উজিরপুরে নয়ন হত্যায় আসামীদের গ্রেফতার পূর্বক ফাঁসীর দাবীতে সড়ক অবরোধ, মানব বন্ধন বিক্ষোভ মিছিল করেছে এলাকাবাসী

উজিরপুর প্রতিনিধি:  বরিশালের উজিরপুরে আলোচিত স্কুল ছাত্র ইসরাফিল হাওলাদার নয়ন হত্যার ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতার পূর্বক ফাঁসির দাবীতে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের জয়শ্রী বাসস্ট্যান্ডে ২ ঘন্টাব্যাপী সড়ক অবরোধ, মানব বন্ধন, বিক্ষোভ মিছিল করেছে এলাকাবাসী। এ সময় রাস্তার দুই পাশে শতশত যানবাহন আটকা পড়ে যায়।

১৭ জুন আজ সোমবার নিহতের চাঁচা মাসুম হাওলাদারের সভাপতিত্বে জয়শ্রী বাসস্টান্ডে সহ¯্রাধিক বিক্ষোভকারী সকাল ১০টা থেকে সাড়ে ১২টা পর্যন্ত মানব বন্ধন ও সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ মিছিল করেছে।

উপস্থিত ছিলেন বামরাইল এ.বি. মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, ভরসাকাঠী কে.বি.জি নি¤œ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, নিহতের পরিবার, জয়শ্রী বন্দর ব্যবসায়ী, মুক্তিযোদ্ধা, নিহতের পরিবারসহ সহ¯্রাধিক মানুষ।

এসময় বক্তৃতা করেন মুক্তিযোদ্ধা আয়নাল হক, মোতালেব হাওলাদার, জসিম উদ্দিন, ফারুক বেপারী, মনির সিকদার, নিহতের দাদা খালেক বেপারী, পিতা সোবাহান হাওলাদার প্রমূখ।

উল্লেখ্য:  গত ২৭ এপ্রিল উপজেলার ভরসাকাঠী গ্রামের সোবাহান হাওলাদারের পুত্র বামরাইল এ.বি. মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেণির ছাত্র ইসরাফিল হাওলাদার নয়ন (১৪)কে সহপাঠীরা অপহরণ করে পরিবারের কাছে ১০ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দাবী করে।

মুক্তিপণের টাকা না পেয়ে নয়নকে নির্মম ভাবে কুপিয়ে হত্যা করে বাবুগঞ্জ উপজেলার রমজানকাঠী গ্রামের স্কুল সংলগ্ন সুগন্ধা নদীতে বস্তাবন্ধী করে লাশ ফেলে রাখে।

গত ২৮ এপ্রিল বাবুগঞ্জ থানা পুলিশ নিহত ছাত্রের লাশ উদ্ধার করে বরিশাল মর্গে প্রেরণ করে। এ ঘটনায় বাবুগঞ্জ থানায় একটি অজ্ঞাতনামা মামলা দায়ের করা হয়।

ঐ দিন তাৎক্ষণিক ভাবে থানা পুলিশ একই বাড়ির ওসমান হাওলাদারের পুত্র সহপাঠী আশিক হাওলাদার এবং রমজানকাঠী গ্রামের সাবেক সেনা সদস্য ইদ্রিস হাওলাদারের পুত্র মুমিন হাওলাদারকে গ্রেফতার করে।

কিন্তু আশিক হাওলাদারকে জেল হাজতে প্রেরণ করা হলেও বাবুগঞ্জ থানা পুলিশ মুমিনকে অজ্ঞাত কারণে ছেড়ে দেয়। এ ঘটনায় পরিবার ও এলাকাবাসী ক্ষোভে ফেটে পরে।

মুমিনকে পুলিশ গ্রেফতার করে ছেড়ে দেয়ায় নিহতের পরিবার ও এলাকাবাসী বিভিন্ন আন্দোলন কর্মসূচী পালন করায় ক্ষিপ্ত হয়ে মুমিনের পিতা সাবেক সেনা সদস্য ইদ্রিস হাওলাদার এবং কুদ্দুস হাওলাদার, রাজ্জাক হাওলাদার, নজরুল হাওলাদারসহ অজ্ঞাত কয়েকজন প্রভাবশালী মিলে ৩ জুন নিহত ছাত্র নয়নের পিতা সোবাহান হাওলাদারকে হত্যার উদ্দেশ্যে কুপিয়ে ও পিটিয়ে গুরুতর আহত করে। এতে তার একটি পা ভেঙ্গে যায়।

ঐ ঘটনায় উজিরপুর মডেল থানায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আহত সোবাহানের মাতা রিজিয়া বেগম বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেন। সে মামলায় থানা পুলিশ মুমিনকে আটক করে আবারো অজ্ঞাত কারনে ছেড়ে দেয়।

বিক্ষোভকারীরা এক সপ্তাহের মধ্যে নয়ন হত্যার ঘটনায় জড়িত সেনা সদস্যে’র ২ ছেলে মুমিন হৃদয়সহ অন্যান্য আসামীদের গ্রেফতার পূর্বক ফাঁসির দাবী জানান। অন্যথায় আগামীতে কঠোর আন্দোলনের হুশিয়ারী দেয়।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনের জন্য ওসি শিশির কুমার পাল এক সপ্তাহের মধ্যে জড়িতদের গ্রেফতার করার আশ্বাষ দিলে আন্দোলন কারীরা আপাদত অবরোধ কর্মসুচি প্রত্যাহার করে।

নিহতের পিতা কান্নার কন্ঠে সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করে বলেন। ঐ সন্ত্রাসীরা আমার একমাত্র ছেলেকে হত্যা করেও ক্ষান্ত হয়নী আমাকেও হত্যার জন্য হামলা চালায়।

হামলার ঘটনায় উজিরপুর থানায় মামলা করা হয়েছে কিন্তু মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এস.আই জসিম উদ্দিন আমার কাছ থেকে নগদ ৫ হাজার টাকা নিয়েও কাউকে গ্রেফতার না করে আমাকে ফোন করে বলে আসামী ধরতে আরো টাকা লাগবে।

গাড়ীর তেল খরচের টাকা কি আমার বাবার জমি বিক্রি করে আনব।

সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর উজিরপুর প্রতিনিধি আঃ রহিম সরদার। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.