গাইবান্ধা প্রতিনিধি:শেষ বৈশাখের তীব্র তাপদাহে পুড়ছে পুরো গাইবান্ধা জেলার পলাশবাড়ী উপজেলা। কয়েক দিনের তীব্র গরমে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে উপজেলার জনজীবন।
বিশেষ করে বেশি বিপাকে পড়েছেন খেটে খাওয়া মানুষ গুলো। গরমের তীব্রতায় তৃষ্ণার্ত মানুষ ও প্রাণীকুলে নাভিশ্বাস উঠেছে। চারিদিকে একটু শীতল পরশ লাভের জন্য মানুষের যেন ব্যাকুল প্রচেষ্টা। বতর্মানে সামান্য বৃষ্টি পড়লেও মেঘ ভাঙ্গা রোদে শরীর যেন পোড়া পোড়া ভাব। পাশাপাশি ভ্যাপসা গরম।
এদিকে তীব্র গরমে বাড়ছে নানা রকমের রোগব্যাধি। বিশেষ করে ডায়রিয়া,জ্বর,শ্বাসকষ্টের রোগীর সংখ্যা বেড়েছে আশঙ্কাজনকভাবে। বিশেষজ্ঞরা প্রচুর পরিমাণে বিশুদ্ধ পানি পান করতে পরামর্শ দিলেও কর্মজীবী লোকজন পিপাসা মিটাতে বাধ্য হয়ে ফুটপাতের শরবত,পানি পান করছেন। এতে করে পানিবাহিত অন্যান্য রোগও ছড়াচ্ছে দিন দিন। তীব্র তাপদাহের কারণে মানুষেরা জীবন-জীবিকার তাগিদে ঘর থেকে বের হতে সাহস পাচ্ছেন না।
পৌরশহরের রিকশাচালক খোরশেদ আলি বলেন,বৈশাখের এই তীব্র রোদের কারণে রিকশা চালাতে খুব কষ্ট হচ্ছে। এত গরমে যে রাস্তায় দাঁড়ানো কঠিন হয়ে যাচ্ছে।গরমের কারণে মানুষ কম বের হচ্ছে। ফলে আয়-ইনকাম কমে গেছে।
কৃষি শ্রমিক রুহুল আমিন জানান,এই রোদের ভিতর পাঁচ মিনিট মাঠে কাজ করা যায় না। একদিকে ধানের গরম,অন্যদিকে ভ্যাপসা গরমে মাথা ঘুরিয়ে ওঠে।বাতাসও গরম লাগে।
গূহীনিরা জানান,ঘরে ফ্যানের বাতাসও গরম লাগে। লেপ-তোষক সবেই গরম হয়ে থাকে। আকাশটা গম্ভীর হয়ে থাকে। বাতাস নেই। বাতাস হলেও গরম বাতাস। হাঁস-মুরগি গরমে মরে যাচ্ছে। গরু-ছাগলের পাতলা পায়খানা হচ্ছে। একদিকে ধানের গরম অন্যদিকে তীব্র তাপদাহে কষ্ট বেড়েছে। একটু স্বস্তি পেতে আম মাখা,ঠান্ডা শরবত,ফ্রিজের পানি,আইসক্রীম খেয়ে তৃষ্ণা মেটাতে চেষ্টা করছি।
কৃষকেরা বলছেন,গরমে খড়ের কাজ করতে হিমশিম খাচ্ছি। উপরে সূর্যের তাপ এবং খড়ের গরমে সিদ্ধ হওয়ার উপক্রম। গরমে নাক দিয়ে অনাবরত সর্দি ঝড়তে থাকে,সঙ্গে জ্বর তো থেকেই যায়। বৃষ্টিপাত হলেও আশানুরুপ না হওয়ায় এর প্রভাব পড়তে শুরু করেছে জীববৈচিত্র্যের ওপর।
পৌরশহরের বাসিন্দারা জানান, প্রচন্ড গরমে বাচ্চাদের নিয়ে খুবই সমস্যায় আছি। ঘরের মধ্যে গরমে থাকা যায় না। ছেলে-মেয়েরা জ্বর-সর্দি ও কাশিতে ভুগছে।
স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা জানান, ক্লাশ রুমে বসে থেকেই মনে হয় -গরমে মাথা ঘুরতেছে। ফ্যানের বাতাসে কিছু হয় না। এই গরমে প্রচুর ডিহাইড্রেশন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
ব্যবসায়ীরা জানান, গরমে মানুষজন ঘর থেকে কম বের হচ্ছে। গ্রামের মোড়ে মোড়ে এখন দোকান-পাট হয়েছে,সেখান থেকে মানুষ এখন তাদের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনে জীবিকা নির্বাহ করছেন। আর একারণে আমাদের ব্যবসা -বানিজ্যেয় ধস নেমেছে। আগের তুলনায় বেচা-বিক্রি হচ্ছে না,কমে গেছে।
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.