ইচ্ছেমতো পুকুর খনন বন্ধ করলেন আইসিটি প্রতিমন্ত্রী পলক

নাটোর প্রতিনিধি: আগে যেখানে দেখা যেত, দিগন্ত জোড়া সবুজ ফসলের মাঠ। এখন সেখানে দেখা মেলে শুধু পুকুর, দীঘি আর জলাভূমি। উর্বর তিন ফসলী কৃষি জমি কেটে তৈরি করা হয়েছে বড় বড় পুকুর আর দীঘি।
ফলে চলনবিলসহ পুরো নাটোরে যেমন কমছে কৃষি জমি, তেমনি পুকুর, দীঘি আর জলাশয়ের কারণে ফসলের মাঠে সৃষ্টি হচ্ছে জলাবদ্ধতা। কৃষি বিভাগের মতে, জেলায় নির্বিচারে পুকুর খনন চলতে থাকায় বিভিন্ন ফসল উৎপাদনও মারাÍক ক্ষতি হচ্ছে। পরিবেশ অধিদফতরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, পুকুর খননে ভূমির শ্রেণী বদল হচ্ছে। এতে পরিবেশগত প্রতিক‚লতার আশঙ্কা বাড়ছে।
শস্যভান্ডার খ্যাত নাটোরের সিংড়ায় চলনবিলে অনুমোদন ছাড়াই মাছ চাষের জন্য ফসলি জমিতে ইচ্ছেমতো পুকুর তৈরি করা হচ্ছে। এতে ক্রমেই কমছে চাষের জমি। পাশাপাশি প্রাকৃতিক পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা অকার্যকর হয়ে জলাবদ্ধতা দেখা দেওয়ার আশাংকা করছে।
প্রশাসনের অনুমোদন ছাড়াই জমির শ্রেণী পরিবর্তন করে এক শ্রেণীর দালালচক্র দীর্ঘদিন ধরে এ ব্যবসা করে আসছে। এতে একদিকে যেমন জমির উর্বরতা নষ্ট হচ্ছে। অন্যদিকে এসব মাটি ট্রাক দিয়ে ইটভাটায় নেয়ায় গ্রামীণ কাঁচা-পাকা সড়কগুলো নষ্ট হচ্ছে। গ্রামীন কাঁচা রাস্তা, পাকা সড়ক ব্যবহারের সুনির্দিষ্ট নিতিমালা থাকলেও তা মানা হচ্ছে না। নিতিমালা না মানার জন্য শিশুরা আক্রান্ত হচ্ছে শ্বাসকষ্টে। এলাকার সাধারণ মানুষসহ স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীদের যাতায়াতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
গত সোমবার সন্ধ্যায় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক সিংড়া উপজেলা প্রশাসনকে চলনবিলে ইচ্ছেমতো পুকুর খনন বন্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন। রাতেই উপজেলার হাতিয়ান্দহ ইউনিয়নের চক লাড়ুয়া থেকে দুটি এস্কেভেটরের ব্যাটারী জব্দ করা হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীদের সূত্রে জানা যায় গতকাল মঙ্গলবার দিনভর সিংড়া উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) রাকিবুল ইসলাম পুলিশ নিয়ে বিভিন্ন বিলে গিয়ে পুকুর খনন বন্ধের নির্দেশ দেন।তবে পুকুর খননকারীরা প্রশাসনের লোকজন পৌঁছার আগেই খননযন্ত্র নিয়ে পালিয়ে যাওয়ায় কাউকে আটক করা যায়নি।
সিংড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) সামিরুল ইসলাম জানান, অবৈধভাবে পুকুর খনন বন্ধে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। মাননীয় আইসিটি প্রতিমন্ত্রী কৃষি জমি রক্ষার্থে পুকুর খনন বন্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষণা করেছেন ।নতুন করে কেউ কৃষিজমিতে পুকুর খনন করতে পারবে না।অবৈধভাবে পুকুর খনন বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত এ অভিযান অব্যাহত থাকবে। কোথায় পুকুর খনন চললে উপজেলা প্রশাসনকে (০১৭৬২-৬৯২১১৪) জানানোর জন্য বলেন।
এ বিষয়ে নাটোরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শাহরিয়াজ বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে বলেন, পুকুর খনন বন্ধে তারা জোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন। আর্থিক জরিমানার সাথে কারাদণ্ড ও প্রদান করছেন তারা। জেলায় পুকুর খনন বন্ধে প্রশাসন তৎপর রয়েছে। প্রশাসনের উদ্যোগে ভ্রাম্যমাণ আদালতে জরিমানা করা হচ্ছে। ভবিষ্যতে পুকুর খনন বন্ধে জিরো টলারেন্স নিয়ে আসা সম্ভব। সরকারি নির্দেশ পালনে তারা তৎপর থাকবেন।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর নাটোর প্রতিনিধি খান মামুন। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.