১০ ডিসেম্বর নয়াপল্টনেই মহাসবাবেশ মির্জা ফখরুল

নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজশাহীতে বিএনপির বিভাগীয় গনসমাবেশে বিএনপির মহা-সচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আগামী ১০ ডিসেম্বর নয়াপল্টনেই সমাবেশ করবে বিএনপি। এখানে অনেকবার সমাবেশ করেছে বিএনপি। এখন কেন বাধা দেয়া হচ্ছে। আমরা ঐদিন শান্তিপূর্নভাবে সমাবেশ করবো।
বিএনপি সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে বিশ্বাস করেনা। আওয়ামীলীগ বিএনপির দু:স্বপ্নে ভুগছে। তাদের ভয় পাবার কারণ তারা অনেক খারাপ কাজ করে রেখেছে। এখন আবার জঙ্গীবাদের কথা উঠেছে। আবারও এর দোহাই দিয়ে বিরোধী দলের উপর নির্যাতন করতে পারে। তারা নিজেরা বোমা রেখে বিস্ফোরন ঘটায় আর বিএনপির উপর দোষ চাপায়। এত ককটেল কোথা থেকে এলো বাদি নিজেও জানেনা। বিএনপির উপর এত অত্যাচার খুন, গুম, মামলা, মামলা করার পরেও সমাবেশে এত লোক হয় কেন তা নিয়ে সরকার চিন্তিত। তারা আতংকে থাকে এই বুঝি মাটি ফুড়ে বিএনপি এলো। বিএনপির রাজশাহী বিভাগীয় গনসমাবেশে এসব কথা বলেন তিনি।
এছাড়াও মহাসচিব বলেন, সরকার লুটের রাজ্য গড়ে তুলেছে। ২৫ হাজার টাকা ঋণের দায়ে ২৫ জন কৃষক কে জেলে নেওয়া হয়েছে। অথচ বড় বড় ঋণ খেলাপী সব সরকারি দলের লোক তাদের কিছুই হয় না। যারা ব্যাংক খালি করেছে তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়না। এই সরকার গত এগারো বছরে ১৯ লক্ষ কোটি টাকা পাচার করেছে। বিদ্যুতের নামে লুট করেছে হাজার হাজার কোটি টাকা। এই লুটেরাদের বিরুদ্ধে চুপ করে বসে থাকার সময় নাই। আমরা বলতে চাই, অসহায় নিরীহ মানুষদের উপর আর নির্যাতন চালিয়েন না।
আজ খবরের পাতা খুললে খুন,ডাকাতি, নির্যাতনের খবর পাওয়া যায়। যা কিছু আপনারা করেছেন আর বিএনপির উপর দোষ চাপাচ্ছেন। ১৪/১৫ বছর ধরে আমরা নির্যাতিত হচ্ছি। আজ আমাদের আন্দোলন অধিকার ফিরে পাওয়ার আন্দোলন। মেগা উন্নয়নের নামে হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার হয়েছে। আওয়ামীলীগ এখন রাজনৈতিক দল নয় লুটেরা দলে পরিনত হয়েছে। এই সরকার পরিকল্পিতভাবে রাজনীতি ধ্বংস করেছে ভোটের অধিকার হরন করেছে। আমরা তত্ত্ববধায়ক সরকার চায়। তত্ত¡াবধায়ক সরকার বাদে নির্বাচন করতে দেওয়া হবে না। সারা বাংলাদেশে ধানের শীষ গর্জে উঠেছে। প্রতিবাদ সমাবেশ করছে। আর তাতে সরকারের পেটুয়া বাহিনী হিসাবে পুলিশ মাঠে নেমেছে। আপনারা সমাবেশ ঘিরে এ অমানবিক কাজ করেছেন দয়া করে আর এমন অত্যাচার করবেন না। আপনারা প্রজাতন্ত্রেও কর্মচারী। মজলুম জনগণের উপর অত্যাচার করতে পারেন না। তিনি উপস্থিত জনতার উদ্যোশে প্রশ্ন করেন আপনারা কেমন আছেন? উৎপাদিত পণ্যের নার্য্যমূল্য পাচ্ছেন ? বিনামূল্যের সার কোথায়,। ঘরে ঘরে চাকুৃরি কোথায়। এরা প্রতিশ্রুতি দিয়ে কিছুই দিতে পারেনি।
আমাদের অন্দোলন বেগম খালেদা জিয়াকে বা তারেক রহমানকে ক্ষমতায় বসানোর জন্য নয়। আমাদের আন্দোলন জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলন। সর্বদলীয় সরকারের মাধ্যমেই আমরা গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে চায়। আমাদের প্রতিবাদ নিত্যপ্রয়োজণীয় দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধি, খুন,গুম, হমলা, মামলা এবং খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের মুক্তির জন্য আন্দোলন। রাজশাহীকে শেষে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন আপনারা সকল বাধা বিপত্তি উপেক্ষা করে অবর্ননীয় কষ্ট করে তিনদিন ধরে সমাবেশের জন্য সমবেত হয়েছেন।
