উজিরপুর মুক্ত দিবস পালিত

উজিরপুর প্রতিনিধি: বরিশালের উজিরপুরে নানা কর্মসূচীর মধ্যে দিয়ে উজিরপুর মুক্ত দিবস পালিত হয়েছে। ৫ ডিসেম্বর সোমবার পাক হানাদার মুক্ত দিবস উপলক্ষে উজিরপুর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল কমান্ডের উদ্যোগে এক আলচনা সভা ও দোয়া মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সকাল ১০টায় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল কার্যালয়ে সাবেক কমান্ডার ও সাবেক সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আঃ ওয়াদুদ সরদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলচনা সভায় বক্তব্য রাখেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আঃ মজিদ সিকদার বাচ্চু, উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি এস এম জামাল হোসেন, সাধারণ সাম্পাদক ও পৌর মেয়র মোঃ গিয়াস উদ্দিন বেপারি,উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান অপূর্ব কুমার বাইন রন্টু, সীমা রানী শীল, উপজেলা সমাজ সেবা কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ, জেলা ডেপুটি কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা আনম হাকিম, সাবেক উপজেলা ডেপুটি কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা হারুন অর রশীদ, মুক্তিযোদ্ধা মন্নান হাওলাদার, সেকান্দার আলী হাওলাদার, জাকারিয়া মাষ্টার, আকরাম হোসেন, আব্দুল আউয়াল প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, গোটা দক্ষিনাঞ্চলের মধ্যে সবার আগে উজিরপুর পাক হানাদার মুক্ত হয়। ৫ ডিসেম্বর আমরা স্বাধীন বাংলার স্বাদ গ্রহন করেছিলাম। সেই দিনের আনন্দ আজও ভুলতে পারছিনা। সভা শেষে সকল নিহত বীর মুক্তিযোদ্ধার রুহের মাগফেরাত ও প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার দীর্ঘায়্যু কামনা করে দোয়া মোনাজাত করা হয়েছে।
রনাঙ্গনের বীরমুক্তিযোদ্ধা উপজেলা কমান্ডের সাবেক কমান্ডার আঃ ওয়াদুদ সরদার জানান, ওই সময়ে উজিরপুর থানায় পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর ৫০ থেকে ৬০ জন সেনা ও ১০ থেকে ১১ জন রাজাকার অবস্থান করছিল। ৩০ নভেম্বর গভীর রাত থেকে শতাধিক মুক্তিযোদ্ধা একত্রিত হয়ে থানার চারদিকে ঘেরাও করে রাখা হয়। ৪/৫ দিন উভয় পক্ষের মধ্যে মুর্হুমুহু গোলাগুলি চলে। এক পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধারা তাদেরকে আত্মসমর্পণ করতে বললে তারা
একথা বিশ্বাস না করে আলোচনায় বসার জন্য আহবান জানায়। তখন ৫ ডিসেম্বর সকালে তিনি ওয়াদুদ সরদার ও বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহজাহান যাকে পরবর্তীতে জল্লার শাহজাহান হিসেবে সবাই চেনে। তাকে নিয়ে থানার ভিতরে ঢুকে যান। ওই সময়ে পাকিস্তান আর্মির কমান্ডার একটি কোনআন শরীফ নিয়ে তার উপর হাত রেখে শপথ করতে বলে যে তাদেরকে হত্যা করা হবে না। এক পর্যায়ে হত্যা না করার শর্তে আত্মসমর্পণের সিদ্ধান্ত নেয় তারা।
দুপুরের দিকে সকল মুক্তিযোদ্ধার উপস্থিতিতে তাদের ৫০ থেকে ৬০টি অস্ত্র ও গোলাবারুদ জমা দিয়ে আত্মসমর্পণ করে। তাৎক্ষণিক মুক্তি সেনারা বাংলার পতাকা উড়িয়ে দেন। রাজাকার ও হানাদার বাহিনীর সেনাদেরকে বিভিন্ন এলাকায় ঘুরিয়ে মুক্তিকামী মানুষদেরকে এই জঘন্য সেনাদেরকে দেখানো হয়েছে এবং অনেকেই তাদের মুখে থু থু নিক্ষেপ করেছে।
দেশব্যাপী স্বাধীনতার বিজয়ের পতাকা উত্তোলন করার পরে ওই রাজাকার ও হানাদার সেনাদের বরিশালে অস্ত্রসহ জমা দেয়া হয়। এর মাধ্যমেই উজিরপুরে পাক হানাদার মুক্ত দিবস পালিত হয়।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর উজিরপুর প্রতিনিধি আঃ রহিম সরদার। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.