সুবর্ণচরে ৭০১ টাকায় ভূমির মালিক হবেন ভূমিহীন পরিবার

নোয়াখালী প্রতিনিধি: সিডিএসপি-বি প্রকল্পভুক্ত এলাকায় উপজেলা কৃষি খাস জমি ব্যবস্থাপনা বন্দোবস্ত কমিটি কর্তৃক ভূমিহীন পরিবার বাছাইয়ের লক্ষ্যে এক শুনানী অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৪ নভেম্বর) দিনব্যাপী নোয়াখালী সুবর্ণচর উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে পূর্বচরবাটা ইউনিয়নের পূর্ব চরমজিদ গ্রামে এ শুনানী অনুষ্ঠিত হয়।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, সুবর্ণচর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) অশোক বিক্রম চাকমা, সিডিএসপি’র জেলা সহকারী উপদেষ্টা ভূমি বন্দোবস্ত কমিটি মো. নুর ইসলাম, উপজেলা ভূমি অফিসের ভারপ্রাপ্ত কানুনগো মো. হযরত আলী, সিডিএসপি’র সার্বেয়ার মো. কামাল উদ্দিনসহ প্রমুখ।
ভূমিহীন ছিদ্দিক আহম্মদ এর ছেলে মো. আবদুল মন্নান বলেন, নদীতে বাড়ি ঘর বিলিন হওয়ায় ২০০১ সালে ভোলা জেলা থেকে এসে এখানকার ভূমিদস্যু থেকে ২ হাজার টাকায় দেড় একর জমি ক্রয় করি। জমি ক্রয় করার পরেও বিভিন্ন বাহিনী ও ভূমিদস্যুর নির্যাতনের স্বীকার হয়েছি। তবুও অসহ্য হয়ে দীর্ঘ ২১ বছর লড়াইয়ের পর এ ভূমিতে এখনো বসবাস করি।
কিন্তু এতো বছর বসবাস করার পরেও নিজের জমি বলে পরিচয় দিতে পারিনি। সিডিএসপি ও উপজেলা প্রশাসনের সহযোগীতায় মাঠ পর্যায়ে জরিপ শেষে বৃহস্পতিবার শুনানী হয়। শুনানী শেষে স্যারের অনুমোদন ক্রমে এ জমির বন্দোবস্ত পাবো। এমন প্রত্যাশায় সকলে খুশিতে মেতে উঠেছি।
আরেক ভূমিহীন আসাদুল হকের ছেলে মো. ফারভেজ বলেন, সন্দ্বীপ থেকে ২০০০ সালে এখানে এসে ৫ হাজার টাকায় দেড় একর জমি ক্রয় করি। তখন এটি ছিলো মরুভূমি। ভালো চলাচলের ব্যবস্থা তেমন ছিলো না। এখন মোটামুটি রাস্তাঘাট,বিদ্যুৎ সহ বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা হয়েছে।
তবে খুব প্রশংসনীয় দালাল মুক্ত ভোগান্তিবিহীন ৭০১ টায় খতিয়ান পাবো। এটি কখনো আশা করিনি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, নোয়াখালী জেলা প্রশাসক ও সুবর্ণচর উপজেলা প্রশাসন এবং সিডিএসপি-ব্রিজিং প্রকল্পসহ সকলকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।
উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) অশোক বিক্রম চাকমা বলেন, অসহায় ভূমিহীন পরিবারকে পুনর্বাসিত করার পরিকল্পনা করেছে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী। তাই নোয়াখালী জেলা প্রশাসক মহোদয়ের নির্দেশনায় সুবর্ণচরে ভূমিহীনদের মাথা গোঁজার ঠাঁই, স্বাবলম্বী ও আত্মকর্মসংস্থানের লক্ষ্যে সরকার এ খাস জমি ভূমিহীনদের মাঝে দীর্ঘমেয়াদী বন্দোবস্তের ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।
তিনি আরো বলেন, উপজেলার পূর্বচরবাটার পূর্ব চরমজিদ গ্রামে বৃহস্পতিবার মাঠ পর্যায়ে নথি তদন্ত করে ভূমিহীন পরিবার বাছাই করে ৪৯ জন ভূমিহীন পরিবারেরর মাঝে শুনানী হয়।
এ সময় শুনানীতে ভূমিহীনদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, এ নথি গুলো ও সকল কাগজপত্র তদন্ত রিপোর্ট নোয়াখালী জেলা প্রশাসক মহোদয়ের নিকট পাঠানো হবে। ডিসি স্যারের অনুমোদনক্রমে তখন বন্দোবস্ত হবে। এর পর আপনাদের সকলকে জমি রেজিষ্ট্রেশনের জন্য ডাকা হবে। জমি রেজিষ্ট্রেশন শেষে খতিয়ান দেওয়া হবে।
এর মধ্যে বন্দোবস্ত প্রধান কার্যক্রম সরকারি ফি ৭০১ টাকা নেওয়া হবে। এর থেকে ১ টাকাও কেউ কাউকে দিবেন না। আমাদের উপস্থিতিতে জমি রেজিষ্ট্রেশনের সময় ৭০১ টাকা নেওয়া হবে। রেজিষ্ট্রেশন শেষে আপনাদেরকে আমরা খতিয়ান করে দিবো। এ সকল ভূমিহীন পরিবারের মাঝে এমন আশ্বাস প্রদান করেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) অশোক বিক্রম চাকমা।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর নোয়াখালী প্রতিনিধি ইব্রাহিম খলিল (শিমুল)। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.