প্রধান বক্তা বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, বাংলাদেশে হালাল উপার্জন করে কেউ শান্তিতে থাকতে পারছে না। যারা চোর, ঘুষখোর, দুর্নীতিবাজ তারাই শান্তিতে আছে। শেখ সাহেব বলেছেন, চারিদিকে শুধু চোর। সামনে চোর, পিছনে চোর। চাটার দল চেটে খেল। উনি মরে গেছেন কিন্তু আওয়ামীলীগের চোর গুলো বেচে আছে। ফরিমদপুর ছাত্রলীগের একটা জেলা পর্যায়ের নেতা ২ হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করে। তাহলে বড় বড় নেতা এমপি মন্ত্রীদের কি অবস্থা। তারা কত করেছেন। বেগমপাড়া, সুইস ব্যাংক, সেকেন্ড হোমের জন্য লক্ষ কোটি টাকা পাচার করেছে। এই সরকারের লজ্জা শরম নাই। এই সরকার বলে উন্নয়ন করেছে। প্রশ্ন হলো কার উন্নয়ন হয়েছে। জনগণের না আওয়ামীলীগের। আওয়ামীলীগ খেলার কথা বলেন।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সাবেক মন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা ইকবাল হাসান টুকু বলেন, রাজশাহী বিভাগীয় সমাবেশ করতে গিয়ে পুলিশ বাহিনীর তান্ডব দেখেছি। পথে পথে বাধা দেখেছি। আগে থেকে আসা কর্মীদের নাজেহাল করা হয়েছে। আমরা যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছি। কিন্তু আজও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হয়নি। মানুষের মুক্তির জন্য আরেকটি যুদ্ধ করতে হবে। এই যুদ্ধের মাধ্যমে আমরা মানুষের ভোট ও ভাতের অধিকার ফিরিয়ে আনবো। সারা দেশের মানুষের এখন একটি আওয়াজ হটাও হাসিনা বাঁচাও দেশ। জনগনকে রক্তচক্ষু দেখিয়ে লাভ নেই। এদেশে তরুন প্রজম্ম নতুন করে যুদ্ধ শুরু করবে।
মিজানুর রহমান মিনু বলেন, আজ দেশে চারিদিকে হাহাকার। ঘরে ঘরে খাবার নেই। বাচ্চার দুধ নেই। এমনকি ছেলে মেয়ে বিক্রি করে স্বামী স্ত্রী আত্মহত্যা করছে। যারা মানুষের রক্ত চুষে খেয়েছে তাদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে হবে। আগামী দিনের ফয়সালা হবে রাজপথে।
এছাড়াও সমাবেশে রাজশাহী নগর বিএনপির আহবায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা এ্যাড: মো: এরশাদ আলী ঈশার সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান ও ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু। এ্যাড: শিমুল বিশ্বাস, মিজানুর রহমান মিনু, হাবিবুর রহমান হাবিব, আশিফা আশরাফি পাপিয়া আব্দুল মান্নান তালুকদার, রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, গোলাম মোহাম্মদ সিরাজ , সুলতান মাহমুদ টুকু, ইশতিয়াক আহমেদ উলফাৎ, রেজাউল করিম বাদশা, এ্যাড: কবির হোসেন, নাদিম মোস্তফা, মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল, আবু সাঈদ চাঁদ, শাহীন শওকত, শফিকুল হক মিলন, প্রমুখ।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর নিজস্ব প্রতিনিধি জি, এম হাসানই-সালাম (বাবুল) রাজশাহী। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.