ইউনিয়ন পরিষদ ভবনে যুবকের রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনায় চেয়ারম্যান’সহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা! 

বিশেষ প্রতিনিধি: রাজশাহী’র পবা উপজেলার হরিপুর ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) ভবনের কক্ষ থেকে মোফাজ্জাল হোসেন (৩০) নামে এক যুবকের মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় মামলা করা হয়েছে। গতকাল রোববার (২৯ নভেম্বর) রাত্রে নিহতের ভাই উজ্জ্বল আলী বাদী হয়ে নগরীর দামকুড়া থানায় এ মামলা দায়ের করেন।
মামলায় নিহত মোফাজ্জলের শ্বশুর রফিকুল ইসলাম, হরিপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বজলে রেজবী আল হাসান মুঞ্জিল, নিহতের স্ত্রী রিয়া খাতুন ও শাশুড়ি সুদানা বেগমকে এজাহারনামীয় আসামি করা হয়েছে। এছাড়া আরও ১৫ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে।
দামকুড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাজহারুল ইসলাম বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে বলেও জানান ওসি। নিহত ওই যুবক মোফাজ্জল হোসেন রাজশাহীর তানোর উপজেলার চান্দুড়িয়া ইউনিয়নের জুড়ানপুর গ্রামের ইসরাফিল হোসেনের ছেলে।
এলাকাবাসী সুত্রে জানা যায়, গত ২০ নভেম্বর ভ্যানচালক মোফাজ্জল হোসেন রাজশাহীর হরিপুর ইউনিয়নের খড়িয়ারধার গ্রামের রফিকুল ইসলামের মেয়ে রিয়া খাতুনকে বিয়ে করেন। বিয়ের পর স্ত্রী তার বাবার বাড়ি চলে আসায় তাকে ফিরিয়ে নিতে দু’দিন আগে সে শ্বশুরবাড়ি এসেছিল। শ্বশুরবাড়িতে ঝামেলা হওয়ায় পরে তাকে ইউপি ভবনে আটকে রাখা হয়।
ওসি মাজহারুল ইসলাম বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে বলেন, লেপের ছেঁড়া অংশের কাপড় দিয়ে জানালার সঙ্গে গলায় ফাঁস দেয়া অবস্থায় মোফাজ্জলের মরদেহ পাওয়া গেছে। আগের রাত থেকে ওই কক্ষে তাকে আটকে রাখা হয়েছিল। এটি হত্যা না আত্মাহত্যা তা এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে নিহতের শরীরে কিছু আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তিনি কীভাবে মারা গেছেন তা ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়ার পর নিশ্চিত হওয়া যাবে।
ওসি আরও জানান, গতকাল রোববার সকালে গ্রাম পুলিশ গিয়ে মোফাজ্জলের মরদেহ দেখে চেয়ারম্যানকে খবর দেন। পরে তিনি বিষয়টি থানায় জানান। পুলিশের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করার পর পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগকে (সিআইডি) খবর দেয়া হয়। তারা গিয়ে সুরতহাল তৈরি করার পর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ময়নাতদন্তের পর বিকেলে মোফাজ্জলের মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
এ ব্যাপারে হরিপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বজলে রেজবী আল হাসান মুঞ্জিলের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে বলেন, দুই সপ্তাহ আগে বিয়ে হলেও রফিকুলের মেয়ে শ্বশুরবাড়ি থেকে চলে আসে। মেয়েটি আর সংসার করতে চাচ্ছিল না। দু’দিন আগে মোফাজ্জল স্ত্রীকে নিতে শ্বশুরবাড়ি এসেছিল। শনিবার (২৮ নভেম্বর) সন্ধ্যায় সে স্ত্রীকে মারধর করে। এ সময় মোফাজ্জলকে ধরে মারধর করে আমার কাছে নিয়ে আসা হয়। 
চেয়ারম্যান আরও জানান, গতকাল রোববার দুই পক্ষের লোকজনকে নিয়ে তাদের দাম্পত্য কলহের বিষয়ে মীমাংসায় বসার কথা ছিল। এ জন্য রাতে মোফাজ্জলকে ইউপি ভবনের একটি কক্ষে রাখা হয়। তিনি এও বলেন এর সাথে আমি কোন ভাবেই জড়িত নই আমাকে জড়িয়ে মিথ্যা মামলা করা হয়েছে।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর বিশেষ প্রতিনিধি রুহুল আমীন খন্দকার। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.