সাইক্লোন “রেমাল” সর্বোচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে সাতক্ষীরা, খুলনা ও বাগেরহাট

খুলনা ব্যুরো: বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত গভীর নিম্নচাপটি ইতোমধ্যে সাইক্লোন “রেমাল” পরিণত হয়েছে যা সর্বোচ্চ ক্যাটাগরি-১ শক্তিমাত্রার ঝড় হিসেবে ২৬ তারিখ দিবাগত রাত থেকে ২৭ তারিখ সকালের মধ্যেই পশ্চিমবঙ্গের দীঘা থেকে পটুয়াখালীর উপর দিয়ে যেকোন যায়গার উপকূলভাগ অতিক্রম করতে পারে, তবে সর্বোচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে সাতক্ষীরা, খুলনা ও বাগেরহাট।
এই ঝড়ের সর্বোচ্চ শক্তিমাত্রা হতে পারে ক্যাটাগরি-১। এটির গতিবেগ ঘন্টায় ১৩৫ কি.মি. হতে পারে।
বাংলাদেশ ওয়েদার অবজারভেশ টিম এর চীফ ওয়েদার রিসার্চার খালিদ হোসেন ও কো-ফাউন্ডার ওমর খৈয়াম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে একথা জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে আশংকা প্রকাশ করে বলা হয়েছে এটি তার পূর্ণ শক্তিতে উপকূল অতিক্রম করতে পারে, যদিও দমকা বা ঝড়ো বাতাস এর বেগ আরো কিছুটা বেশী থাকতে পারে।
বাংলাদেশে রেমাল সুন্দরবনের উপর দিয়েই ল্যান্ডফলের আশঙ্কা তৈরী হয়েছে সেহেতু এর ডান পার্শ তথা বাগেরহাট এর শরণখোলা থেকে বরিশাল নোয়াখালী এমনকি চট্টগ্রামের অদূরবর্তী দ্বীপসমূহ মারাত্মক ঝুকির মধ্যে থাকবে। এসব এলাকায় ঘন্টায় ৭০ থেকে ১১৫ কি.মি. গতিবেগে বাতাস বয়ে যেতে পারে এবং ৬ থেকে ৮ ফুট জ্বলোচ্ছাসের দ্বারা প্লাবিত হতে পারে। জোয়ারের সময় ল্যান্ডফল হলে জ্বলোচ্ছাসের উচ্চতা কিছুটা বাড়তে পারে। বৃষ্টিপাতঃ সারাদেশেই বৃষ্টিপাত হতে পারে, বর্ষাকালের মত একটানা বৃষ্টিপাতও হতে পারে দেশের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে।
উপকূলীয় এলাকা আক্রান্ত হতে পারে প্রবল বৃষ্টিপাত দ্বারা; পশ্চিমবঙ্গ, খুলনা, বরিশাল এলাকায় কোথাও কোথাও ২০০ থেকে ৫০০ মি.মি. বৃষ্টিপাত পর্যন্ত হতে পারে। এর বাইরে চট্টগ্রাম, ঢাকা, সিলেট, রাজশাহী বিভাগের পূর্বাংশ,ময়নসিংহ এলাকায়ও ভারী বৃষ্টিপাতের আশঙ্কা রয়েছে।
ঘূর্ণিঝড় এর মেঘমালা দেশের উপকূলীয় এলাকায় প্রবেশ শুরু করেছে যা পরবর্তীতে ক্রমান্বয়ে দেশের বাকি এলাকায় বিস্তারলাভ করার প্রবল আশঙ্কা করা যাচ্ছে। বৃষ্টিবলয়ঃ বিডব্লিউওটি সাইক্লোন দ্বারা সংগঠিত বৃষ্টিপাতকে বৃষ্টিবলয় “তুফান” নামকরণ করেছে, যা দ্বারা নিচু এলাকায় জ্বলাবদ্ধতা ও সাময়িক বন্যা পরিস্থিতি সংগঠিত হতে পারে।
এদিকে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়ার ৭ নম্বর বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে পূর্বমধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন পশ্চিমমধ্য বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত গভীর নিম্নচাপটি উত্তরদিকে অগ্রসর হয়ে একই এলাকায় (১৮.২° উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৯.৮° পূর্ব দ্রাঘিমাংশ) অবস্থান করছে।
এটি আজ (২৫ মে) দুপুর ১২ টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৫০০ কি.মি. দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৪৩৫কি.মি. দক্ষিণপশ্চিমে, মোংলা সমুদ্র বন্দর থেকে ৪৭৫ কি.মি. দক্ষিণে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৪২৫ কি.মি. দক্ষিণে অবস্থান করছিল। এটি আরও উত্তর দিকে অগ্রসর ও ঘণীভূত হতে পারে।
গভীর নিম্নচাপের প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর এলাকায় গভীর সঞ্চালনশীল মেঘমালা সৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে। এর প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা এবং সমুদ্র বন্দরসমূহের উপর দিয়ে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। গভীর নিম্নচাপ কেন্দ্রের ৪৮ কি.মি. এর মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৫০ কি.মি., যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ৬০ কি.মি. পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে।
গভীর নিম্নচাপ কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর উত্তাল রয়েছে। চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরসমূহকে ০১ (এক) নম্বর দূরবর্তী সতর্ক সংকেত নামিয়ে তার পরিবর্তে ০৩ (তিন) নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত (পুনঃ) ০৩ (তিন) নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারসমূহকে অতি দ্রুত নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে বলা হলো।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর খুলনা ব্যুরো প্রধান এইচ এম আলাউদ্দিন এবং মাশরুর মুর্শেদ। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.