করোনা নিয়ে নারায়ণগঞ্জ থেকে ফিরে বেরিয়েছেন শ্বশুর ও ভায়রার বাড়ি

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি: গতকাল শনিবার (২ মে) কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরীতে করোনা সনাক্ত রোগী নারায়নগঞ্জ থেকে ফিরে করোনা নিয়ে ঘুড়ে বেরিয়েছেন ভায়রার বাড়ি। সেখানে ছোট্ট একটা অনুষ্ঠানে দাওয়াত খেয়েছেন এলাকার কয়েকজন মিলে। তারপর নিজ বাড়ি থেকে আবার শ্বশুর বাড়ি গেছেন স্ত্রীসহ।
গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় যখন তার ফলাফল আসে তখন তাকে খুঁজে পাচ্ছিলনা পুলিশ পরে খুঁজে বের করে শ্বশুর বাড়ি থেকে।

নেওয়াশী ইউনিয়নের ভাটিয়াটারী এলাকার ওই যুবক স্ত্রীসহ নারায়নগঞ্জে পোশাক কারখানায় কাজ করছিল। সেখান থেকে করোনা উপস্বর্গ নিয়ে বাড়িতে আসলে তাকে পরিবারের লোকজন বাড়িতে প্রবেশ করতে বাঁধা দেয়। পরে যায় পার্শ্ববর্তী একই ইউনিয়নের মোক্তারের কুটি এলাকায় শ্বশুর বাড়িতে। সেখানে তাদের থাকতে না দিলে চলে যায় নাগেশ্বরী পৌর এলাকার মালভাঙ্গা এলাকায় তার ভায়রার বাড়িতে।

ওই বাড়িতে তিনদিন থাকার পর এর ওই বাড়িতে ছোট-খাটো একটা অনুষ্ঠান হয়। যাতে আশপাশের চার থেকে পাঁচজন দাওয়াত খায় ওই যুবকের সাথে। তখনি এলাকাবাসী জানতে পেরে থানা পুলিশকে বিষয়টি জানালে পুলিশ স্বাস্থ্য বিভাগের লোকজনসহ ভায়রার বাড়ি থেকে তাদের স্বামী-স্ত্রীর নমুনা সংগ্রহ করে।

যদিও তখন ঠিকানা বল্লভপুর দেয়া হয়। এদিকে আবার ওইদিন রাতেই তারা স্বামী-স্ত্রী চলে যায় ভাটিয়াটারী যুবকের বাড়িতে। সেখান থেকে আবার শ্বশুরবাড়ি যাওয়া আসা করে।

এদিকে গতকাল শনিবার যখন ওই যুবকের করোনা পজেটিভ ফলাফল আসে। তখন নমুনা সংগ্রহের ঠিকানায় তাকে খুঁজে পায়নি পুলিশ, প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগের লোকজন। পরে খুঁজতে খুঁজতে তার শ্বশুর বাড়িতে তাকে পাওয়া যায়।

অন্যদিকে মালভাঙ্গায় তার ভায়রার বাড়িতে দাওয়াতের অনুষ্ঠানে প্রতিবেশি একজন রিক্সাচালক, কাঁচাবাজারের দোকানী ও মাছ বিক্রেতা উপস্থিত ছিলেন। তারপর থেকে তারা নিয়মিত ব্যবসা করে যাচ্ছেন। এ অবস্থায় খবর পাওয়ার পর থেকে এলাকায় আতঙ্ক বিরাজ করছে।

নাগেশ্বরী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রওশন কবির বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে জানান, ওই যুবকের নমুনা নেয়া হয় বল্লভপুর ঠিকানায়। সেটা নাকি তার ভায়রায় বাড়ি। সেখানে তাকে পাওয়া না গেলে বাড়িতে খোঁজ নেয়া হয়। সেখানে না পেয়ে আমাদের লোকজন তার শ্বশুর বাড়িতে গিয়ে পায়। যদিও এর আগের দুইদিন সে নিজ বাড়িতে থেকে থানায় নিয়মিত খোঁজ নিত; তার ফলাফল এসেছে কিনা।

নাগেশ্বরী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নূর আহম্মেদ মাসুম বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে জানান, খোঁজ নিয়ে দেখা হচ্ছে ওই যুবক যেখানে যেখানে অবস্থান করেছে সব বাড়িতে বাড়িতে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

অন্যদিকে গতকাল শনিবার নাগেশ্বরীর ওই যুবকসহ কুড়িগ্রামে আরও চার জনের শরীরে করোনা সনাক্ত হয়। এদের মধ্যে দুইজন কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার হলোখানা ইউনিয়নের লক্ষীকান্ত গ্রামে। তাদের একজন কুমিল্লা থেকে এসেছেন; অপরজন নারী ঢাকা ফেরত।

এছাড়া আক্রান্ত একজন ফুলবাড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ওয়ার্ডবয় বলে জানা গেছে। গত ১৩ এপ্রিল এ জেলায় প্রথম রোগী সনাক্ত হয়, ২৩ এপ্রিল জেলা লকডাউন ঘোষণা করে জেলা প্রশাসন।

গতকাল শনিবার পর্যন্ত ২২জন সনাক্ত হয়েছে। এদিকে গতকাল শনিবার বিকেলে ফুলবাড়িতে আক্রান্ত যুবক তাজুল ইসলাম সুস্থ হয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে বাড়ি ফিরেছেন। সিভিল সার্জন ডা. হাবিবুর রহমান বিষয়টি বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে নিশ্চিত করেছেন।

সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি মোহাফিজুর রহমান হৃদয়। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.