খুলনা মহানগর ও জেলা আ. লিগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলন আগামীকাল প্রধান অতিথি ওবায়দুল কাদের

খুলনা ব্যুরো:  খুলনার ঐতিহ্যবাহী সার্কিট হাউস ময়দানে আগামীকাল মঙ্গলবার ( ১০ ডিসেম্বর ) অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে মহানগর ও জেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলন।

সকাল সাড়ে ১০টায় উদ্বোধন করবেন আওয়ামী লীগের সভাপতি মন্ডলীর সদস্য পীযুষ কান্তি ভট্টাচার্য।

প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সড়ক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। অতিথি হিসেবে থাকবেন খুলনা ২ আসনের সংসদ সদস্য  শেখ হেলাল উদ্দিন এমপি।

প্রায় ৫ বছর পর খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগ এবং ৪ বছর পর জেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। খুলনায় এবার প্রথম একসঙ্গে জেলা ও নগর আওয়ামী লীগের সম্মেলন হচ্ছে।

সম্মেলনকে সামনে রেখে খুলনায় দলীয় নেতাকর্মীদের মাঝে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা সৃষ্টি হয়েছে। কারা আসছেন নেতৃত্বে এমন আলোচনা সর্বত্র। চলছে নেতাকর্মীদের আলোচনা আর বিশ্লেষণ।

২০১৪ সালের ২৯ নভেম্বর আওয়ামী লীগ খুলনা মহানগর কমিটির ত্রিবার্ষিক সম্মেলন হয়। সম্মেলন শেষে কাউন্সিল অধিবেশনে তালুকদার আব্দুল খালেককে সভাপতি ও মিজানুর রহমান মিজানকে সাধারণ সম্পাদক ঘোষণা করা হয়। দীর্ঘ ১৯ মাস অপেক্ষার পর ১১ জুন ৭১ সদস্যের এই কমিটির অনুমোদন দেন দলীয় প্রধান।

ক্ষমতাসীন  দল হলেও সম্মেলনের পর থেকে নিয়মিত সাংগঠনিক ও রাজনৈতিক কর্মসূচিতে ব্যস্ত ছিলেন নেতাকর্মীরা। নগর সম্মেলনের আগে নগরীর ৩৬ সাংগঠনিক ওয়ার্ডের পাঁচ-ছয়টি বাদে সব শাখার সম্মেলন শেষ হয়েছে।

মহানগর কমিটির এই শীর্ষ দুই নেতাই মাঠে সক্রিয় রয়েছেন। কমিটির সভাপতি তালুকদার আবদুল খালেক  খুলনা সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচিত মেয়র। মহানগর শাখার সভাপতি পদে এখন পর্যন্ত একক প্রার্থী হিসেবে তালুকদার খালেকেরই নাম শোনা যাচ্ছে। সভাপতি পদে পরিবর্তন না আসলেও সাধারণ সম্পাদক পদ নিয়ে  তৈরি হয়েছে ধুম্রজাল। সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান মিজানকে গত সংসদ নির্বাচনে দল থেকে মনোনয়ন দেয়া হয়নি।

এছাড়াও তার বিরুদ্ধে মাদকব্য বসায়ীদের  প্রশ্রয় দেয়া এবং অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনে মামলা হওয়ার পর অনেকটা কোণঠা সা অবস্থায় আছেন তিনি। এক সময়ের সঙ্গীরাও তাকে আগের মতো সময় দেন না। এসব কারণে নেতাকর্মীরা মনে করছেন সাধারণ সম্পাদকের মতো গুরুত্বপূর্ণ পদটি হয়তো এবার তার হাতছাড়া হয়ে যেতে পারে।

সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান মিজান ছাড়াও এই পদে অন্য যাদের নাম শোনা যাচ্ছে তারা হলেন খুলনা সদর থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি এ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম, নগর কুমুটর যুগ্ম সম্পাদক এমডিএ বাবুল রানা, সাংগঠনিক সম্পাদক ফারুক আহমেদ, আশরাফুল ইসলাম ও আবুল কালাম আজাদ কামাল, দৌলতপুর থানা সভাপতি সৈয়দ আলী প্রমুখ।

অন্যদিকে ২০১৫ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি খুলনা জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনের ১০ মাস পর ২০১৬ সালের ২৭ নভেম্বর ৭০ সদস্যের জেলা কমিটির অনুমোদন দেওয়া হয়।

কমিটিতে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন যথাক্রমে শেখ হারুনুর রশিদ ও এস এম মোস্তফা রশিদী সুজা। মোস্তফা রশিদী সুজা দীর্ঘদিন অসুস্থ থাকার পর ২০১৮ সালের ২৭ জুলাই মারা যান। পরে ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পান গাজী আব্দুল হাদী। তিনিও আকস্মিক মারা যাওয়ায় এখন ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন অ্যাডভোকেট সুজিত অধিকারী। সম্মেলনে শীর্ষ নেতৃত্বের ক্ষেত্রে এবার চমক থাকতে পারে বলে আলোচনা রয়েছে। উভয় পদেই রয়েছেন একাধিক প্রার্থী। সভাপতি পদে বর্তমান সভাপতি শেখ হারুনুর রশিদ ছাড়াও আলোচনায় এসেছেন সাবেক সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট সোহরাব আলী সানা। এ ছাড়া আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট এম এম মুজিবুর রহমান, সাবেক মন্ত্রী নারায়ণচন্দ  চন্দ এমপি।

সাধারণ সম্পাদক পদে বর্তমান ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সুজিত অধিকারী শক্ত প্রার্থী। আলোচনায় রয়েছেন জেলা যুগ্ম সম্পাদক শরফুদ্দিন বিশ্বাস বাচ্চু, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি অসিত বরণ বিশ্বাস, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক কামরুজ্জামান জামাল, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. আখতারুজ্জামান বাবু এমপি,  জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এস এম মোর্ত্তজা রশিদী দারা, বটিয়াঘাটা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আশরাফুল আলম খান এবং জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক হুমায়ূন কবির ববির।

দলীয়  হাইকমান্ড ও একাধিক সুত্র থেকে জানা গেছে দুটি কমিটিতে সিলেকশনের মাধ্যমে   আসবে নতুন নেতৃত্ব ।এ ক্ষেত্রে নগরের বর্তমান সভাপতি তালুকদার আবদুল খালেক ও সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান মিজান স্বপদে বহাল থাকতে পারেন। অনুরূপ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হারুনুর রশীদও স্বপদে বহাল থাকছেন। শুধু সাধারণ সম্পাদক পদে নতুন মুখ আসতে পারে।

জেলা সভাপতি ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শেখ হারুনুর রশীদ বলেন, কে সভাপতি বা সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হবেন সেটা দলের হাইকমান্ডই বলতে পারবে। দলের দুর্দিনে যাদের ত্যাগে আজকের সংগঠন দাঁড়িয়ে আছে তারাই নেতৃত্বে আসুক- সেটাই আমরা প্রত্যাশা করি।

সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর খুলনা ব্যুরো প্রধান এইচ এম আলাউদ্দিন এবং মাশরুর মুর্শেদ। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.