ঈশ্বরদীতে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে ‘নিউক্লিয়ার ডে’ উদ্যাপন

ঈশ্বরদী (পাবনা) প্রতিনিধি: জাতির পিতার শততম জন্মবার্ষিকীতে বঙ্গবন্ধুকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করে ঈশ্বরদীতে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রকল্পে আজ সোমবার (৩০ নভেম্বর) ‘নিউক্লিয়ার ডে’ উদ্যাপিত হয়েছে।
দিবসটির উদ্বোধনকালে প্রধান অতিথি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান বলেন, শেখ হাসিনার হাত ধরে পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র বাস্তবায়নের মধ্য দিযে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন পূরণ হচ্ছে। এই প্রকল্প বাস্তবায়নে মুক্তিযুদ্ধের পরম বন্ধু রাশিয়া সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে এগিয়ে এসেছে।
মন্ত্রী এসময় রাশিয়ান ফেডারেশন ও তাদের জনগণকে অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, এই প্রকল্প বাস্তবায়নে রূপপুরবাসীরও সহযোগীতা রয়েছে। প্রকল্পে কর্মরত আমিসহ সব কর্মী অত্যন্ত সততা ও নিষ্ঠার সাথে কাজ করার কারণে আজ এই প্রকল্প দ্রুততম সময়ে দৃশ্যমান হয়েছে।
করোনা মহামারির কারণে সীমিত পরিসরে দিবসটি উদ্যাপনের আয়োজন করা হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী আরও বলেন, বাঙালির বহু স্বপ্নের মধ্যে পারমাণবিক প্রকল্প অন্যতম। বিদ্যুৎ পাওয়ার ব্যাপার নয়, পারমাণবিক প্রকল্প বাস্তবায়ন বাঙালি জাতিকে আরেকটা উন্নতির সোপানে নিয়ে গেছে।
২০১৭ সালের ৩০ নভেম্বর নির্মাণাধীন রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রকল্পের রিয়েক্টর ভবনের প্রথম কংক্রিট ঢালাইয়ের উদ্বোধন করেন বঙ্গবন্ধু কণ্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ পারমাণবিক বিশ্বে প্রবেশ করে এবং বিশ্ব পারমাণবিক কাবের সদস্য হয়।
বাংলাদেশ এখন বিশ্ব পারমাণবিক কাবের ৩৩তম সদস্য রাষ্ট্র। দিনটির তাৎপর্য স্মরণীয় করে রাখার জন্য প্রতি বছর ‘নিউকিয়ার ডে’ উদযাপিত হচ্ছে। দিবসটি উদযাপন উপলক্ষ্যে নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্ল্যান্ট কোম্পানি বাংলাদেশ লিমিটেড, বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশন এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় যৌথভাবে রূপপুরে সীমিত পরিসরে কর্মসূচির আয়োজন করে।
এসময় প্রকল্প পরিচালক ড. শৌকত আকবর বলেন, বাঙ্গালি জাতির জন্য এটি একটি গর্বের প্রকল্প। এই প্রকল্পের মাধ্যমে বাংলাদেশ উন্নত বিশ্বে পদার্পনের পাসপোর্ট গ্রহণ করেছে। টেকনোলজি বেইজড উন্নত বাংলাদেশ গড়ার যে স্বপ্ন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু দেখেছিলেন, এই প্রকল্প বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে তা পূরণ হচ্ছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একবিংশ শতাব্দির চ্যালেঞ্জ গ্রহন করার কারণেই আজ এই প্রকল্প দৃশ্যমান হয়েছে। তাই আজকের দিনটি জাতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
এসময় রাশিয়ার ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান এটমস্ট্রয় এক্সপোর্টের ভাইস প্রেসিডেন্ট লাস্টেস্কিন সের্গেই, প্রতিষ্ঠানের বাংলাদেশের পরিচালক এল এ টুপিলব, বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের সদস্য (প্রকৌশল) আব্দুস সালাম, বায়রার সদস্য প্রকৌশলী মনিরুল ইসলাম, নিউকিয়ার পাওয়ার প্ল্যান্ট কোম্পানী বাংলাদেশ লিমিটেডের উপদেষ্টা রাবীন্দ্রনাথ রায় চৌধুরী দক্ষিণবঙ্গের পারমাণবিক প্রকল্পের পিডি এ এফ এম মিজানুর রহমান, প্রকল্পের সাইট ডিরেক্টর প্রকৌশলী আশরাফুল ইসলাম, প্রধান প্রশাসনিক কর্মকর্তা অলোক চক্রবর্তি, সাইট ইনচার্জ রুহুল কুদ্দুস প্রমুখ।
দিনব্যাপী কর্মসূচির মধ্যে প্রদর্শনী, আলোচনা, প্রেজেন্টটেশন উপস্থাপনের আয়োজন করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত: রাশিয়ার অত্যাধুনিক প্রযুক্তি, আর্থিকসহ সার্বিক সহযোগিতায় বাংলাদেশের প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র ঈশ্বরদীর রূপপুরে নির্মাণ করা হচ্ছে। রাশিয়ার সর্বাধুনিক সর্বশেষ প্রযুক্তিনির্ভর প্রকল্প নবভরোনেস বিদ্যুৎ কেন্দ্রের রেফারেন্স থার্ড প্লান্ট জেনারেশনের এই রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র। দুই ইউনিট বিশিষ্ট এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রে রাশিয়ার ৩ জি+ প্রজন্মের ভিভিইআর-১২০০ রিয়েক্টর স্থাপন করা হবে।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর ঈশ্বরদী (পাবনা) প্রতিনিধি মো: ময়নুল ইসলাম লাহিড়ী মিন্টু। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.