নিজস্ব প্রতিবেদক: ২০১৮ সালের নির্বাচনের প্রথম সভা এই ধুরইল ইউনিয়নে হয়েছিলো। সেই সভায় বিপুল পরিমানের জন গন সমবতে হয়েছিলো। এটা দেখে পতিত সরকারের দোসররা এই ইউনিয়নের নেতাকর্মীদের উপরে চড়াও হয় এবং নির্যাতন শুরু করে।
এই ওয়ার্ডের কর্মী সভায় ওয়ার্ড থেকেও সকল নেতাকর্মী ও জনগণ আসায় রোববার মোহনপুরের ধূরইল উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে ১নং ধূরইল ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ড এর ধানের শীষের নির্বাচনী কর্মী সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপি’র জাতীয় নির্বাহী কমিটির ত্রাণ ও পুনর্বাসন বিষয়ক সহ-সম্পাদক ও রাজশাহী মহানগর বিএনপি’র সাবেক সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট শফিকুল হক মিলন ধন্যবাদ জানান।
তিনি বলেন, এ দেশের জনগণ, কৃষক শ্রমিক থেকে শুরু করে সকল শ্রেণী পেশার মানুষ এবং ৫ আগস্টে হাসিনাকে বিতারিত করতে যে ঐক্য গড়ে উঠেছিলো করেছিলো সে ঐক্যটাও ধরে রাখতে হবে। যে আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকার পলায়ন করেছে সেই পতিত সরকার আবারও ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। এই সখক ষড়যন্ত মোকাবেলা করতে হলে ঐক্য ধরে রাখতে হবে। ধানের শীষ কারো একার প্রতিক নয়। এটা সকলের প্রতিক। আগামী নির্বাচন যেন সবাই অংশগ্রহন করতে পারে সে ব্যবস্থা করতে হবে এবং ধানের শীষকে নির্বাচনের মাধ্যমে বিজয়ী করতে সবাইকে ঐক্যবন্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি। কারন তারেক রহমানের একটাই নির্দেশনা ঐক্য প্রতিষ্ঠা করা।
মিলন বলেন, ৫আগস্টের আগে সবাই মনে করেছিলো দেশে আগামীতে কি অবস্থা হবে। ২০২৪ সালে আবারও ক্ষমতায় চলে আসলো, সবাই শঙ্কায় ছিলো। বিএনপি, অঙ্গ ও সহযোগির নেতাকর্মীরা জেলে থাকলেও যারা ধানের শীষের তথা বিএনপি, অঙ্গ ও সহযোগি সংগঠনের নেতাকর্মী, তারা হচ্ছে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের আদর্শের সৈনিক। ফ্যাসিস্টরা মনে করেছিলো এই কয়জনকে কারাগারে রাখলে কিংবা শেষ করে দিলে বিএনপি শেষ হয়ে যাবে। কোন কারাগারই তাদের আটকে রাখতে পারেনি। তারা সবাই বেড়িয়ে এসে আবারও একত্রিত হয়েছে। তারা যুদ্ধের সৈনিক হিসেবে শেষ কৌশল অবলম্বন করে যুদ্ধ করে গেছেন বলে উল্লেখ করেন তিনি।
তিনি বলেন, মোহনপুর সহ সারা দেশের মানুষ হাসিনার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছে। এখন বিএনপি আবার সুসংগঠিত হয়েছে। এটা গৌরবের বিষয়। মাদার অব ডেমোক্রেসি বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া এতটাই ত্যাগ করেছিলেন যে ১৯৭১ সালে ইতিহাসের রাখাল রাজা শহীদ রাষ্ট্রপতি মেজর জিয়াউর রহমান যখন একজন সাধারণ মেজর হিসেবে দেশের স্বাধীনতার ঘোষনা দিয়েছিলেন। কিন্তু তখন বেগম খালেদা জিয়ার জানতেন না। সে সমেয় জিয়াউর রহমান বেগম জিয়া ও তার পরিবারের কথা ভাবেননি তিনি। তিনি স্বাধীনতার ঘোসনা দিয়ে উর্ধ্বত কর্মকর্তাদের আটক করে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীদের অস্ত্র ও গোলাবারুদ নিজের নিয়ন্ত্রনে নিয়ে ি যুদ্ধ শুরু করেছিলেন।
মিলন বলেন, বাংলাদেশের লাল সবুজের পতাকা পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর নিকট থেকে ছিনিয়ে নিয়ে এসেছিলেন। আর বেগম খালেদা জিয়া চট্টগ্রাম থেকে অনেক কৌশল করে গোপনে পালিয়ে ঢাকায় এসেছিলেন। কিন্তু তাঁর শেষ রক্ষা হয়েছিলো না। পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর হাতে তিনি আটক হয়েছিলেন। এজন্য বেগম জিয়াও একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা বলে জানান তিনি। বাংলাদেশ স্বাধীনতায় তাঁর ভূমিকা কোনভাবেই অস্বীকার করার নেই। এরপর স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে ১৯৭২ থেকে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত রাজনীতে আওয়ামী লীগ যখন ফেল করেছে, ঠিক তনই তাদেরই লোক ১৫ আগস্ট ঘটিয়েছে। সে সময়ে দেশের স্বার্থে জিয়াউর রহমানকে ৭ নভেম্বরে সিপাহী জনতা আন্দোলন করে ক্যান্টনমেন্ট থেকে বের করে নিয়ে এসে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় বসান। প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান যেমন জোর ক্ষতায় বসেননি তেমনি ড. ইউনুসও জোর করে ক্ষমতায় বসেননি। তাঁকে জনগণ বসিয়েছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
