১২ বছর ধরে সেতু আছে রাস্তা নেই: একাকী দাঁড়িয়ে আছে সেতুটি

জামালপুর প্রতিনিধি: জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার একটি সেতু ১২ বছর ধরে মানুষের কোনও কাজে আসছে না। সংযোগ সড়ক না থাকায় উপজেলার পশ্চিম কাজলাপাড়ার সেতুটি একাকী দাঁড়িয়ে আছে।
এ অবস্থায় দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন চিকাজানী ইউনিয়নের চর ডাকাতিয়াপাড়ার আট হাজারের বেশি মানুষ।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, চিকাজানী ইউনিয়নের খালের ওপর ২০০৮ সালে সেতুটি নির্মাণ করা হয়। এক বছর পরই সেতুর উইং ওয়াল ও এর পাশের মাটি বন্যায় ধসে যায়। এ পর্যন্ত সংস্কার করা হয়নি। ওই ইউনিয়নের মন্ডলবাজার থেকে চর ডাকাতিয়াপাড়া যাওয়ার জন্য রাস্তার ওপর সেতুটি নির্মাণ করা হয়েছিল। এখন সেতু আছে, রাস্তা নেই।
এলাকাবাসী জানান, রাস্তার মাঝে যমুনা নদীর শাখা থাকায় সংযোগ স্থাপনের জন্য সেতুটি নির্মাণ করা হয়েছিল। এতে দুই পাড়ের মানুষের যাতায়াতের সময় কমে আসে। কিন্তু নির্মাণের কিছুদিন পরই দুই পাশের রাস্তার মাটি সরে যেতে থাকে। এরপর বন্যায় রাস্তার মাটি ধসে যায়। এক যুগ ধরে সেতুটি মানুষের কাজে আসছে না। সংস্কার না করায় ওই এলাকার ১৫ হাজার মানুষ নৌকা কিংবা অন্য এলাকা ঘুরে যাতায়াত করে আসছিলেন। সবচেয়ে বেশি সমস্যা পড়তে হয় শিক্ষার্থীদের। যাতায়াতের সমস্যা দীর্ঘদিন অব্যাহত থাকায় বাধ্য হয়ে বসতভিটা ছেড়েছেন অনেকে। অন্যত্র চলে যাওয়ার পরও বর্তমানে সেখানে আট হাজারের বেশি মানুষের বসবাস।
স্থানীয় স্কুলশিক্ষার্থী নাজনীন আক্তার ও সেলিনা বেগম জানান, ‘ছোট থেকেই সেতুটি এমন দেখেই আসছি আমরা। অনেকবার শুনেছি সংস্কার করা হবে। কিন্তু এখন পর্যন্ত সংস্কার করা হয়নি।’
ওই এলাকার দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী লোকমান আলী, সুজারত আলী ও নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী আমজাদ হোসেন জানান, ‘সেতুর দুই পাশে রাস্তা না থাকায় প্রতিদিন নৌকাযোগে আমাদের পারাপার হতে হয়। এখন নৌকা ভাড়া ৫ টাকা দিতে হয়। বন্যার সময় ১০ টাকা নৌকা ভাড়া দিতে হয়।’
পশ্চিম কাজলাপাড়ার বাসিন্দা আনেছা বেগম, গুচ্ছগ্রামের বাসিন্দা হাসমত আলী ও আক্তারুজ্জামান বিটিসি নিউজকে জানান, ‘নদীভাঙনের পর থেকে আমরা এখানে বসবাস শুরু করি। কিন্তু চলাচলের রাস্তা না থাকায় অনেক সমস্যা হচ্ছে। আমাদের উৎপাদিত পণ্য বিক্রি করতে বিপাকে পড়ছি। যার কারণে কম দামে পণ্য বিক্রি করতে বাধ্য হই আমরা। কারণ যাতায়াতের পথ নেই।’
চিকাজানী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মমতাজ উদ্দিন আহমেদ বিটিসি নিউজকে বলেন, ‘আমি নির্বাচিত হওয়ার আগ থেকেই সেতুটি এ অবস্থায় পড়ে আছে। সেতুর কারণে পশ্চিম কাজলাপাড়াসহ গুচ্ছগ্রামের বাসিন্দাদের যাতায়াতের সমস্যা হয়। কয়েকবার সেতু সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছিলাম। কিন্তু সংস্কার করতে পারিনি।’
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী তোফায়েল আহমেদ বিটিসি নিউজকে বলেন, সেতুটি এলজিইডি করেনি। এলজিইডি নির্মিত সেতুর কোনও সমস্যা হলে আমরা দ্রুত সংস্কারের করি। এই সেতু একটি প্রকল্পের আওতায় করা হয়েছিল। তাই আমাদের সংস্কারের সুযোগ নেই। তবে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে সংস্কারের চেষ্টা করবো আমরা।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর জামালপুর প্রতিনিধি আবু সায়েম মোহাম্মদ সা‘-আদাত উল করীম। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.