৪৩ বছরের ব্যক্তি ২২ বছরের মুখ লাগালেন !

বিটিসি নিউজ ডেস্ক :পৃথিবীতে প্রথমবারের মতো এক ব্যক্তির দু’বার মুখমন্ডল প্রতিস্থাপনের অপারেশন করা  হয়েছে। অপারেশনের তিন মাসের মাথায় জেরোম হ্যামন নামের ওই ব্যক্তি বলছেন, তিনি এখন ভালো অনুভব করছেন।

২০১০ সালে তেতাল্লিশ বছর বয়স্ক হ্যামনের মুখমন্ডল প্রথমবার প্রতিস্থাপন করা হয়। দ্বিতীয়টি করা হয় গত বছর।

ভালোভাবেই সফল হয়েছিল প্রথম অপারেশন। কিন্তু ২০১৫ সালে ঠান্ডা লেগে তার সংক্রমণ হবার পর তাকে এন্টিবায়োটিক দেওয়া হয়। তার প্রতিস্থাপিত মুখমন্ডল সেই এন্টিবায়োটিককে গ্রহণ করছিল না, এর ফলে দেখা দেয় জটিলতা।

২০১৬ সালে প্রথম লক্ষণ দেখা দেয়, আর গত বছর নভেম্বরে তার প্রতিস্থাপিত মুখে নেক্রোসিস দেখা দেয়। অর্থাৎ সেই মুখের টিস্যুগুলো মরে যেতে থাকে। ফলে তার সেই মুখটিকে কেটে বাদ দিয়ে বসিয়ে দেওয়া হয়।

শুরু হয় নতুন করে মুখ বসানোর জন্য নতুন আরেকটি মুখের সন্ধান। কিন্তু এমন দাতা পাওয়া যাচ্ছিল না যার মুখমন্ডলকে জেরোমের শরীর `মেনে নেবে`। এই দু`মাস সময় জেরোমকে `মুখমন্ডল-বিহীন অবস্থায়` জর্জ পম্পিডু হাসপাতালে একটি কক্ষে থাকতে হয়।

তখন তার কোন মুখ ছিল না। তিনি কিছু দেখতে পেতেন না, শুনতে পেতেন না বা  কোন কথাও বলতে পারতেন না। এ অবস্থা চলেছে জানুয়ারি মাস পর্যন্ত। সেই মাসেই একজন দাতা পাওয়া যায়, এবং দ্বিতীয় বারের মতো তার মুখমন্ডল প্রতিস্থাপন করা হয়।

মুখমন্ডল প্রতিস্থাপনের অপারেশন হয়েছে দু`বার। পৃথিবীতে এমন একমাত্র ব্যক্তি হচ্ছেন এই জেরোম হ্যামন। এ অপারেশনের আগে বিশেষ চিকিৎসার মাধ্যমে তার রক্ত শোধন করা হয়।

এখন জেরোম হ্যামনের নতুন মুখটি মসৃণ কিন্তু নড়াচড়া করে না। তার মাথার খুলি, চামড়া, এবং চোখমুখ এখনো পুরোপুরি যথাযথ অবস্থানে আসে নি।ফরাসী সংবাদ মাধ্যম তার নাম দিয়েছে `তিন মুখ বিশিষ্ট ব্যক্তি।

তিনি এখনো হাসপাতালে। সেখান থেকেই এক সাক্ষাতকারে তিনি ফরাসী টিভিকে বলেন, তিনি আশাবাদী যে তিনি ভালোভাবেই সেরে উঠবেন। আমি আমার নতুন মুখকে মেনে না নিলে তা একটা ভয়াবহ ব্যাপার হতো। এটা আমার পরিচয়ের প্রশ্ন ।তবে যাই বলুন, আমার ভালো লাগছে, এটাই আমি। আমার বয়স ৪৩। আমার মুখ দাতার বয়েস ছিলো ২২, তাই আমার বয়েসও এখন ২২।

তবে তার মুখে এই অপারেশন হয়েছে তার এই পুরো ব্যাপারটা সহ্য করার যে সাহস, তা অসাধারণ ছিল।

অপারেশনটি করেছেন যে ডাক্তার সেই অধ্যাপক লরাঁ লাঁতিয়েরি বলেন, এখন আমরা জানি যে দু দুবার মুখ প্রতিস্থাপন সম্ভব। এটা এখন আর কোন গবেষণার ব্যাপার নয়।

উত্তর ফ্রান্সেই প্রথম মুখমন্ডল প্রতিস্থাপন অপারেশন হয়েছিল ২০০৫ সালে। এর পর বিশ্বের নানা দেশে প্রায় ৪০টি এমন অপারেশন হয়েছে।#

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.