তিনি বলেন, মেজর জিয়াউর রহমান বেশীদিন দেশ সেবার সুযোগ পাননি। তিনি দেশের রাষ্ট্রনীতি, পররাষ্ট্রনীতি ও মূলনীতির কারনে দেশের মানুষের ভালবাসার পাত্রে পরিণত হয়েছিলেন। তাঁর এই জনপ্রিয়তা দেখে ষড়যন্ত্রকালী ঈর্ষান্বীত হয়ে তাঁকে হত্যা করা করেছিলো। জিয়াকে হত্যার পর বেগম জিয়া রাস্তায় নেমে আন্দোলন করে আপষহীন নেত্রী হয়েছেন। আর আওয়ামী লীগ তথা শেখ হাসিনা ১৯৮৬ সালে সাবেক প্রেসিডেন্ট হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ এর সাথে নির্বাচন করে জাতীয় বেইমান হয়েছেন, আর একদল এখন যারা পিআর, সংস্কার ও গণভোট নিয়ে মাঠ গরম করার চেষ্টা করছে সেই জামায়াতে ইসলাম জাতীয় মোনাফেক এর পরিণত হয়েছেন বলে উল্লেখ করেন মিলন।
পরবর্তীতে আপষহীন নেত্রীকে দেশের মানুষ ভোট দিয়ে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত করেছিলো। তিনি তিনবার প্রধানমন্ত্রী, দুইবার বিরোধী দলীয় নেত্রী হয়েছিলেন। ২৩টি আসনে নির্বাচন করে সকল স্থানেই নির্বাচিত হয়েছিলেন। এবারও তিনি তিনটি সংসদীয় আসনে নির্বাচন করছেন। আর তারেক রহমান বগুড়ার একটি আসন থেকে নির্বাচন করছেন। সেই তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে ওয়ান-ইলেভেনের সময় কারাগারে রেখেছিলো। তাঁকে তার সন্তানদের নিয়ে দেশ থেকে চলে যেতে বলেছিলো সেই সরকার। কিন্তু দেশের ও দেশের জনগণের কথা চিন্তা করে ও ভালবেসে তিনি দেশ ছাড়েননি।
জীবনবাজী রেখে তিনি এখনো দেশে আছেন। সে সসময়ে তাঁর দুই সন্তান তারেক রহমান ও আরাফাত রহমান কোকোকে আটক করে অমানবিকভাবে নির্যাতন করেছিলো। এরপর তারা চিকিৎসার জন্য বিদেশে গেলেও আরাফাত রহমান কোকো আর জীবিত দেশে ফিরতে পারেনি। তিনি বিদেশের মাটিতে মৃত্যুবরণ করেন। আর তারেক রহমান এখনো লন্ডনে আছেন। দ্রুত সময়ের মধ্যে তিনি দেশে ফিরবেন উল্লেখ করে আসছে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ধানের শীষের পক্ষে কাজ করা এবং বেহেস্তের টিকিট বিক্রির নামে যেন মোনাফেকরা কোন ষড়যন্ত্র ও জনগণকে ধোকা দিতে না পারে সেদিকে বিশেষ নজর রাখার আহ্বান জানান তিনি।
১নং ধূরইল ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ড বিএনপি সভাপতি আবুল কালাম আজাদ (কালিম) এর সভাপতিত্বে সভায় বশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মোহনপুর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও বাকশিমইল ইউ.পি সাবেক চেয়ারম্যান মাহাবুব আর রশিদ, মোহনপুর উপজেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও ধুরইল ইউ.পি সাবেক চেয়ারম্যান কাজিম উদ্দীন সরকার, মোহনপুর উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক বাচ্চু রহমান, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক শাহিন আক্তার শামসুজ্জোহা ১নং ধুরইল ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ইলিয়াস হোসেন, সাধারণ সম্পাদক মুখলেছুর রহমান, সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মান্নান বেলাল, ৪নং ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সোহেল রানা দোলন ও সাংগঠনিক সম্পাদক মাসুদ রানা।
এছাড়াও বিএনপি, অঙ্গ ও সহযোগি সংগঠনের নেতাকর্মীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। #

















