উজিরপুরে উপবৃত্তির টাকা আত্মসাতের ঘটনায় ফেঁসে যাচ্ছেন প্রধান শিক্ষক

উজিরপুর প্রতিনিধি: বরিশালের উজিরপুরে উপবৃত্তির টাকা আত্মসাতের ঘটনায় ফেঁসে যাচ্ছেন প্রধান শিক্ষক। সংবাদকর্মীরা সরেজমিন গিয়ে গত ১৯ ও ২০ সেপ্টেম্বর বিটিসি নিউজ অনলাইনসহ বিভিন্ন পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ করেছে।
এরপর প্রশাসন নড়ে চড়ে উঠে। ৩ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করে উপজেলা শিক্ষা অফিসার তাছলিমা বেগম। উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার শাহানাজ বেগম শিল্পিকে প্রধান করে সহকারী শিক্ষা অফিসার মোজাম্মেল হক ও নাসির আহম্মেদসহ ৩ জন বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করে ৭ কর্মদিবসের মধ্যে রিপোর্ট জমা দেয়ার নির্দেশ দেন।
এরই প্রেক্ষিতে গতকাল মঙ্গলবার (২৮ সেপ্টেম্বর) সরেজমিন তদন্ত করে রিপোর্ট জমা দিয়েছে তদন্ত কমিটি। প্রধান তদন্তকারী কর্মকর্তা উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার শাহানাজ বেগম শিল্পি জানান, ১১নং হারতা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বঙ্কিম চন্দ্র ঘোষের বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়টি সকল শিক্ষকসহ উপস্থিত সকলের লিখিত সাক্ষরিত অভিযোগ নেয়া হয়েছে এবং তদন্তের বিষয়ে শতভাগ প্রকৃত বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট লিখিত ভাবে জমা দেয়া হবে। অভিযোগের আইনগত ব্যবস্থা নিবেন উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ।
এছাড়াও তদন্তকালীন সময়ে উপস্থিত নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যাক্তি বিটিসি নিউজকে জানিয়েছেন তদন্ত চলাকালীন সময় প্রধান শিক্ষক বঙ্কিম ঘোষ অভিযোগের বিষয়টি মিথ্যা প্রমান করার শত চেষ্টা করেও ব্যর্থ হযেছেন এবং অফিসারদের কোন প্রশ্নের সঠিক জবাব দিতে পারেননি।
আরো জানান, প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ নেই বলে ভ‚ল ব্যাখা দিয়ে স্কুল প্যাড খাতায় ছাত্রীর পিতা সনজিবের নাম ভ‚য়া সাক্ষর করে অফিসারদের কাছে জমা দেন। আসলে ওই কাগজে সনজিব কোন সাক্ষর করেননি। সনজিব সকলের উপস্থিতিতে বলেন তিনি উপবৃত্তির টাকা পায়নি এবং অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক ছাত্রী জয়িতাকে তদন্তকালীন সময়ে স্কুলে হাজির করতে পারেননি। এমনকী স্কুলে ভর্তি হওয়ার সময় ওই ছাত্রীর পিতার কোন সাক্ষর ছিলনা। সাক্ষর জাল করে প্রধান শিক্ষক নামে মাত্র শিক্ষার্থী সাজিয়ে উপবৃত্তির টাকা আত্মসাত করেছে।
উল্লেখ্য, প্রধান শিক্ষক বঙ্কিম চন্দ্র ঘোষ, হারতা গ্রামের সনজিব চন্দ্র শীলের মেয়ে ৫ম শ্রেণির ক্লাসের ছাত্রী জয়িতা শীলের নাম ব্যবহার করে তার ব্যক্তিগত মোবাইল নম্বরে ৩ বার উপবৃত্তির ১৯শত টাকা উত্তোলন করে নিজেই আত্মসাত করেছেন । এদিকে ক্লাসে দেখা যায় জয়িতা নামের কোন শিক্ষার্থী নেই। অন্যান্য শিক্ষক বা শিক্ষার্থীরা জয়িতা নামের কোন ছাত্রীকে কখনো কেউ কোনদিন ক্লাসে উপস্থিত হতে দেখেননি বলে জানান।
তবে তারা বলেন জয়িতা স্বপরিবারকে নিয়ে বরিশাল ভাড়া বাসায় থাকেন। ইতিপূর্বেও ওই প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অন্যান্য শিক্ষার্থীর উপবৃত্তির টাকা আত্মসাতসহ বিভিন্ন দূর্নীতি ও অনিয়মের ব্যাপারে বিভিন্ন মহলে অভিযোগ করেছেন অত্র প্রতিষ্ঠানের সকল শিক্ষক।
অভিযোগটি বিভাগীয় উপ-পরিচালকের টেবিলে জমা রয়েছে। এরই মধ্যে আবারো ভ‚য়া শিক্ষার্থী সাজিয়ে উপবৃত্তির টাকা আত্মসাত করেছেন তিনি।
স্থানীয় একাধিক ব্যাক্তি আরো অভিযোগ করে বলেন স্কুল খোলার পরে মহামারী করোনা মোকাবেলায় সরকারি নির্দেশ মোতাবেক সকল শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানে সাবানসহ জীবানু নাশক সকল উপকরণ ব্যবহার করা বাধ্যতা মূলক করা হয়েছে। তা উপেক্ষা করে প্রধান শিক্ষক বঙ্কিম চন্দ্র ঘোষ জীবানু নাশক খালি বোতলের ছবি মোবাইল ফোনে ধারণ করে উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার নাসির উদ্দিন আহম্মেদের মোবাইল ফোনে পাঠান।
এ নিয়েও ওই প্রধান শিক্ষক এলাকায় তোপের মুখে পড়েছিল। অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক বঙ্কিম চন্দ্র ঘোষের দ্রæত অপসারনের দাবীতে প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সু-দৃষ্টি কামনা করেন হারতাবাসী।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর উজিরপুর প্রতিনিধি আঃ রহিম সরদার। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.