করোনা ভাইরাসের প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্থ নাটোরের আখচাষীদের বিলের পাওনা টাকা পরিশোধের দাবি

নাটোর প্রতিনিধি: করোনা ভাইরাসের প্রভাবে চরম বিপাকে পড়েছেন নাটোরের দুইটি চিনিকলের অধীন আখচাষীরা। প্রায় তিন মাস আগে আখ বিক্রি করার পরেও সেই টাকা না পাওয়ায় জমিতে সার, সেচ দিতে না পারা এবং শ্রমিক সংকটের মত কঠিন পরিস্থিতি মোকাবেলা করছেন তারা। সমস্যা উত্তরণে এবং চিনিকলে আখের সরবরাহ নিশ্চিত করতে আখ বিক্রির বিলের টাকা দ্রুত পরিশোধের দাবি জানিয়েছেন তারা। এদিকে করোনা ভাইরাসের কারনে চিনি বিক্রি না হওয়ায় আখ চাষীদের পাওনা টাকা পরিশোধ করা সম্ভব হচ্ছে না বলে জানিয়েছে নাটোরের দুটি মিল কর্তৃপক্ষ।

আজ শনিবার দুপুরে নাটোর সুগার মিলের অর্ন্তগত আখ উৎপাদন জোন নাটোর সদর উপজেলার শংকরভাগ ও বাসুপাড়া ও দরাপপুর এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, অর্থ সংকট ও করোনা ভাইরাসের কারণে আখচাষীরা শ্রমিক না পেয়ে নিজে একাই আখের জমি পরিচর্যা করছেন। একই চিত্র অন্য আখচাষীদের। হাতে গোনা শ্রমিক পেলেও তাদের শ্রমের মূল্য দিতে পারছেন না চাষীরা। এছাড়া একই কারণে জমিতে সার ও সেচের ব্যবস্থা করতে না পারায় জমিতে আখের পরিচর্যা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন তারা। সময়মত সার ও সেচ দিতে না পারলে আখের উৎপাদন ব্যহত হবে বলে দাবি তাদের।

এতে করে চিনি উৎপাদনে এর বিরুপ প্রভাব পড়বে বলে অভিমত ব্যক্ত করেন তারা।জানা যায়, প্রায় তিন মাস আগে আখ বিক্রি করলেও নাটোর সুগার মিল এবং নর্থ বেঙ্গল সুগার মিল এই দুই চিনিকলের অনেক আখ চাষীই আখ বিক্রির পাওনা টাকা পাননি। নাটোর সুগার মিল প্রায় ১ লক্ষ ৭০ হাজার মেট্রিক টন আখ ক্রয় করেছে যার মূল্য প্রায় ৫৭ কোটি টাকা। আর মিলের কাছে চাষীদের পাওনা রয়েছে প্রায় ২৬কোটি টাকা। অন্যদিকে লালপুরের নর্থ বেঙ্গল সুগার মিল প্রায় ২লক্ষ ৪৫হাজার মেট্রিক টন আখ করেছে যার মূল্য প্রায় সাড়ে ৮২ কোটি টাকা। ইতোমধ্যে ৪৪কোটি টাকা কৃষকদের পরিশোধ করা হয়েছে। আর মিলের কাছে চাষীদের অবশিষ্ট পাওনা রয়েছে প্রায় ৩৮ কোটি টাকা। এদিকে দেশে অঘোষিত লকডাউন অবস্থার কারণে কবে নাগাদ পাওনা পরিশোধ হবে তার সদুত্তর দিতে পারেননি মিল দুটির উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। এই অবস্থায় দ্রুত পাওনা টাকা পরিশোধের দাবি জানান চাষীরা।

আখচাষী অবনী কুমার রায় ও হাফিজুল ইসলাম বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে জানান, তিন মাস আগে আখ বিক্রি করে এখনও পাওনা টাকা পায়নি। যার কারনে জমিতে সার, সেচের ব্যবস্থা করতে পারছি না। দ্রুত পাওনা টাকা পরিশোধের দাবি জানান তারা।

নাটোর সুগার মিলের জেনারেল ম্যানেজার (কৃষি) রুস্তম আলী বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে জানান, কৃষকদের পাওনা টাকা পরিশোধে মন্ত্রনালয়ে যোগাযোগ অব্যাহত রয়েছে। এছাড়া কৃষকরা যাতে জমিতে সার সেচ দিতে পারে সেজন্য ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

নাটোর নর্থবেঙ্গল সুগার মিলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুল কাদের বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে জানান, চিনি বিক্রিকরে টাকা পরিশোধ করা হয়। লকডাউনের কারণে চিনি বিক্রি করতে না পারায় চাষীদের পাওনা পরিশোধ করা সম্ভব হচ্ছে না।

সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর নাটোর প্রতিনিধি খান মামুন। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.