সোনাইমুড়ীতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ইভটিজারদের উৎপাত

সোনাইমুড়ী (নোয়াখালী) প্রতিনিধি: নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী উপজেলায় দিন দিন বেড়েই চলেছে বখাটেদের দৌরাত্ম্য। প্রতিদিন উপজেলার বিভিন্ন স্কুল-কলেজ পড়ুয়া ছাত্রীরা শিকার হচ্ছে ইভটিজিংয়ের।
ভুক্তভোগী পরিবার ও শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে জানা যায়,সোনাইমুড়ী উপজেলার সোনাইমুড়ী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়,সোনাইমুড়ী সরকারি মডেল উচ্চ বিদ্যালয়, সোনাইমুড়ী সরকারি কলেজ,জয়াগ বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়,বজরা বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়,কাশিপুর উচ্চ বিদ্যালয়,নাটেশ্বর উচ্চ বিদ্যালয়,আমিশ্যাপাড়া কলেজ,কালিকাপুর উচ্চ বিদ্যালয়,সোনাপুর উচ্চ বিদ্যাল আঙ্গিনায়সহ এর আশপাশের বিভিন্ন এলাকায় বেড়ে গেছে ইভটিজিং।
যার ফলে ভোগান্তির শিকার হচ্ছে শিক্ষার্থীরা। আর মানসিক অস্থিরতায় ভুগছে মেয়েদের পরিবার। অভিভাবকরা বলছেন তারা প্রশাসন ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের কাছে এর সুষ্ঠু সমাধানের জন্য আবেদন করেও প্রতিকার পাচ্ছেননা।
সোনাইমুড়ী পৌর শহরের বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও কবি নজরুল স্কুল,মডেল উচ্চ বিদ্যালয়গুলো পাশাপাশি হওয়ায় শিক্ষার্থীদের আনাগোনা একটু বেশি। যার কারণে বখাটেরা স্নান দীঘির পাড়সহ রেল গেইট পর্যন্ত ওই স্থানে বেশি আড্ডা দেয় বলে জানান ভুক্তভোগীরা। এসব ঘটনায় বখাটেদের পরিবারে বিচার দেওয়ার পর ছাত্রীদের পরিবার আরো হয়রানি ও হুমকির মুখে পড়ছেন বলেও জানান ভুক্তভুগীরা।
সোনাইমুড়ী সরকারি মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ শামসুদ্দিন  বিটিসি নিউজকে জানান, উপজেলা ও থানা প্রশাসনকে অবহিত করা হয়েছে। ইভটিজিংয়ের স্থানগুলো চিহ্নিত করে প্রশাসনিক নজরদারি বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
জয়াগ বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের এসএসসি পরিক্ষার্থী ছাত্রীরা বিটিসি নিউজকে বলেন, “স্কুলের পাশে ব্রিজের উপর সবসময় বসে থাকে বখাটেরা। স্কুলের দারোয়ান না থাকায় মাঝেমধ্যে স্কুলের গেইট দিয়ে ভিতরে ঢুকে আমাদের ভিডিও করে বখাটেরা।
তবে সহকারী প্রধান শিক্ষক আইনান মোঃ ইয়াসিন বিটিসি নিউজকে বলেন, এটি এখন একটি সামাজি ব্যাধি। আমাদের কাছে অভিযোগ আসলেই আমরা তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণ করি। অবিভাবকদের আরো সচেতন হতে হবে।
সোনাইমুড়ী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিটিসি নিউজকে জানান, আমি এবং আমার বান্ধবীরা স্কুল যাওয়ার পথে কিছু বখাটে আমাদের পিছু নেয়। কাগজ ছুড়ে মারে এবং গা ঘেঁষে হাটার চেষ্টা করে। সোনাইমুড়ী সরকারি কলেজে শিক্ষার্থী জানান, কলেজ প্রবেশের পথে কিছু বখাটে আমাদের খারাপ উক্তি করে ঐসব কথা শুনতে খুব খারাপ লাগে। বাসায় বলিনা কারণ বাবা-মা চিন্তা করবে।
এদিকে বখাটে ও ইভটিজারদের ব্যাপারে অহরহ অভিযোগ দিলেও সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোন প্রতিকার পাচ্ছেননা বলে জানান অভিবাবকরা।
বখাটেপনার এসব ঘটনায় অনেক অভিভাবকই এখন আতঙ্কিত। কেউ কেউ নিজেই মেয়েকে নিয়ে স্কুলে যাচ্ছেন। আবার কেউবা স্কুলে পাঠানো বন্ধ করে বাসায়ই পড়াচ্ছেন।
খবর নিয়ে জানা যায়, অনেকে অবিভাবকই মেয়েদের এমন হয়রানি সহ্য করতে না পেরে কিশোরী অবস্থায় বাল্যবিবাহ দিতে বাধ্য হচ্ছে। বর্তমানে সরকারী কলেজ রোড, মাদ্রাসা এলাকায় স্কুল কলেজের মেয়েরা বখাটেপনার শিকার হচ্ছে সবচেয়ে বেশি। সচেতন মহল মনে করেন যদি ইভটিজিং বন্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা না নেওয়া হয় তাহলে নিরাপত্তা ঝুঁকিতে এবং মানসিক ভাবে অসুস্থ হয়ে পড়বেন শিক্ষার্থীদরা। শিক্ষার্থীদের দাবি স্কুল-কলেজের সামনে যাতে প্রশাসনিক তৎপরতা বাড়ানো হয়।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর সোনাইমুড়ী (নোয়াখালী) প্রতিনিধি মোরশেদ আলম। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.