১২ সদস্যের মেডিক্যাল বোর্ডের পর্যবেক্ষন চলছে চীন ফেরত শিক্ষার্থীর ব্যপারে চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসবে মঙ্গলবার

রংপুর ব্যুরো:  চীন ফেরত আনহুই ইউনিভার্সিটি এন্ড টেকনোলোজির সিভিল বিভাগের শিক্ষার্থী তাশদীদ হোসেনের শরীরে করোনা ভাইরাসের কোন অস্তিত্ব খুজে পাওয়া যায় নি বলে জানিয়েছেন রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিত্সক বোর্ড। এদিকে শনিবার রাতে আইইসিডিআর এর টেকনিশিয়ানরা তার লালা, রক্ত ও ঘামের নমুনা সংগ্রহ করেছেন। আগামী মঙ্গলবার আইইসিডিআর এর রিপোর্টের পর চড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানা যাবে বলে জানিয়েছেন চিকিত্সকরা।

চীন ফেরত শিক্ষার্থী তাশদীদের ব্যাপারে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসাপাতাল গঠিত ১২ সদস্যের মেডিক্যাল বোর্ডের প্রধান মেডিসিন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ডা. অধ্যাপক দেবেন্দ্র নাথ সরকার জানিয়েছেন, হাসাপাতালের আইসুলেশন বিভাগের করোনা ইউনিটে ওই শিক্ষার্থী আমাদের ১২ সদস্যের মেডিক্যাল বোর্ডের বিশেষজ্ঞ চিকিত্সকদের পর্যবেক্ষনে আছেন। এখন তার শরীরে কোন জ্বর, সর্দি, কাশি, কিছুই নেই। আমরা মনে করছি তার শরীরে ওই ধরনের কোন ভাইরাস নেই। তবুও আমরা চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত দিবো মঙ্গলবার। ইতোমধ্যেই আইইডিসিআর নমুনা সংগ্রহ করে নিয়ে গেছে। তারা মঙ্গলবার প্রতিবেদন দিবে। তারপর আমরা এ বিষয়ে চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত দিবো। এ বিষযে আতংকিত না হওয়ার আহবান জানান তিনি।

এদিকে শনিবার রাতে ঢাকা থেকে আইইডিসিআর এর ল্যাবের টেকনিশিয়ার পঙ্কজ দেবনাথের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল রংপুরে আসার পর তার রক্ত, ঘাম ও লালার নমুনা নিয়ে রাতেই ঢাকা ফিরে গেছেন। সেখান থেকে ৪৮ ঘন্টা সময় লাগবে নমুনা পরীক্ষা নিরীক্ষা করতে। সে হিসেবে মঙ্গলবার রিপোর্ট আসার কথা।

আইসুলেশন বিভাগের তত্বাবধায়ক হুমায়ুন কবির নোমান বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে জানান, গঠিত মেডিক্যাল বোর্ডের চিকিত্সকরা সার্বক্ষণিক তার ব্যপারে খোঁজ খবর ও প্রাথমিক শারীরিক পরীক্ষা নিরীক্ষা করছেন। চার সদস্যের নার্স টিম তার দেখভাল করছে।

তাশদীদ হোসেনের পিতা আলতাফ হোসেন জানিয়েছেন, তার পুত্র তাশদীদ হোসেন রংপুর সরকারী পলিটেকনিক্যাল কলেজ থেকে সিভিলে ডিপ্লোমা পাশের পর বিএসসিন ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার জন্য চীনের আনহুই প্রদেশের আনহুই ইউনিভার্সিটি এন্ড টেকনোলোজিতে সিভিলে ভর্তি হয় আড়াই বছর আগে। ষষ্ঠ সেমিস্টার শেষে তাদের ভ্যাকেশন চলছিল। এরই মধ্যে চীনে করোনা ভাইরাস আক্রান্ত হওয়ায় ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল বাংলাদেশী শিক্ষার্থী চলে আসে। আমার ছেলে তার দুই সহপাঠি কুমিল্লা ও চট্রগামের দুইজনসহ ২৯ জানুয়ারী  ঢাকায় শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে রাত বারোটায় নামে। তখন চট্রগামের ছেলেটির জ্বর হওয়ায় সেখান থেকে তাকে কুর্মিটোলা হাসাপাতালে নেয়া হয়। তিনদিন পর তাকে সেখানে থেকে ছেড়ে দেয়া হয়।

আমার ছেলে অপর বন্ধুসহ রাতে হোটেলে থেকে ৩০ জানুয়ারী নীলসাগর ট্রেন যোগে বাড়িতে আসেন। এরপর স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয় থেকে নির্দেশনা পাওয়ার পর নীলফামারী সিভিল সার্জন ও থানা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা আমার বাড়িতে আসেন এবং তার শরীরের খোঁজ খবর রাখতে থাকেন। সে ভালো ছিল। এরই মধ্যে গত বৃহস্পতিবার থেকে আমার ছেলের শ্বাস কস্ট শুরু হয়। সাথে সামান্য জ্বর ছিল। একারণে শনিবার দুপুরে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসাপাতালে নিয়ে আসি। চিকিত্সকরা তাকে করোনা ইউনিটে ভর্তি করায়। আমি আশা করি আমার ছেলের ওই ভাইরাস হয় নি।

রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সহকারী পরিচালক (প্রশাসন) ডা মোকাব্বের হোসেন বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে জানান, শনিবার বেলা ১ টা ৫ মিনিটে আমরা তাশদীদকে আইসুলেশন বিভাগের করোনা ইউনিটে ভর্তি করেছি।  তার শারীরিক কন্ডিশনের বিষয়ে ঢাকা থেকে আইইডিসিআর এর টিম নমুনা সংগ্রহ করে নিয়ে গেছে। মঙ্গলবার রিপোর্ট পাবো বলে আশা করছি।

রংপুর জেলা সিভিল সার্জন রিম্ব কুমার রায় বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে জানান, চীন ফেরত ওই শিক্ষার্থীর শরীরে প্রাথমিকভাবে করোনা ভাইরাস সংক্রান্ত কোন জীবানু পায় নি মেডিকেল বোর্ড। মঙ্গলবারের রিপোর্ট পাওয়ার পর তার শরীরের পরবর্তী কন্ডিশন সম্পর্কে বলা যাবে।

সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর রংপুর ব্যুরো প্রধান সরকার মাজহারুল মান্নান। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.