হার্মারের ঘূর্ণিতে নাকাল বাংলাদেশ, লড়ছেন কেবল জয়

বিটিসি স্পোর্টস ডেস্ক: দীর্ঘ সাত বছর পর ফিরলেন জাতীয় দলে। আর প্রথম ম্যাচেই সাক্ষর রাখলেন নিজের সামর্থ্যের। বলা হচ্ছে, দক্ষিণ আফ্রিকার ৩৩ বছর বয়সী অফস্পিনার সাইমন হার্মারের কথা। যিনি ২০১৫ সালের পর এবার বাংলাদেশের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে ফিরলেন প্রোটিয়া দলে।
ফেরার ম্যাচে প্রথমে ব্যাট হাতে খেলেছেন ৩৭ রানের অপরাজিত ইনিংস। পরে নিজের মূল কাজ তথা বোলিংয়ে নেমে একাই ধসিয়ে দিয়েছেন বাংলাদেশের ব্যাটিং লাইনআপ। তার ঘূর্ণি জাদুতে নাকাল হয়ে দলীয় একশো রানের আগেই ৪ উইকেট হারিয়ে ফেলেছে বাংলাদেশ দল।
ডারবানের কিংসমিডে দুই ম্যাচ সিরিজের প্রথম টেস্টের দ্বিতীয় দিন শেষে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৪৯ ওভারে ৪ উইকেটে ৯৮ রান। স্বাগতিকদের করা ৩৬৭ রানের চেয়ে ২৬৯ রানে পিছিয়ে মুমিনুল হকের দল। ফলোঅন এড়াতেও করতে হবে আরও ৭০ রান।
স্বাগতিকদের লেজের ধাক্কা সহ্য করে ৩৬৭ রানে অলআউট করার পর দ্বিতীয় সেশনে বাংলাদেশের সামনে বাকি ছিল ১১ ওভার। সেটি নির্বিঘ্নে কাটাতে পারেনি বাংলাদেশ দল, হারায় সাদমান ইসলামের উইকেট। পরে শেষ সেশনে সাজঘরে ফিরেছেন নাজমুল হোসেন শান্ত, মুমিনুল হক ও মুশফিকুর রহিম।
প্রোটিয়া স্পিনারদের বিপক্ষে দাঁতে দাঁত চেপে লড়ছেন তরুণ ওপেনার মাহমুদুল হাসান জয়। ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় ফিফটির আশা জাগিয়ে তিনি অপরাজিত রয়েছেন ১৪১ বলে ৪৪ রান নিয়ে। নাইটওয়াচম্যান হিসেবে নামা তাসকিন আহমেদ ৬ বল খেলে কোনো রান করেননি।
বাংলাদেশের ইনিংসের ১১তম ওভারের তৃতীয় বলে সাইমন হার্মারের নিচু হয়ে যাওয়া ডেলিভারিতে বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফিরে যান ৩৩ বলে ৯ রান করা বাঁহাতি ওপেনার সাদমান। তার উইকেটের সঙ্গে সঙ্গেই দেওয়া হয় চা পানের বিরতি।
মেঘলা আবহাওয়ার মাঝে তৃতীয় সেশনে ব্যাটিংয়ে নেমে অবশ্য শুরু থেকেই আত্মবিশ্বাস নিয়ে খেলছেন শান্ত ও জয়। জুটির শুরুতে কিছু ডেলিভারি হঠাৎ নিচু হওয়া ছাড়া এ দুই ব্যাটারকে তেমন সমস্যায় ফেলতে পারেননি প্রোটিয়া বোলাররা।
সাবলীল ব্যাটিংয়ের প্রদর্শনী করে দুইটি বিশাল ছক্কা হাঁকিয়েছেন শান্ত, পাশাপাশি মেরেছেন দুইটি চারও। তরুণ মাহমুদুল জয়ের ব্যাট থেকে এসেছে তিনটি চারের মার। তবে দারুণভাবেই ঘুরে দাঁড়িয়েছেন হার্মার। পরপর দুই ওভারে ফিরিয়েছেন শান্ত ও মুমিনুলকে।
ইনিংসের ৩৫তম ওভারের প্রথম বলে হার্মারকে দ্বিতীয় ছক্কা মারেন শান্ত। এক ওভার পর ৩৭তম ওভারের প্রথম বলটিতে আচমকা এক টার্নে বোকা বনে যান শান্ত। আউট হওয়ার আগে তার ব্যাট থেকে আসে ৮৭ বলে ৩৮ রানের ইনিংস।
হার্মারের পরের ওভারের তৃতীয় বলে ডিফেন্ড করেছিলেন মুমিনুল হক। বল তার ব্যাটের ভেতরের কানা ছুঁয়ে প্যাডে লেগে জমা পড়ে সিলি পয়েন্টে দাঁড়ানো কেগার পিটারসেনের হাতে। টাইগার অধিনায়ক ৮ বল খেলেও রানের খাতা খুলতে পারেননি।
এরপর আরেক অভিজ্ঞ ব্যাটার মুশফিকুর রহিমেরও বিদায়ঘণ্টা বাজান হার্মার। ইনিংসের ৪৪তম ওভারে তার বিরুদ্ধে কট বিহাইন্ডের সিদ্ধান্ত দেন আম্পায়ার। রিভিউ নিয়ে উইকেট বাঁচান মুশফিক। হার্মারের পরের ওভারে নটআউট দেন আম্পায়ার।
তখন আবার রিভিউ নিয়েই মুশফিককে সাজঘরে পাঠায় দক্ষিণ আফ্রিকা। আউট হওয়ার আগে ১৯ বল খেলে ৭ রান করতে পেরেছেন মুশফিক। সারাদিনে ২০ ওভার বোলিং করে মাত্র ৪২ রান খরচায় ৪ উইকেট নিয়ে আজকের নায়ক হার্মার।
উল্লেখ্য, দলীয় তিনশ হওয়ার আগে দক্ষিণ আফ্রিকার ৮ উইকেট তুলে নিয়ে স্বস্তিতে ছিলো বাংলাদেশ দল। মনে হচ্ছিল, বেশি দূর যেতে পারবে না স্বাগতিক দক্ষিণ আফ্রিকা। কিন্তু লেজের সারির ব্যাটারদের দৃঢ়তায় শেষ দুই উইকেটে আরও ৬৯ রান পেয়েছে তারা।
স্বাগতিকদের শেষ পর্যন্ত ৩৬৭ রানে থামাতে পেরেছে বাংলাদেশ দল। ডানহাতি পেসার সৈয়দ খালেদ আহমেদ নিয়েছেন সর্বোচ্চ ৪ উইকেট। যা দক্ষিণ আফ্রিকায় বাংলাদেশের পেসারদের সেরা বোলিং। অফস্পিনার মেহেদি হাসান মিরাজের শিকার তিন উইকেট। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.