এই ফল’র বীজেই কেল্লাফতে, ভুলেও ফেলে দেবেন না কিন্তু

বিটিসি নিউজ ডেস্ক: এই ফলের বীজ ব্যবহার করা যায় নানা ভাবে। এই ফল খেতে সবাই যে পছন্দ করেন এমনটা নয়, কিন্তু এর বীজকে অবহেলা করলে কিন্তু ভুল করবেন। আম, লিচু নিয়ে অনেক বিলাসিতা থাকলেও কাঁঠাল একটু বঞ্চিতদের দলেই থাকে। এই ফলের গুণাগুণ সম্পর্কে কেউ তেমন ওয়াকিবহাল নয়।

বিশেষ করে এই ফলের বীজের কথা তো অনেকেরই অজানা। অথচ এই বীজেই রয়েছে পুষ্টির সমাহার।

কাঁঠাল খেলেও বীজগুলি বেশীর ভাগ সময়েই ফেলে দেন অনেকে। কিন্তু এ বার থেকে এই ভুল করবেন না যেন। কারণ এই বীজে থাকা জিঙ্ক, লোহা, তামা, পটাসিয়াম, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়ামের প্রাচুর্যের ফলে শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে। এ ছাড়াও রাইবোফ্ল্যাভিন ও থিয়ামিনের উপস্থিতিতে সতেজ থাকবেন আপনি, এমনটাই মত পুষ্টিবিদ সোমা চক্রবর্তীর।

এ ছাড়াও আরও নানা ভাবে এই বীজ ব্যবহার করতে পারেন। যেমন—

# বলিরেখা দূর করতে:

কাঁঠাল বীজ ভিজিয়ে বেটে নিয়ে খানিক ক্ষণ ফ্রিজে রেখে তার পর সেই বাটা চোখের চলায় লাগাতে পারেন। নিয়মিত এই প্রলেপ চোখের তলায় লাগালে ত্বক হবে ঝকঝকে। চোখের নীচে কালিও কমবে, বলিরেখাও দূর হবে।

দুধ আর মধুর সঙ্গে কাঁঠাল বীজ বাটা মিশিয়ে সারা মুখে লাগালে প্রাকৃতিক ফেসিয়ালের কাজ করবে সেই মিশ্রণ। এর পর গরম জলে মুখ ধুয়ে নিলেই দেখবেন চকচক করছে আপনার ত্বক।

# মানসিক চাপ কমায়:

কাঁঠাল বীজ রোদে শুকিয়ে নিয়ে তার পর তাওয়ায় রোস্ট করে খেতে পারেন। এ ছাড়াও তরকারির মতো রান্না করেও খাওয়া যায় এটি। সেদ্ধ করে কাঁচা তেল ও লঙ্কা সহযোগে ভাত বা রুটির সঙ্গেও খেতে পারেন। এটি মানসিক চাপ কমায়, কারণ এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন ও মাইক্রোনিউট্রিয়েন্টস। এটি ত্বককে ভিতর থেকে উজ্জ্বল রাখে, আমেরিকার জার্নাল অব মেডিসিনে প্রকাশিত গবেষণাপত্র বলছে সে কথাই।

# রক্তাল্পতা কমে:

এই বীজে ভরপুর লোহা থাকে, যা হিমোগ্লোবিনের অন্যতম উপাদান। রক্তাল্পতায় আয়রন সমৃদ্ধ ডায়েটের জন্য পুষ্টিবিদরাও কাঁঠাল বীজ খেতে বলেন।

# উজ্জ্বল দৃষ্টি ও ঝলমলে চুল:

কাঁঠাল বীজে রয়েছে ভরপুর ভিটামিন এ। তাই দৃষ্টি স্বচ্ছ রাখতে এবং চুলের গোড়া শক্ত করতে এই বীজ রাখা যেতেই পারে ডায়েটে।

# শরীরে প্রোটিনের ঘাটতি পূরণ:

যাঁরা নিরামিষ খান তাঁদের পক্ষে মাছ-মাংস থেকে প্রোটিন পাওয়া সম্ভব হয়ে ওঠে না। কাঁঠাল বীজ সে ক্ষেত্রে ডায়েটে রাখা অত্যন্ত জরুরী। এটি পেশীর শক্তি বৃদ্ধিতেও সাহায্য করে। নিয়মিত যাঁরা জিমে যান, তাঁদের ডায়েটে এই বীজ রাখতেই হবে।

# হজম ক্ষমতার উন্নতি:

কাঁঠালের বীজ রোদে শুকিয়ে গুঁড়ো করে নিলে সেটি নিয়মিত খেলে গ্যাস-অম্বলের আশঙ্কা কমে। এ ছাড়া কাঁঠাল বীজে প্রিবায়োটিক (যেমন অলিগোস্যাকারাইড নামের শর্করা) থাকে। এগুলি শরীরে ভাল ব্যাকটিরিয়ার পরিমাণ বাড়ায়।

এ ছাড়াও আমেরিকার জার্নাল অব নিউট্রিশনের গবেষণা বলছে, প্লাজমাতে এইচডিএলের পরিমাণ বাড়াতে পারে কাঁঠাল বীজ। এলডিএল, ভিএলডিএল, কোলেস্টেরল, ট্রাই গ্লিসারাইডের পরিমাণ কমাতেও সক্ষম এই বীজের উপাদানগুলি। তাই হার্টের সমস্যার ক্ষেত্রেও ডায়েটে এই বীজ রাখতে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে সম্প্রতি।

# কী ভাবে খাবেন:

রোদে শুকিয়ে রোস্ট করে নুন গোলমরিচ দিয়ে খাওয়া যায়।

রোদে শুকিয়ে নিয়ে তার পর সেদ্ধ করে তেল লঙ্কা দিয়ে মেখে খাওয়া যায়।

আর পাঁচটা সব্জির মতোই তরকারি বানিয়ে খাওয়া যেতে পারে আলুর পরিবর্ত হিসেবে।

যে কোনও ঝোলে ব্যবহার করতে পারেন।

কাঁঠাল বীজ বেটে পায়েসও বানাতে পারেন দুধ দিয়ে। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.