খুলনার সাংবাদিকদের গুরু সাহাবুদ্দিন আহমেদ আর নেই

খুলনা ব্যুরো: খুলনার সাংবাদিকদের গুরু খ্যাত, খুলনা প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি প্রবীন সাংবাদিক সাহাবুদ্দিন আহমেদ (৮২) ইন্তেকাল করেছেন (ইন্না লিল্লািহ ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)
শুক্রবার (০২ জুলাই) দিবাগত রাত সাড়ে ৩টা দিকে রাজধানীর এভার কেয়ার (এ্যাপোলো) হাসপাতালের সিসিইউতে চিকিৎসকদের নিবীড় পর্যবেক্ষনে থাকাবস্থায় শেষ নি:শ্বাস ত্যাগ করেন। এর তিনদিন আগে তাকে এ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ঢাকার বসুন্ধরার বাসায় থাকাবস্থায় ডায়ারিয়ায় আক্রান্ত হবার পর তাকে এ  হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। চিরকুমার এ প্রবীণ সাংবাদিক দীর্ঘদিন বসুন্ধরায় ভাগ্নে মো. হাবিবুর রশিদ খানের বাসায় বসবাস করতেন।
প্রাইভেট কোম্পানীর কর্মকর্তা হাবিবুর রশিদ খান বলেন, তিনদিন এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মামা (সাহাবুদ্দিন আহমেদ)। গতকাল শুক্রবার দুপুরে হঠাৎ করে প্রেসার নেমে যায় ৪০/৩৫ এ। এখানে চিকিৎসাধীন থাকাবস্থায় রাত সাড়ে ৩টার দিকে ইন্তিকাল করেন। বসুন্ধরা বড় মসজিদে জোহরবাদ জানাজা শেষে বনানী কবরস্থানে দাফনের কথা রয়েছে।
সাংবাদিক শাহাবু‌দ্দিন আহমদ ১৯৩৯ সালের ১ জানুয়ারি জন্মগ্রহণ করেন। ঢাকার মানিকগঞ্জে তার পৈত্রিক ভিটে। বাবার চাকরির সুবাধে খুলনাসহ বিভিন্ন স্থানে লেখাপড়া করেন। সর্বশেষ শিক্ষা জীবন দৌলতপুর সরকারী বিএল কলেজ।
তিনি ১৯৬২ সালে শরীফ কমিশন রিপোর্ট বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নেন। পূর্ব পাকিস্তানের ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন। শিক্ষা জীবন শেষে তৎকালীন রূপসা থানার বেলফুলিয়া ইসলামিয়া উচ্চ বিদ্যালয়, মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ফাতিমা উচ্চ বিদ্যালয় এবং চালনা পোর্ট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে বিভিন্ন সময়ে শিক্ষাকতা করেন।
১৯৬৫ সালে খুলনার স্থানীয় ওয়েভ পত্রিকার মাধ্যমে সাংবাদিকতা পেশার সাথে যুক্ত হন। ৪৪ বছরের পেশাগত জীবনে সাপ্তাহিক হলিডে, বাংলাদেশ টাইমস, দি ডেইলী টেলিগ্রাফ, ডেইলী ফিন্যানশিয়াল এক্সপ্রেস ও দি ডেইলী ইনডিপেনডেন্ট পত্রিকায় কর্মরত ছিলেন।
ইনডিপেনডেন্ট-এ পত্রিকায় ১৩ বছর দায়িত্ব পালন শেষে বার্ধক্যজনিত কারণে ২০০৯ সালের ৯ সেপ্টেম্বর সাংবাদিকতা থেকে অবসর নেন। ১৯৭০-৭১ সালে করাচীর প্রভাবশালী দৈনিক ডন পত্রিকার খুলনাস্থ প্রতিনিধি ছিলেন।
তিনি ১৯৮০, ১৯৮২ ও ১৯৮৪ সালে অবিভক্ত খুলনা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি. ১৯৮৫-৮৬, ১৯৯২-৯৩, ১৯৯৫-৯৬, ১৯৯৯-২০০০ সালে খুলনা প্রেস ক্লাবের সভাপতি নির্বাচিত হন। ১৯৭৫ সালে বাকশালে যোগাদান প্রশ্নে স্থানীয় সাংবাদিকদের সিদ্ধান্তের সাথে একমত হতে পারেনি।
তিনি তার সিদ্ধান্তে অটল ছিলেন। একমাত্র তিনিই বাকশালে যোগদান করেননি। স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মীদের আপাদকালীন সাহায্যের জন্য কল্যাণ তহবিল গঠনে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করেন।
বস্তুনিষ্ঠ তথ্যের ভিত্তিতে নিখুঁত সংবাদ পরিবেশনে তিনি খুলনার সাংবাদিক অঙ্গনে আজও উদাহরণ। বানান ও বাক্য গঠনে তিনি যত্নবান ছিলেন। সাংবাদিকতায় বিশেষ অবদান এবং বিতর্কের উর্ধ্বে থাকায় ২০০৮ সালে সাদা মনের মানুষ হিসেবে জেলা প্রশাসন থেকে স্বীকৃতি প্রাপ্ত হন।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর খুলনা ব্যুরো প্রধান এইচ এম আলাউদ্দিন এবং মাশরুর মুর্শেদ। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.