আট বছর পর সম্মেলন হলেও সস্প্রতি ফিরেনি, একাংশের কমিটি প্রত্যাখ্যান

 

নাটোর প্রতিনিধি: দলীয় সম্মেলনকে ঘিরে আওয়ামী লীগের বিবাদমান দুইপক্ষের মধ্যে যে-সস্প্রতি তৈরি হয়েছিল, দলীয় সিদ্ধান্তে আনিসুর রহমানকে সভাপতি এবং সভাপতি প্রার্থী আব্দুল মতিনকে সাধারণ সম্পাদক ঘোষণা করায় দুইপক্ষের মধ্যে কোন্দল আবার প্রকাশ্যে এসেছে।
সব জল্পনা কল্পনা ছাপিয়ে গুরুদাসপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে নাম ঘোষণা করা হয়েছে। দীর্ঘ আট বছর পর গত মঙ্গলবার পাইলোট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে অনুষ্ঠিত ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন শেষে গুরুত্বপূর্ণ এই পদ দুটিতে দুই নেতার নাম ঘোষণা করা হয়।
এই সম্মেলনে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি পদে রাখা হয়েছে সদ্য বিলুপ্ত হওয়া কমিটির সভাপতি আইনজীবি আনিসুর রহমানকে। এছাড়া উপজেলার ধারাবারিষা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল মতিনকে সাধারণ সম্পাদক ঘোষণা করা হয়।
দলীয় সম্মেলনকে ঘিরে আওয়ামী লীগের বিবাদমান দুই পক্ষের মধ্যে যে- সস্প্রতি তৈরি হয়েছিল, দলীয় সিদ্ধান্তে আনিসুর রহমানকে সভাপতি এবং সভাপতি প্রার্থী আব্দুল মতিনকে সাধারণ সম্পাদক ঘোষণা করায় দুইপক্ষের মধ্যে কোন্দল আবার প্রকাশ্যে এসেছে।
যদিও ত্রি-বার্ষিক এই সম্মেলনে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তথ্য ও প্রযুক্তি মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম কামাল ও তথ্য-প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী এড. জুনাইদ আহম্মেদ পলকের উপস্থিতিতে প্রস্তাব ও সমর্থক পক্রিয়ার মাধ্যমে সভাপতি-সম্পাদক পদে নাম ঘোষণা করা হয়।
তবে নাম ঘেষাণার পর পরই সদ্য বিলুপ্ত কমিটির সাধারণ সম্পাদক পৌর মেয়র শাহনেওয়াজ আলী তার কর্মী সর্থকদের নিয়ে কমিটি প্রত্যাখ্যান করে মিছিল নিয়ে সমাবেশস্থল ত্যাগ করেন। তিনি সভাপতি পদপ্রার্থী ছিলেন। এরপর মেয়র শাহনেওয়াজ তার বাসভবনে সংবাদ সম্মেলনে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় কমিটি প্রত্যাখ্যান করে কমিটি পূণর্বিবেচনার জন্য দলের উচ্চ পর্যায়ের হস্তক্ষপ কামনা করেন।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সদ্য বিলুপ্ত কমিটির সাধারণ সম্পাদক মেয়র শাহনেওয়াজ আলী বলেন, দুই মেয়াদে প্রায় ১৯ বছর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদেকর দায়িত্ব পালন করেছি। দলীয় প্রতিক নৌকাসহ টানা তিনবার পৌর মেয়র নির্বাচিত হয়েছি।
এছাড়া দলীয় নির্দেশনা মেনেই সব দ্বিধা ভুলে সাংসদ আব্দুল কুদ্দুসের সাথে একাট্টা হয়েছিলাম। কিন্তু তৃণমূল আওয়ামী লীগের আস্থা ভঙ্গ করা হয়েছে। প্রতারণা করে আব্দুল মতিনকে সাধারণ সম্পাদক ঘোষণা করা হয়েছে। অথচ আব্দুল মতিন আওয়ামী লীগের সদস্যই নন।
তিনি বলেন, সংসদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন চাওয়ার কারণেই সাংসদ কুদ্দুসের সাথে তার বিরোধ। আর সেই বিরোধেই তাকে দলীয় পদ থেকে সরানো হয়েছে। তিনি এই পকেট কমিটি প্রত্যাখ্যান করেন।
নব নির্বাচিত কমিটির সাধারণ সম্পাদক ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল মতিন জানান, পদ না পেয়ে অনেকেই কুৎসা রটাচ্ছেন। তিনি মূলত দলীয় প্রতীক নৌকা নিয়ে ২বারসহ টানা তিনবার ইউপি চেয়াম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। একারণে দল আস্থা রেখে তাকে সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দিয়েছে।
এদিকে পুণরায় দলীয় সভাপতি নির্বাচিত হওয়ায় দলের নেতা-কর্মী এবং উচ্চ পর্যায়ের নেতাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান আইনজীবি আনিসুর রহামন। তিনি বলেন, দল আস্থা রেখে তাকে পুণরায় সভাপতি নির্বাচিত করেছে।
তিনি সেই আস্থার প্রতিদান দিতে চান। এছাড়া আগামী ১ মাসের মধ্যে পূণাঙ্গ কমিটি ঘোষণার পর নতুন কমিটির পক্ষ থেকে কর্মসূচি ঘোষণার কথা জানান তিনি। তবে সাবেক সাধারণ সম্পাদেকর কমিটি প্রত্যাখ্যানের ব্যপারে তিনি কোনো মন্তব্য করেননি।
দলীয় সূত্র বলছে- এই ত্রী-বার্ষিক সম্মেলনে সভাপতি পদে সাংসদ সমর্থিত সাবেক সভাপতি আইনজীবি আনসিুর রহমান, ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল মতিন সভাপতি পদপ্রার্থী ছিলেন। তবে মেয়র শাহনেওয়াজ আলী এবং তার সমর্থিত আব্দুল বারীও সভাপতি পদপ্রার্থী ছিলেন।
এছাড়া সাংসদ সমর্থিতদের মধ্যে ইউপি চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হক, মোস্তাফিজুর রহমান, মনিরুল ইসলাম দোলন, হেলাল, শরিফুল ইসলাম, রেজাউল করিম সবুজ ফকির সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী ছিলেন। তছাড়া মেয়র সমর্থিত প্রভাষক আয়নাল হক এবং আব্দুল মান্নানও সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী ছিলেন।
নাটোর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাংসদ আব্দুল কুদ্দুস জানান, দলীয় নির্দেশ মোতাবেক দলের উচ্চ পর্যায়ের নেতারা কমিটি ঘোষণা করেছেন। এখানে তার কিছু করার নেই।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর নাটোর প্রতিনিধি খান মামুন। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.