হত্যা না আত্মহত্যা তা নিয়ে চলছে রহস্য নাটোরের নলডাঙ্গায় প্রবাসীর স্ত্রীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার

 

নাটোর প্রতিনিধি : নাটোরের নলডাঙ্গা উপজেলায় শরিফা আক্তার ছবি নামের এক গৃহবধুর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।শনিবার সকালে উপজেলার পিপরুল ছান্দাবাড়ি গ্রামের কাঁচা পাকা আবুল হোসেনের বাড়ির বাথরুমে ওড়না দিয়ে গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় ওই গৃহবধুর মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।নিহত শরিফা আক্তার ছবি (৩৬) নাটোর বড়াইগ্রাম উপজেলার কৈডিমা গ্রামের সিরাজুল ইসলামের মেয়ে ও পিপরুল ছান্দাবাড়ি গ্রামের কাঁচা পাকা আবুল হোসেনের ছেলে প্রবাসী মতিউর রহমান মিন্টনের স্ত্রী।নিহতের স্বজনদের দাবী শরিফা আক্তার ছবিকে শ্বশুড়,শ্বাশুড়ীও ননদ মিলে হত্যার পর বাথ রুমে গলায় ফাঁস দিয়ে ঝুলিয়ে রেখেছে ।

পুলিশ ও নিহতের স্বজনরা জানান,গত ১১ বছর পূর্বে নাটোর বড়াইগ্রাম উপজেলার কৈডিমা গ্রামের সিরাজুল ইসলামের মেয়ে শরিফা আক্তার ছবি সাথে নলডাঙ্গা উপজেলার পিপরুল ছান্দাবাড়ি গ্রামের আবুল হোসেনের ছেলে মতিউর রহমান মিল্টনের সাথে বিয়ে হয়। বিয়ের পর ছবির স্বামী মিল্টন তার চাকুরীর জন্য রিয়াদে পাড়ি জমায়। এর পর তাদের সংসার বেশ ভালোই চলছিল।

পরবর্তিতে প্রতিবছরই প্রায় মিল্টন দেশে বেড়াতে আসতো।গত কয়েকবছর মিল্টন দেশে না আসলে তাদের মধ্যে মোবাইল ফোনে প্রায় ঝগড়া বিবাদ লেগেই থাকতো। এনিয়ে পরিবারের সকলের সাথে শরিফা আক্তার ছবির মাঝে মধ্যেই ঝগড়ার এক পর্যায়ে শ্বশুরবাড়ীর লোকজন তাকে মারধর করতো।ঘটনাটি শরিফা আক্তার ছবি বেশ কয়েকবার তার বাবার বাড়ীর লোকজনকে জানিয়েছে।তারও শরিফা আক্তার ছবির শ্বশুর,শ্বাশুড়ী ও ননদ সহ অন্যান্যদের সাথে কথা বলে মিমাংশা করেছেন।

এভাবেই চলছিল তাদের সংসার।শুক্রবার রাতের খাওয়া শেষে মোবাইল ফোনে কথা বলতে বলতে শরিফা আক্তার ছবি তার শোবার ঘরে চলে যায়।শনিবার সকালে শয়নঘরের বাথরুমের গলায় ওড়না দিয়ে ফাঁস লাগানো অবস্থায় শরিফা আক্তার ছবির মরদেহ ঝুলতে দেখে শ্বশÍড় বাড়ির লোকজন।পরে বিষয়টি পুলিশকে জানালো পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহটি উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য নাটোর সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করে।

নিহত শরিফা আক্তার ছবির ভাই শাহ আলম জানান, তিনি সকালে এলাকাবাসীর মোবাইল ফোনের মাধ্যমে জানতে পেরে বোনের বাড়ীতে আসেন। সেখানে পৌছে তিনি তার বোনের গলায় ওড়না দিয়ে ফাঁস লাগানো ঝুলন্ত মরদেহ দেখতে পায়। তিনি বলেন দীর্ঘ দিন ধরেই তার শ্বশুড়,শ্বাশুড়ী ও ননদ সহ পরিবারের লোকজন তার সাথে খারাপ আচরন করা সহ মারধর করছিল।এবিষয়ে তার স্বামী প্রবাসী মিল্টনকে জানালেও কোন লাভ হয়নি। মিল্টন নিজেও মোবাইল ফোনে তার স্ত্রীকে হুমকি ধামকি দিয়ে আসছিল। তারা বলেন এটা পরিকল্পিত হত্যা।

এদিকে নিহতের শ্বশুড় বাড়ীর লোকজনের দাবী মোবাইল ফোনে কথা বলা শেষে এক পর্যায়ে কোন এক সময় ছবি নিজেই আত্মহত্যা করেছে।এর সাথে তাদের পরিবারের কোন সদস্য জড়িত নয়। তাদের ছেলে বিদেশে বসবাস করে। প্রতিবছরই ছুটি কাটাতে দেশে আসে এবং সেই সময় তাদের সংসার বেশ ভালোই কাটে। কোন রকমের ঝামেলা তাদের সংসারে নেই। তারাও এর সঠিক রহস্য উদঘাটনের দাবী জানান।

ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে নলডাঙ্গা থানার ওসি তদন্ত উজ্জল হোসেন জানান,নিহত গৃহবধুর শরীরে আঘাতের কোন চিহ্ন পাওয়া না গেলেও ঝুলন্ত লাশের পা দুটি বাথরুমের মেঝেতে ঠেকে ছিল।তবে নলডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নুর হোসেন খন্দকার বলেন,এটা হত্যা না আত্মহত্য তা নিশ্চিত হতে মরদেহটি উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য নাটোর মর্গে পাঠানো হয়েছে।এব্যাপারে একটি ইউডি মামলা হলেও নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে কোন লিখিত অভিযোগ হয়নি।#

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.