সুবর্ণচরে ভূয়া এমবিবিএস রেজাউলকে অনিয়মে হাতেনাতে ধরলেন জেলা সিভিল সার্জন

নোয়াখালী প্রতিনিধি: নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অধীনস্থ চরবাটা সেন্টার বাজার উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রের ফার্মাসিস্ট মো. রেজাউলকে ডিউটি চলাকালীন সময়ে স্বাস্থ্য কেন্দ্রে না পেয়ে তার ব্যক্তিগত চেম্বারে রোগী দেখার সময় হাতেনাতে ধরে তুলে নিয়ে যান জেলা সিভিল সার্জন ডা. মো. মাসুম ইফতেখার।
গত রবিবার দুপুর ১২টায় সুবর্ণচর উপজেলার চরজব্বর থানার মোড়ে সংবাদকর্মী মুজাহিদুল ইসলাম সোহেল তার বড় ভাই রয়েলের মালিকানাধীন ফার্মেসীতে চেম্বার করার সময় চেম্বার থেকে তাকে তুলে নেন সিভিল সার্জন।
সিভিল সার্জন ড. মাসুম ইফতেখার ঘটনার সত্যতা বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে নিশ্চিত করে বলেন, গত রবিবার সকালে সেন্টার বাজার উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রের ফার্মাসিস্ট মো. রেজাউল তার ব্যক্তিগত চেম্বারে রোগী দেখছেন এমন অভিযোগ পেয়ে তার কর্মস্থলে গিয়ে তাকে পাওয়া যায়নি।
পরে দুপুর ১২টার দিকে উপজেলা চত্বর এলাকায় তার ব্যক্তিগত চেম্বারে অভিযান পরিচালনা করলে দেখা যায় রেজাউল সেখানে ২০-২৫ জন রোগীকে সিরিয়ালে রেখে তাদের চিকিৎসাপত্র দিচ্ছেন। এসময় কর্মক্ষেত্রে অনুপস্থিত থাকার অপরাধে তাকে চেম্বার থেকে তুলে সিভিল সার্জন কার্যালয়ে নিয়ে আসা হয়।
সিভিল সার্জন ড. মাসুম ইফতেখার আরো জানান, এর আগেও রেজাউলের বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের অভিযোগ পেয়ে তাকে সুবর্ণচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে কবিরহাট উপজেলার চরআলগী হাসপাতালে বদলি করা হয়। সেখান থেকে তাকে বদলী করা হয় সেন্টার বাজার উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রে। এখন অনিয়মের শাস্তি স্বরুপ তাকে প্রাথমিকভাবে সেন্টার বাজার উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্র থেকে বদলী করা হয়েছে ভাসানচরে। পরবর্তীতে তদন্ত করে তার বিরুদ্ধে প্রশাসনিকভাবে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক কর্মচারী ও স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে, সুবর্ণচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিসিন বিক্রেতা রুহুল আমিন ও হারবাল মেডিসিন বিক্রেতা মিজানুর রহমানের যোগসাজশে মোঃ রেজাউল চেম্বারে বেশী রোগী দেখে। এভাবে কর্মস্থলে অনুপস্থিতসহ নানা অনিয়ম করে যাচ্ছে মোঃ রেজাউল। রেজাউলের অপচিকিৎসায় সুবর্ণচরের একাধিক রোগী নানা সময়ে হুমকির মুখে পড়ে হাজার হাজার আর্থিক ও শারিরিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
রেজাউলসহ অনিয়মে জড়িত এসব ব্যক্তির বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করেন ভুক্তভোগী রুগিরা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তি জানান,রেজাউলকে এমবিবিএস ডাক্তার হিসেবে পরিচয় দিয়ে একটি চক্র দীর্ঘ দিন সুবর্ণচর ও হাতিয়া উপজেলাতে কোন রকম শিক্ষাগত যোগ্যতা, ট্রেনিং ছাড়া ব্যাঙ্গের ছাতার মতো ফার্মেসি খুলে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। ভূয়া চিকিৎসা ও হয়রানী থেকে রক্ষা পেতে সুবর্ণচরের সচেতন নাগরিকদের জোর দাবী জানান।
বদলী কোন উপযুক্ত শাস্তি নয়, একজন ফার্মাসিস্টের মত মহান দায়িত্ব থাকা ব্যাক্তি তার কর্মস্থলে সরকারি দায়িত্ব পালন না করে ভূয়া এমবিবিএস পরিচয় দিয়ে সুবর্ণচর ও হাতিয়ার বিভিন্ন স্থানে চেম্বার খুলে সাধারণ রুগিদের সাথে দীর্ঘ দিন থেকে এ ধরনের প্রতারনার সর্বোচ্চ শাস্তি কামনা করছেন সচেতন মহল।
এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তথা নোয়াখালীর জেলা প্রশাসক, জেলা সিভিল সার্জন,দুদক নোয়াখালী শাখা ও পুলিশ সুপারের হস্তক্ষেপ জরুরি হয়ে পড়েছে।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর নোয়াখালী প্রতিনিধি ইব্রাহিম খলিল। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.