৫শ’ হেক্টর রোপা আমন পানির নিচে, মোরেলগঞ্জে একশ’ হেক্টর সবজি ফসলের ক্ষতির সম্ভাবনা: চাষিরা দিশেহারা

মোরেলগঞ্জ (বাগেরহাট) প্রতিনিধি: সাগরের সৃষ্ট লঘুচাপ ও বৈরি আবহাওয়ায় টানা ৪ দিনের অতি বর্ষনে জলাবদ্ধতায় বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে ৫শ’ হেক্টর রোপা আমন ফসলী জমি পানির নিচে নিমজ্জিত হয়ে পড়েছে। ১০০ হেক্টর সবজি ফসলের ক্ষতির সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। সবজি চাষিরা এখন দিশেহারা। কৃষি দপ্তরের পাঠ পর্যায়ে কর্মকর্তারা পরবর্তী করনীয় বিষয়ে দিচ্ছেন পরামর্শ।

সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, উপজেলার ১৬টি ইউনিয়ন সহ পৌরসভায় টানা বর্ষন ও বৈরি আবহাওয়ার কারনে অতিরিক্ত জোয়ারের পানি প্রবেশ করে নিম্ন অঞ্চল প্লাবিত হয়ে মোরেলগঞ্জ সদর, নিশানবাড়িয়া, বারইখালী, হোগলাবুনিয়া, বহরবুনিয়ারসহ বিভিন্ন ইউনিয়নের গ্রামগুলোতে জলাবদ্ধ সৃষ্টি হয়ে ৫শ’ হেক্টর রোপা আমন ধান এখনও পানির নিচে নিমজ্জিত হয়ে রয়েছে। জলাবদ্ধতা দূর করতে সুইজগেট খুলে পানি অপসারনের জন্য নির্দেশ দিয়েছেন প্রশাসন।
নিশানবাড়িয়া ইউনিয়নের গুলিশাখালী, পিসি বারইখালী গ্রামে ঘেরের চারপাশে উচুঁ জমিতে সবজি চাষে উল্লেখ্যযোগ্য শসা চাষে ব্যাপক ফলন হলেও জলাবদ্ধতায় পানি জমে শসা গাছের গোড়ায় পচন ধরে বিপর্যয় ঘটছে অধিকাংশ ক্ষেতে। কৃষক এখন দিশেহারা। বছরে বিঘায় ৮০ থেকে ১ লাখ টাকা বিক্রি হতো শসায়। এ বছরে জমিতে খরচকৃত টাকা উঠাতে পারবেনা বলে জানিয়েছেন একাধিক ক্ষতিগ্রস্ত চাষিরা।
গুলিশাখালি গ্রামের বিধান চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, ৮ বছর পূর্বে লাইফ ইন্সুরেন্সের চাকুরি ছেড়ে দিয়ে পৈত্রিক ৩৩ শতক জমিতে কৃষিকাজ শুরু করেন। প্রতি বছর এ কৃষি থেকে বিভিন্ন সবজি উৎপাদন করে লাভবান হতেন। শুধুমাত্র শসা সবজিই বিক্রি করতেন ৫০-৬০ হাজার টাকা।
এ বছরে প্রাকৃতিক দুর্যোগে জমির খরজের টাকা ঘরে তুলতে পারবে না। একই গ্রামের লিটন বিশ্বাস, উত্তম বিশ্বাস, মিজানুর রহমানসহ একাধিক কৃষকরা বলেন, অতিরিক্ত জলাবদ্ধতায় এবারে শসা ফসলে লোকশান গুনতে হবে অধিকাংশ চাষিদের।
এ বিষয়ে উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা মো. শহিদুল ইসলাম বিটিসি নিউজকে জানান, নিশানবাড়িয়া ইউনিয়নে সাড়ে ৩শ’ বিঘা জমিতে শসা, মিষ্টি কুমড়া, করলা, বরবটি, সবজি চাষ করেছে ১৫শ’ কৃষক। এর মধ্যে শসা চাষে বাম্পার ফলন হয়েছে দেড় হেক্টর জমিতে। তবে, গুলিশাখালী, পিসি বারইখালী গ্রামে অধিকাংশ জায়গায় জলাবদ্ধতার কারনে আংশিক ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে। চাষিদের পরবর্তী করনীয় বিষয়েও পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
এ সর্ম্পকে উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ আকাশ বৈরাগী জানান, বৈরি আবহাওয়ার কারনে জলাবদ্ধতায় পানির নিচে ৫ শ’ হেক্টর রোপা আমন ফসলী জমিতে ২/১ দিনের মধ্যে পানি নেমে গেলে ক্ষতি পুশিয়ে উঠতে পারবে কৃষক। তবে, সবজি ফসলের চাষিদের জন্য মাঠ পর্যায়ে উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তাদের মাধ্যমে খোঁজ খবর নিয়ে উচুঁ জমিতে পরবর্তীতে বেড ও নালা পদ্ধতিতে ফসল উৎপাদনের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। একই সাথে নিশানবাড়িয়া ইউনিয়নের পানি নিষ্কাশনের জন্য সুইজগেটগুলো খুলে দেওয়ার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর মোরেলগঞ্জ (বাগেরহাট) প্রতিনিধি গনেশ পাল ও এম.পলাশ শরীফ। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.