত হতে পারবেন না বলে যে নির্দেশ রাজ্য সরকার জারি করেছিল, তা গঙ্গাসাগর মেলার ক্ষেত্রেও মানতে হবে৷
মেলা প্রাঙ্গনেও একত্রে পঞ্চাশ জনের বেশি উপস্থিত থাকতে পারবেন না৷ রাজ্যের স্বরাষ্ট্র সচিবকে বিজ্ঞপ্তি জারি করে বিষয়টি জানিয়ে দিতে হবে বলেও হাইকোর্টের নির্দেশিকায় বলা হয়েছে৷ মেলায় ভিড়় না করার জন্য সংবাদমাধ্যমে বেশি করে প্রচার করার নির্দেশও দিয়েছে হাইকোর্ট৷
এদিনই করোনা আবহে গঙ্গাসাগর মেলা বন্ধ রাখার জন্য জোর সওয়াল করে বিজেপির। বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেন, গঙ্গাসাগর মেলা নিয়ে সরকার দ্বিচারিতা করছে।
একদিকে মুখ্যমন্ত্রী বলছেন, আগামী সাতদিন ভয়ঙ্কর। কেউ বাড়ি থেকে বেরোবেন না। আবার বলছেন গঙ্গাসাগরে ইতিমধ্যেই ৩০ হাজার মানুষের সমাগম হয়েছে। তারপর ১০ হাজার পুলিশ এবং পাঁচ হাজার স্বেচ্ছাসেবী নিয়ে মোট ৪৫ হাজারের সমাগম হয়েছে।
রাজ্য দাবি করছে, গঙ্গাসাগরে করোনাবিধি মেনে মেলার প্রস্তুতি এগিয়ে চলছে। কিন্তু বিজেপির তরফে গঙ্গাসাগর মেলা বন্ধ রাখার আবেদন জানিয়ে তিনি বলেন, গঙ্গাসাগরে স্বাস্থ্য পরিষেবা খুবই উদ্বেগের। মাত্র ১১ জন চিকিৎসক রয়েছেন গঙ্গাসাগর সন্নিহিত হাসপাতালে। মাত্র ৬০ বেডের হাসপাতাল। এই বিপুল সমাগমের জন্য যদি করোনা ছড়ায়, তবে তা সামলানোর পরিকাঠামো নেই।
রাজ্য সরকারের তরফে সওয়ালে বার বারই দাবি করা হয়েছিল, সবরকম স্বাস্থ্যবিধি মেনেই গঙ্গাসাগর মেলার আয়োজন করা হচ্ছে৷ আগামী ৮ জানুয়ারি থেকে মেলা শুরু হওয়ার কথা৷ ইতিমধ্যেই সাধু সন্ন্যাসী সহ প্রায় তিরিশ হাজার পুণ্যার্থী মেলা প্রাঙ্গনে হাজির হয়ে গিয়েছেন বলে খবর৷
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ (বাংলাদেশ) এর বিশেষ (ভারত) প্রতিনিধি রাজশ্রী বন্দ্যোপাধ্যায়। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.