ঢাকা প্রতিনিধি: কৃষি ও স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, কৃষকদের কথা ভেবে আমরা পেঁয়াজ আমদানি করতে দেইনি। ব্যবসায়ীরা পেঁয়াজ আমদানি করতে সরকারের ওপর চাপ প্রয়োগ করতে বিভিন্ন আদালতেও গেছে, যেন আমরা বিদেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানি করি।
বুধবার (২৬ নভেম্বর) সচিবালয়ে মন্ত্রণালয় সভাকক্ষে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি পর্যালোচনা সভা শেষে সাংবাদিকদের উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।
উপদেষ্টা বলেন, দেশে পেঁয়াজের কোনো সংকট নেই। মাঝখানে পেঁয়াজের দাম ১২০ থেকে ১৩০ টাকা পর্যন্ত হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু এখন সেটা কমে ৯৫ থেকে ১০০ টাকার মধ্যে চলে এসেছে। যেহেতু কৃষকদের হাইফ্লো মেশিন আমরা দিয়েছি, সেহেতু তারা পেঁয়াজ সংরক্ষণ করে রাখতে পেরেছেন। পাশাপাশি, কৃষি মন্ত্রণালয় থেকে নতুন একটি পেঁয়াজও উদ্ভাবন করা হয়েছে। সেই পেঁয়াজটা বাজারে আসা শুরু করেছে। আবার মুড়িকাটা পেঁয়াজটাও আসা শুরু করেছে। এজন্য পেঁয়াজের দাম বাড়ার কোনো সম্ভাবনা নেই যোগ করেন উপদেষ্টা।
তিনি বলেন, কিছু কিছু কুচক্রি থাকেন, যারা পেঁয়াজ আমদানি করতে পাগল হয়ে যান। এ আমদানি করলে কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। কৃষকরা একবার ক্ষতিগ্রস্ত হলে তারা আর পেঁয়াজ চাষের দিকে যাবেন না। এ জন্য আমাদের কৃষকের দিকে তাকাতে হবে সবসময়। কৃষকদের প্রতিবাদ করার ক্ষমতা নেই। তাদের প্রতিবাদের প্রধান মাধ্যম হচ্ছেন আপনারা (সাংবাদিকরা)।
আলু চাষ করে কৃষকরা এবার লাভবান হতে পারেননি বলে দাবি করেন কৃষি উপদেষ্টা বলেন, আলু চাষিরা তেমন দাম পাননি। তবে কিছুটা দাম বেড়েছে। আমি বলব, আলুর দাম আরও বাড়া দরকার। আমরা ভেবেছিলাম, কিছু আলু নষ্ট হয়ে যায় কিনা। এ জন্য আমরা বলেছিলাম, কোল্ড স্টোরেজগুলোকে আমরা বলেছি, নভেম্বরে খালি না করে ডিসেম্বর পার্ন্ত তাদের আলু রাখতে দিতে হবে।
বৃষ্টির কারণে আগাম আলু আসতে দেরি হচ্ছে বলে দাবি করেন জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, তবে আলু চাষি বাদে অন্য যারা এটির সঙ্গে জড়িত, তারা সবাই লাভবান হয়েছেন। কেবল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন কৃষকরা।
উপদেষ্টা বলেন, আপনারা জানেন এবার কিন্তু আমনের ফলন খুবই ভালো হয়েছে। প্রায় ৫০ শতাংশ আমন ধান কিন্তু কাটা শেষ হয়ে গেছে। যদি কোনো রকমের বড় ধরনের কোন সমস্যা না হয় এবার আল্লাহ দিলে আমাদের আমনও বাম্পার হবে। আপনারা জানেন যে এর আগে আমাদের যে বোরো ধান হয়েছিল প্রায় ১৫ লাখ টন। আমাদের ইস্টিমেটের থেকে বেশি হয়েছিল। আমনও এরকম আমাদের এস্টিমেট করা আছে, আশা করছি তার চেয়ে বেশি হবে।
তিনি বলেন, আমাদের পর্যাপ্ত পরিমাণ সার মজুদ আছে। তারপরও কিছু কিছু দুর্নীতিবাজ বিভিন্ন জায়গায় সারের দাম বাড়ায়। এজন্য আমি অলরেডি ইনস্ট্রাকশন দিয়েছি আমাদের অফিসার এটার ক্ষেত্রে পুরো নজরদারি করবে। যে অফিসার নজরদারি করতে ফেল করবে তার বিরুদ্ধে আমরা অ্যাকশন নেবো। কৃষক যেন ন্যায্য মূল্যে সার পায় সেই ব্যবস্থা করব আমরা। কোনো অবস্থায় আমাদের নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে এক পয়সাও যেন বেশি নিতে না পারে।
গ্যাসের দাম বৃদ্ধি নিয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে উপদেষ্টা বলেন, আর আপনারা অনেকে জানেন যে গ্যাসের দাম বাড়ানো হয়েছে। গ্যাসের দামের সঙ্গে সারের দামের কোনো সম্পর্ক নেই। সারের দাম আগে যা ছিল এখনও তা আছে এবং ভবিষ্যতেও তা থাকবে। আমরা অন্তত যতদিন আছি। সারের দাম বাড়ার কোনো সম্ভাবনা নেই।
তিনি বলেন, সবজির দাম এখন নিচের দিকে। আগে বলতেন যে ৭০ টাকার নিচে কোনো সবজি পাওয়া যাচ্ছে না। কিন্তু সবজির দামটা একটু নিচের দিকে। তবে আমরা আবার যতটুক চাই ওটা আমরা এতটুক পাইনি। যেহেতু আমাদের বেতন যতটুক বাড়ে ওই পরিমাণ তো কৃষকের থেকে তো কিছু বাড়তে হবে। আশা করছি সাইক্লোন টাইক্লোন কোসো সমস্যা না হয় তাহলে সবজির ফলনও ভালো হবে৷ সবজির দামও একটা সহনীয় পর্যায়ে থাকবে।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর ঢাকা প্রতিনিধি মো. লিটন চৌধুরী। #

















