ইউক্রেনের বেশ কিছু অংশ কেড়ে নিচ্ছে রাশিয়া

বিটিসি আন্তর্জাতিক ডেস্ক: রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন শুক্রবারই ইউক্রেনের কিছু অংশ রাশিয়ার অন্তর্গত করার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করতে পারেন৷ অধিকৃত এলাকায় ‘গণভোট’ আয়োজন করে সেই প্রক্রিয়া শুরু করে দিয়েছে রাশিয়া৷
গত ফেব্রুয়ারি মাসে ইউক্রেনের উপর হামলা শুরু করার সময় রাশিয়া তিন দিনেই দখলদারির কাজ শেষ হয়ে যাবে বলে আশা করেছিল৷ কিন্তু গোটা দেশজুড়ে হামলা চালিয়েও সাফল্য পায় নি রুশ সেনাবাহিনী৷ শেষ পর্যন্ত লক্ষ্যমাত্রা বদলে ইউক্রেনের পূর্ব ও দক্ষিণে কিছু অঞ্চল দখল করেই সন্তুষ্ট থাকতে হয়৷ এবার ইউক্রেনের বাহিনীর পালটা হামলায় সেখানেও অনেক জমি রাশিয়ার হাতছাড়া হয়ে যাচ্ছে৷
এদিকে তিন লাখ পর্যন্ত রুশ পুরুষকে সেনাবাহিনীতে যোগ দিতে তলব করায় গোটা দেশ জুড়ে প্রতিবাদ বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ছে৷ ফলে মরিয়ে হয়ে কিছু সাফল্য দেখাতে চাইছেন কোণঠাসা রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুটিন৷ ইউক্রেনে অধিকৃত এলাকায় গণভোট নামের প্রহসন চালিয়ে সেই সব এলাকাকে তড়িঘড়ি করে রাশিয়ার ভূখণ্ডের অন্তর্গত করার উদ্যোগ নিচ্ছে তার প্রশাসন৷

এমন অস্বচ্ছ, অবৈধ ও একতরফা পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পাচ্ছে না৷ তবে আগামী শুক্রবার রুশ সংসদের উভয় কক্ষে এক ভাষণে পুতিন ইউক্রেনের কিছু অধিকৃত অঞ্চলকে রাশিয়ার অন্তর্গত করার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করলে নতুন সংকট সৃষ্টি হতে পারে৷ কারণ ইউক্রেনের সেনাবাহিনী সে সব এলাকা পুনরুদ্ধারের চেষ্টা চালালে সেই পদক্ষেপকে রাশিয়ার উপর সরাসরি হামলা হিসেবে তুলে ধরতে পারে পুতিনের প্রশাসন৷
উল্লেখ্য, ২০১৪ সালে ক্রিমিয়া দখল করেও সেই অঞ্চলকে রুশ ভূখণ্ডে অন্তর্গত করেছিলেন পুটিন৷ এবার লুগানস্ক ও দোনেস্ক অঞ্চলকে রুশ ফেডারেশনের অন্তর্ভুক্ত করার আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়া বুধ ও বৃহস্পতিবারের মধ্যেই শেষ হতে পারে বলে অনুমান করা হচ্ছে৷ এমনকি পুতিন শুক্রবার পর্যন্ত অপেক্ষা না করে তার আগেই সেই ঘোষণা করতে পারেন বলে রাশিয়ার কিছু সূত্র মনে করছে৷
অদূর ভবিষ্যতে আরও অধিকৃত এলাকায় এমন গণভোট আয়োজনের ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে৷ এমন সাফল্য ঘোষণা করে পুতিন রাশিয়ার মানুষের বর্তমান ক্ষোভ ও ভয় কমাতে পারবেন কিনা, তা স্পষ্ট নয়৷ সেনাবাহিনীতে যোগ দেওয়ার নির্দেশ এড়াতে দলে দলে পুরুষরা সীমান্তে ভিড় করছেন৷ সরকার এখনো তাদের দেশত্যাগ বন্ধ করতে কোনো পদক্ষেপ না নিলেও এমন নিষেধাজ্ঞা ও সীমান্ত বন্ধ করার জন্য চাপ বাড়ছে৷

ইউক্রেনের শিশু

এমনকি সীমান্তে সামরিক বাহিনীর অস্থায়ী দপ্তর খুলে সেখান থেকেই রুশ পুরুষদের সরাসরি যুদ্ধক্ষেত্রে পাঠানোর উদ্যোগের কথাও শোনা যাচ্ছে৷ পশ্চিমা বিশ্বের সঙ্গে রাশিয়ার সম্পর্কের ক্ষেত্রেও পুতিনের এই সিদ্ধান্তের প্রভাব পড়তে পারে৷
গত কয়েক দিনে পুতিনসহ উচ্চপদস্থ রুশ নেতারা দেশের সুরক্ষার স্বার্থে একাধিকবার পরমাণু অস্ত্র প্রয়োগের হুমকি দিয়েছেন৷ পশ্চিমা মদতপুষ্ট ইউক্রেনের সেনাবাহিনী অধিকৃত এলাকা পুনর্দখলে উল্লেখযোগ্য সাফল্য পাওয়ায় মস্কোয় দুশ্চিন্তা বাড়ছে৷ এবার তথাকথিত রুশ ভূখণ্ডে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়লে পুতিন আত্মরক্ষার অজুহাত দেখিয়ে যে কোনো বেপরোয়া পদক্ষেপ নিতে পারেন, এমন আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না৷ #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.