গঙ্গাচড়া শেখ হাসিনা সেতুতে অন্ধকারে বাড়ছে ছিনতাই

লালমনিরহাট প্রতিনিধি: দীর্ঘদিন ধরে বাতিগুলো বন্ধ। বন্ধ নাকি নষ্ট! তাও জানা নেই। এভাবেই প্রতি রাতে ভুতুড়ে অন্ধকারে ভয় আর শঙ্কা নিয়েই চলাচল করে ‘গঙ্গাচড়া শেখ হাসিনা সেতু’ পাড় হতে হয় নানা যানবাহসহ তিস্তা চরাঞ্চলের মানুষ। দীর্ঘদিন ধরে সেতুর দুই পাশের ল্যাম্পপোস্টগুলো নষ্ট হয়ে থাকলেও তা সংস্কারে কোনো উদ্যোগ নেই সংশ্লিষ্টদের। ফলে পুরো সেতু জুড়েই ভুতুড়ে অন্ধকার বিরাজ করে। ঘটছে নানান ধারণের দুর্ঘটনা।

গাড়িগুলো হেডলাইট জ্বেলে চলাচল করলেও অন্ধকারে বেশ বিড়ম্ভনায় পড়তে হয় পথচারীদের। ভুতুড়ে অন্ধকারে প্রতিদিনই চুরি, ছিনতাই, চাঁদাবাজিসহ ছোটখাট নানা অপরাধ ঘটছে ‘গঙ্গাচড়া শেখ হাসিনা সেতু’ এলাকায়।

গত বুধবার (১২ এপ্রিল ) রাত ৯টার দিকে ‘গঙ্গাচড়া শেখ হাসিনা সেতু’ এলাক‍ায় গিয়ে এমনেই চিত্র দেখা যায়।

জানা যায় ,রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার লক্ষ্মীটারী ইউনিয়নের মহিপুর ও লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলা কাকিনা ইউনিয়নে প্রায় ১২৩ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘গঙ্গাচড়া শেখ হাসিনা সেতু’ নির্মাণ করে সরকার। সেতুটি নির্মাণ কাজের তদারকি করেন কালীগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশল দফতর।

২০১৮ সালের শেষের দিকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে টোল ফ্রি এ সেতুটির উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর পরেই উদ্বোধনের পর এ সেতু হয়ে হালকা যানবাহন চলাচল শুরু করে। এতে দুই জেলার আর্থসামাজিক উন্নয়নের দ্বার খুলে যায়।

বেশি উপকৃত হয় লালমনিরহাটের আদিতমারী, কালীগঞ্জ, হাতীবান্ধা ও পাটগ্রাম উপজেলাসহ বুড়িমারী স্থলবন্দর এলাকার মানুষ। এসব এলাকার ব্যবসা-বাণিজ্যের পথও সুগম হয়। এ সেতু দিয়ে ভারী যানবাহনের অনুমতি না থাকায় মাইক্রোবাস, প্রাইভেটকার, পিকআপ, থ্রি-হুইলার ও অটোরিকশার যাতায়াত বেশি।

সেতুটির দু পাশে বাতি জ্বালানোর জন্য সেখানে স্থাপন করা হয় একটি স্বয়ংক্রিয় সিস্টেম।দিনে বেলা সূর্যের আলো থাকলে স্বয়ক্রিয়ভাবে বাতিগুলো বন্ধ হয়ে যাবে। আবার সন্ধ্যা হলেই জ্বলে উঠবে বাতি গুলো। আর সকাল হলে একইভাবে তা নিভে যাবে।

উদ্বোধন পর পরেই ধীরে ধীরে একটি একটি করে বাতি গুলো নষ্ট হয়ে যায়। বর্তমানে সবগুলো বাতিই অকেজো হয়ে আছে। আর এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে অন্ধকারের এ সুবিধাকে কাজে লাগিয়ে প্রতিদিনই ঘটছে ছিনতাইয়ের ঘটনা। বাড়ছে মাদকসেবীদের দৌরাত্ম্য। করছে চুরি, ছিনতাই, চাঁদাবাজিসহ ছোটখাট নানা অপরাধ।

ওই এলাকার রিক্সা চালক সবুজ মিয়া বিটিসি নিউজকে জানান, প্রথমে দু’একটি বাতি নষ্ট হয়ে যায়। কিন্তু এসব নষ্ট বাতি মেরামত করা হয়নি। বর্তমানে সবগুলোই নষ্ট হয়ে আছে।দ্রুত এ বাতি গুলো চালু না করলে চুরি, ছিনতাই, চাঁদাবাজিসহ এ এলাকায় বড় দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে।

আরেকজন পথচারী রফিকুল ইসলাম বিটিসি নিউজকে জানান, স্থানীয়দের নিয়ে লক্ষ্মীটারী ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের কাছে গেলে চেয়ারম্যান জানিয়েছে, এটি কালীগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলীর দায়ীত্বে।

একেই এলাকার সিমলা আক্তার বিটিসি নিউজকে বলেন, সেতুটি বাতি গুলো না থাকাতে রংপুর থেকে ঘুরতে আসা সাধারণ মানুষ সমস্যায় পড়ছেন। বখাটেরা নারীদেরও উত্ত্যক্ত করছে। অনেক সময় মোবাইলসহ নানান ধারণের জিনিস পত্র ছিনতাই করে চলে যাচ্ছে।

কালীগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী সুলতান মাহমুদ কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি এ বিষয় কথা বলতে রাজি হন নি।

সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর লালমনিরহাট প্রতিনিধি হাসানুজ্জামান হাসান।#

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.