খুলনার দিঘলিয়ায় নির্বাচনী সহিংসতা ভোটাররা অবাধ ও নিরোপক্ষ নির্বাচন নিয়ে শঙ্কিত

খুলনা ব্যুরো: গত রবিবার (১২ সেপ্টেম্বর) দিঘলিয়া উপজেলার সেনহাটিতে নির্বাচনী সহিংসতায় উভয় পক্ষের পনেরো জন আহত হয়েছে। ছয়জনের অবস্থা আশংকাজনক। তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে জিয়া গাজীর সমর্থক হিটলারকে মারধর করা নিয়েই এলাকায় এ সহিংসতা শুরু হয়।
এ ব্যাপারে আ’লীগ মনোনীত প্রার্থী ফারহানা হালিম বাদী হয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী গাজী জিয়াউর রহমানকে প্রধান আসামী করে মামলা দায়ের করেছেন। মামলা নম্বর ৯, তারিখ ১৩/০৯/২০২১ ইং।
এদিকে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত অপর প্রার্থী গাজী জিয়াউর রহমানের পক্ষ থেকে মামলার প্রস্তুতি চলছিল। এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে এবং পুলিশের টহল জোরদার করা হয়েছে।
এলাকাবাসী ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত রবিবার (১২ সেপ্টেম্বর) তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে জিয়া গাজীর সমর্থক হিটলারকে মারধর করে ফারহানা হালিমের সমর্থকেরা। এই ঘটনার জেদ ধরেই গাজী জিয়াউর রহমান তার নির্বাচনী কর্মীদের সাথে নিয়ে পূর্ব হিটলারকে মারার ব্যাপারে অভিযোগ জানানোর জন্য সেনহাটি পুলিশ ফাঁড়িতে আসে।জিয়া কয়েকজন সমর্থক নিয়ে ফাঁড়ির ভেতরে যান। কিছু সমর্থকেরা রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকে। এ সময় আ’লীগের মনোনীত প্রার্থী ফারহানা হালিমের সমর্থকেরা জিয়া গাজীর রাস্তায় দাঁড়ানো সমর্থকদের সাথে বাক বিতন্ডায় জড়িয়ে পড়ে।
এ ঘটনার কিছুক্ষণ পর চন্দনীমহল স্টার দুই নম্বর গেট থেকে মোটরসাইকেল যোগে ফারহানা হালিমের সমর্থক মল্লিক মিজানুর রহমান (৪০), বাবু গাজী (৩৫) ও দিঘলিয়া উপজেলার ছাত্রদলের আহবায়ক গাজী মনিরুল (৩০) পুলিশ ফাঁড়ির সামনে আসে এবং জিয়া গাজীর সমর্থকদের উপর হামলা করে। তারা কয়েক দফা জিয়া গাজীর লোকজনের উপর হামলা চালায়। এসময় তারা দুটি মোটরসাইকেল ভাঙ্গচুর করে। তাদের হামলায় বেশ কয়েকজন আহত হলে তাদেরকে দিঘলিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে খুলনা মেডিকেলে ভর্তি করা হয়।
এর পর ফারহানা হালিমের সমর্থক মিজান মল্লিক, বাবু গাজী ও দিঘলিয়া ছাত্রদলের আহবায়ক মনিরুল গাজীর নেতৃত্বে ফারহানা হালিমের সমর্থকরা জিয়া গাজীর গণসংযোগে হামলা করে। এক পর্যায়ে মিজান মল্লিক, আশরাফ মোল্লা, মনিরুল গাজীর নেতৃত্বে স্টার দুই নম্বর গেটে জিয়া গাজীর সমর্থক মনছুর ও জামালের চায়ের দোকান ও নজরুলের বাড়ি ভাঙ্গচুর করে। এসময় আশরাফ মোল্লা তাছের নামক ব্যক্তিকে অমানষিকভাবে মারধর করে।তারা কমলের স্ত্রী, আজিজুর ও মারুফকে মারধর করে।
এ সময় জিয়া গাজীর লোকজন প্রতিরোধে এগিয়ে এলে এ সময় মিজান মল্লিক, বাবু গাজী ও মনিরুল গাজী আহত হয়। সন্ধ্যায় ফারহানা হালিমের ছেলে নিলয়ের নতৃত্বে তাঁর সমর্থকরা স্বতন্ত্র প্রার্থী জিয়া গাজীর অফিস ভাঙ্গচুর করে এবং অফিসে বসে থাকা মারুফকে কুপিয়ে খুন জখম করে বলে জানা গেছে। খবরপেয়ে এডিশনাল এসপি সুশান্ত, দিঘলিয়া থানা অফিসার ইনচার্জ মোঃ আহসান উল্লাহ চৌধুরী, ওসি তদন্ত রিপন কুমার সরকার বোগদিয়া স্কুল মোড় থেকে আশরাফ বাহিনীর সাব্বিরকে গ্রেফতার করে।
পুলিশ জানায় আশরাফের লোকজন এসময় সাব্বিরসহ অস্ত্র ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হয়। পরে জিয়া গাজী যখন তাদের এলাকায় সংঘটিত সংঘর্ষের ঘটনা নিয়ে কথা বলছিলেন সেখান থেকে পুলিশ জিয়া গাজীর ভাই মুসা গাজীকে গ্রেফতার করেছে। ঘটনার পর বোগদিয়ার আশরাফ মোল্লা ৪ নং ওয়ার্ডের জনৈক সদস্য প্রার্থীকে  হুমকি দিয়ে বলেছে কাল থেকে গনসংযোগ করবিনা। নির্বাচন আমরা এক তরফা করে নেব। তোদের কেন্দ্রে আসতে দেওয়া হবেনা। শুধু তাই নয় সংবাদ প্রকাশিত ও প্রচারিত হওয়ার পর নৌকার প্রার্থী ফারহানা হালিম এবং তাঁর সমর্থকদের পক্ষ থেকে দিঘলিয়ায় কর্মরত জনৈক সাংবাদিককেগালাগালি, হুমকি ও মামলার হুমকি দেওয়া হয়েছে।
এ সংঘর্ষে উভয় পক্ষের ১৫ জন আহত হয়। আহত ১৫ জনের মধ্যে গুরুতর আহত মল্লিক মিজানুর রহমান, বাবা গাজী ও মনিরুল গাজী ফারহানা হালিমের সমর্থক এবং আহত হিটলার, আজিজুর ও মুনছুর, মারুফ, ফিরোজসহ আহত ১২ জন গাজী জিয়াউর রহমানের সমর্থক। তাদেরকে খুলনা মেডিকেল কলেজ ও বিভিন্ন ক্লিনিক ভর্তি করা হয়েছে।
এরিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ফারহানা হালিম (নৌকা প্রতীক) বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেছেন। অপর প্রার্থীর মামলার প্রস্তুতি চলছিল। এলাকায় খুলনা পুলিশ সুপার সহ পুলিশের একাধিক উর্ধতন কর্মকর্তা ঘটনা স্থল পরিদর্শন করেছেন। জোরদার করা হয়েছে পুলিশী টহল।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর খুলনা ব্যুরো প্রধান এইচ এম আলাউদ্দিন এবং মাশরুর মুর্শেদ। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.