খুমেক হাসপাতালে তিন ব্যাগ রক্তের দাম তিন হাজার টাকা ! ১ জন চাকরিচ্যুত অপরজনকে শোকজ
খুলনা ব্যুরো: খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের রক্ত সঞ্চালন বিভাগে তিন ব্যাগ রক্তের দাম তিন হাজার টাকা ! ক্রসমেসিং এ নেয়া হয় ৭৫০ টাকা। স্বেচ্ছাসেবীদের দেয়া এ রক্ত বিক্রি করে পকেট ভরছে রক্ত সঞ্চালন বিভাগ সংশ্লিষ্ট ব্যাক্তিরা।
গতকাল বুধবার (৮ জানুয়ারী) এসব তুঘলকি কাণ্ডের অভিযোগে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক চুক্তি ভিত্তিক নিয়োগপ্রাপ্ত আদনান মাহমুদ কে চাকরিচ্যুত ও ল্যাব এ্যাটেন্টডেন্ট মোসা: রওশান আরাকে শোকজ করা হয়েছে।
জানা গেছে,গত ৫ জানুয়ারি খুলনা মেডিকেল কলেজ (খুমেক) হাসপাতালে পাইকগাছা উপজেলা দরিদ্র ইজিবাইক চালক রায়হানের স্ত্রী গৃহবধূ ববি (২২)গাইনী ওয়ার্ডে ভর্তি হয়।
চিকিৎসকের পরামর্শে অনুযায়ী জরুরি ভিত্তিতে এ পজেটিভ ৫ ব্যাগ রক্তের প্রয়োজন হলে রায়হান ও তার শ্বাশুড়ী খুমেক হাসপাতালের ব্লাড ব্যাংকের রক্ত আনতে যান।
এ সময় ব্লাড ব্যাংকের ওয়ার্ড বয় আদনান মাহমুদ তাকে বলেন, এ প্লাস রক্ত আমাদের কাছে নেই, বাইরে থেকে জোগাড় করে দেবো প্রতি ব্যাগে দেড় হাজার টাকা দিতে হবে।
পরে ৩ ব্যাগের রক্তের জন্য আদনানেন বিকাশে (যার নং ০১৯৫২-৫৪২১২২) ৩ হাজার ৭৫০ টাকা পরিশোধ করেন। টাকা পরিশোধ করার পর দুই ব্যাগ নিয়ে যান। পরবর্তীতে রায়হানের শ্বাশুড়ী ব্লাড ব্যাংকের সামনে রক্তের জন্য কান্নাকাটির বিষয়টি স্বেচ্ছা সেবী সংগঠন খুলনা ব্লাড ব্যাংকের সদস্যদের নজরে আসলে সংগঠনটি এক ব্যাগ রক্ত জোগাড় করে দেয়।
পরে স্বেচ্ছা সেবী সংগঠন খুলনা ব্লাড ব্যাংকের সভাপতি মো: সালেহ উদ্দিন খুমেক হাসপাতালের পরিচালকের কাছে ব্লাড ব্যাংকের ওয়ার্ড বয় (আউটসোর্সিং) আদনান মাহমুদ বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
ঘটনার সততা প্রমানিত হওয়ায় হাসপাতালে পরিচালক ডাঃ এটি এম মঞ্জুর মোর্শেদ ভিত্তিতে চুক্তি ভিত্তিক নিয়োগপ্রাপ্ত আদনান মাহমুদ কে চাকরিচ্যুত ও ল্যাব এ্যাটেন্টডেন্ট মোসা: রওশান আারাকে শোকজ ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের লিখিত অভিযোগ প্রেরণ করেন। চুক্তি ভিত্তিক নিয়োগপ্রাপ্ত আদনান মাহমুদ খুলনা মেডিকেল কলেজ এর পরিচালক ডা, এটিএম এম মোরশেদের নাতি পরিচয়ে এসব অপকর্মে লিপ্ত ছিল।
এ ব্যাপারে হাসপাতালে পরিচালক ডাঃ এটি এম মঞ্জুর মোর্শেদ বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে জানান, হাসপাতালে কেউ দুর্নীতি করার প্রমান পেলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সে যেই হোক না কেনো।
স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন খুলনা ব্লাড ব্যাংকের সভাপতি মো: সালেহ উদ্দিন বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে বলেন, গ্রামঞ্চল থেকে আসা অসহায় রোগীরা টাকার অভাবে প্রয়োজনের রক্ত দিতে পারে না। আমাদের সংগঠনের মাধ্যমে বিভিন্ন অসহায় রোগীদের স্বেচ্ছায় রক্ত দেই। সেই রক্ত যদি সাড়ে ৩ হাজার টাকায় বিক্রি করে, তাহলে অসহায় মানুষগুলো কোথায় যাবে।
এসব প্রতারক চক্রের বিরুদ্ধে মানুষের সজাগ থাকতে হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর খুলনা ব্যুরো প্রধান এইচ এম আলাউদ্দিন এবং মাশরুর মুর্শেদ। #
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.