আবারও মান্দায় বিপুল পরিমাণ নকল বীজসহ গ্রেফতার ৩

 

নওগাঁ প্রতিনিধি: নওগাঁর মান্দায় বিভিন্ন কোম্পানির মোড়কে বাজারজাতকৃত নকল বীজ জব্দ করেছে থানা পুলিশ। ঘটনার সাথে সম্পৃক্ত তিনজনকে আটক করা হয়েছে। রোববার বিকেলে উপজেলার হাজীগোবিন্দপুর গ্রাম থেকে তাদের আটক করা হয়। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন মান্দা সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার হাফিজুল ইসলাম।

এ নিয়ে গত তিনবার উপজেলার তিনটি জায়গা থেকে নকল সার, কীটনাশক ও বীজ কারখানার সন্ধান পাই থানা পুলিশ এবং সেগুলো জব্দও করা হয়। তবে দীর্ঘদিন থেকে বাড়ি ভাড়া নিয়ে কারখানাগুলোতে নকল সার ও বীজ উৎপাদন হওয়ার বিষয়টি নিয়ে জনমনে প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে।

আটককৃতরা হলেন, হাজীগোবিন্দপুর গ্রামের মৃত আফাজ উদ্দিনের ছেলে আলমগীর হোসেন (৪০), মৃত ভুট্টু ওরফে লোকার ছেলে রুবেল হোসেন (৩৫) এবং চকগোপাল গ্রামের মৃত জামাতুল্লার ছেলে আবদুস সামাদ (৬৫)।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, হাজীগোবিন্দপুর গ্রামের আলমগীর ও রুবেলের বাড়ীতে গুদাম ঘর করে মালামাল রাখার জন্য ভাড়া নেয় আটককৃতরা। বাড়ীটি হাজীগোবিন্দপুর বাজার এবং আশপাশে কোন বাড়ীঘর না থাকায় নির্জন প্রকৃতির। আর এ সুযোগে ওই বাড়িতে তারা দীর্ঘদিন থেকে বিভিন্ন নামিদামী কোম্পানির নকল মোড়কে বীজ প্রস্তুত করে বিভিন্ন দোকানে সরবরাহ করত। দোকানীরা বিষয়টি বুঝতে না পেরে গ্রাহকদের কাছে বিক্রি করত। বাড়ীর মালিক এবং এলাকাবাসীরাও জানতেন না ওই বাড়ীতে কি করা হয়।

মান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহবুব আলম বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিত্বে বিকেলে কারখানাটিতে থানা পুলিশ অভিযান পরিচালনা করে। সেখানে ১৭/১৮ টি কোম্পানির মোড়ক নকল করে তারা সেই মোড়কে বিভিন্ন ফসলি বীজ প্যাকেটজাত করত। এসব প্যাকেট জাত বীজ বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করতেন তারা। আর এসব নকল বীজে কৃষকরা প্রতারিত হতেন। ঘটনাস্থল থেকে তিনজনকে আটক করা হয় এবং প্রায় ৫ লাখ টাকার সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে থানায় ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, স্থানীয়রাই এসবের সাথে জড়িত। কারণ তারা না থাকলে দীর্ঘদিন ধরে কোন নকল কারখানা এভাবে চালানো সম্ভব নয়। আর আরেকটি বিষয় হচ্ছে- কৃষি বিভাগকেও এ বিষয়ে সচেতনা বাড়াতো হবে। তবে শিগগিরই ভাড়া বাসা/বাড়িগুলোর তালিকা সংগ্রহ করে নিয়মিত নজরদারি বাড়ানো হবে।

মান্দা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এএফএম গোলাম ফারুক হোসেন বিটিসি নিউজ নওগাঁ প্রতিনিধিকে বলেন, আমাদের ৪২ জন উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আছেন। তাদেরকে ইতোমধ্যে বলে দেয়া হয়েছে তাদের এলাকার মধ্যে যেসব বীজ ও সারের দোকান আছে সেগুলোতে নিয়মিত তদারকি করার জন্য। এছাড়া কোন সন্দেহ হলে আমাকে জাননোর জন্য এবং সেগুলোর স্যাম্পুল (নমুনা) নিয়ে টেস্টে পাঠানো হয়।

তিনি আরো বলেন, বীজ অ্যাক্ট আইনে মন্ত্রনালয়ের অনুমোতি সাপেক্ষে কেউ বীজ উৎপাদন এবং বাজারজাত করতে পারবেন। তবে বীজের মধ্যে সেটার মান লিখা থাকতে হবে। তবে অন্য কোন কোম্পানির মোড়ক কেউ নিজের বলে ব্যবহার করতে পারবেনা।

উল্লেখ, গত ১৫ সেপ্টেম্বর উপজেলার বৈদ্যপুর বাজার থেকে জিংক সার তৈরির উপকরণ, মিক্সার মেশিন, বালু ভর্তি বস্তা, ডায়াজিনন, বাসুডিন, ফুরাডান, ব্রিফার ৫জি, জেডফুরান থিয়োভিট পাউডার, বিভিন্ন নামী দামি কোম্পানির মোড়কে নকল কীটনাশক এবং ০৩ অক্টোবর পরানপুর ইউনিয়নের দক্ষিন পরানপুরে বড় মসজিদের পাশ থেকে প্রায় ১০ লক্ষাধিক টাকার ভেজাল সার ও নকল কীটনাশক উদ্ধার করা হয়।#

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.