করোনাকালে তামাক কোম্পানীর কার্যক্রম বন্ধের দাবিতে সামাজিক মাধ্যমে তোলপাড়

এসিডি প্রতিবেদক: প্রাণঘাতী নোবেল করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) মোকাবেলায় দেশব্যাপী চলছে সাধারণ ছুটি। কিন্তু ভয়াবহ এই সময়ে মানব স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর তামাকের বহুজাতিক কোম্পানী ও কারখানাগুলোর কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। এতে দেশে করোনাভাইরাস আরও মহামারী আকার ধারণ করবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

তাই তামাকের বহুজাতিক কোম্পানী ও কারখানাগুলোর কার্যক্রম বন্ধের দাবিসহ বিভিন্ন ইস্যূতে দেশব্যাপী তামাকবিরোধী সংগঠনগুলো সামাাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। এই কার্যক্রমে সাধারণ জনগণের মধ্যে ব্যাপক সাড়াও পড়েছে। তারা অন্ততপক্ষে করোনার এই ভয়াবহ সময়ে তামাকের উতপাদন ও বিপণন বন্ধের দাবিতে অনলাইনে ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টি করেছেন।

আজ রবিবার (২৬ এপ্রিল) দুপুরে দেশের তামাকবিরোধী ৮টি সংস্থা ও সংগঠনের পক্ষ থেকে একযোগে পাঠানো এক প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চালু হওয়া অনলাইন কার্যক্রমে জনগণের মাঝে ব্যাপক সাড়া পড়ার এ বিষয়টি জানানো হয়। প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দেশে তামাকবিরোধী ফেসবুক পেইজ ‘ঞড়নধপপড় ঋৎবব ডব-তামাকমুক্ত আমরা’ এর সহযোগিতায় দেশব্যাপী সরকারের ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) আইন-২০০৫ (সংশোধিত আইন-২০১৩) বাস্তবায়নের লক্ষ্যে দীর্ঘদিন থেকে উন্নয়ন ও মানবাধিকার সংস্থা ‘এ্যাসোসিয়েশন ফর কম্যুনিটি ডেভেলপমেন্ট-এসিডি’সহ ৮টি সংগঠন ও সংস্থার ফেসবুক পেইজে বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে।

তামাকবিরোধী অন্য সংস্থা ও সংগঠন হলো- প্রগতির জন্য জ্ঞান (প্রজ্ঞা), ন্যাশনাল হার্ড ফাউন্ডেশন, ঢাকা আহ্সানিয়া মিশন (ড্যাম), সুশাসনের জন্য প্রচারাভিযান (সূপ্র), ইয়াং পাওয়ার ইন সোশ্যাল একশন (ইপ্সা), বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব থিয়েটার আর্টস (বিটা) এবং তামাক বিরোধী নারী জোট (তাবিনাজ)।

প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে সংগঠন গুলোর পক্ষ থেকে জানানো হয়, বর্তমানে করোনা ভাইরাসের ভয়াবহতা থেকে বাঁচতে দেশে সাধারণ ছুটি অব্যাহত রয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই এমন পরিস্থিতিতে তামাকবিরোধী বিভিন্ন কার্যক্রমে কিছুটা ভাটা পড়েছে। এজন্য সাধারণ ছুটি ঘোষণার পর থেকেই এই ৮টি সংস্থা তাদের নিজস্ব ফেসবুক পেইজে (অনলাইনে) তামাকবিরোধী নানা কার্যক্রম/আন্দোলন পরিচালনা করে আসছে।

এসব আন্দোলনের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো-

১. ক্ষতিকর তামাকপণ্যকে নিত্যপণ্য বিবেচনায় এনে শিল্প মন্ত্রণালয় তামাকের বহুজাতিক কোম্পানী ও কারখানাগুলোর কার্যক্রম অব্যাহত রাখার যে সুযোগ করে দিয়েছে তা অবিলম্বে বন্ধ ঘোষণা করা। সেই সাথে তামাককে নিত্যপণ্যের তালিকা থেকে বাদ দেয়রা দাবি তুলেছেন।

২. করোনাভাইরাস সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ করতে সিগারেট, বিড়ি, জর্দা, গুলসহ সকল তামাকজাত পণ্য বিক্রয়ের উপর সাময়িক নিষেধাজ্ঞা আরোপ; সিগারেট উৎপাদন ও বিপণনে সহযোগিতা করতে শিল্প মন্ত্রণালয়ের দেয়া নির্দেশনা প্রত্যাহার এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের তালিকা থেকে সিগারেটকে বাদ দিতে হাজার হাজার সচেতন নাগরিক প্রধানমন্ত্রীর অনলাইনে একটি পিটিশন দাখিল করছেন।

৩. তামাককে মৃত্যুর কারখানা উল্লেখ করে হাজার হাজার সাধারণ জনগণ তাদের ফেসবুক প্রোফাইলে মৃত্যুর এই কারখানা বন্ধের দাবি সম্বলিত একটি ফ্রেম যুক্ত করেছেন। ৪. করোনা ভাইরাসে ধূমপায়ীরা বেশি আক্রান্ত কিংবা মৃত্যুবরণ করছে বলে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গবেষণা উঠে এসেছে। এজন্য করোনার ভয়াবহতা থেকে ধূমপায়ীদের সতর্ক করতে অনলাইনে বিভিন্ন ধরনের প্রচার কার্যক্রম চালানো হচ্ছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এসব কার্যক্রমে সাধারণ জনগণের ব্যাপক সাড়া সত্যি প্রশংসনীয়। তামাকবিরোধী সংগঠনগুলোর অনলাইন কার্যক্রমে হাজার হাজর সাধারণ জনগণের অধিকাংশ তাদের মতামতে তামাকবিরোধী কার্যক্রমের পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন তামাক কোম্পানি ও কারখানা বন্ধের জোর দাবি তুলেছেন।

বার্তা প্রেরক: আমজাদ হোসেন শিমুল, মিডিয়া ম্যানেজার, এ্যাসোসিয়েশন ফর কম্যুনিটি ডেভেলপমেন্ট-এসিডি। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.