সীমান্ত হত্যা বন্ধের দাবীতে প্রতিকী লাশ নিয়ে একক পদযাত্রা শেষ করলেন হানিফ

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি: সীমান্ত হত্যা বন্ধের দাবিতে প্রতিকী লাশ ঘারে করে ঢাকা থেকে কুড়িগ্রামের অনন্তপুর সীমান্তের অভিমুখে পায়ে হেঁটে একক পদযাত্রায় সীমান্তবর্তী কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী থেকে পদযাত্রা শেষ করেছেন হানিফ বাংলােেদশী।

গত শুক্রবার (১১ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০ টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে থেকে একক পদযাত্রা শুরু করেন হানিফ। দীর্ঘ ২০ দিন পায়ে হেঁটে আসার পর অবশেষে আজ বুধবার (৩০ সেপ্টেম্বর) বিকালে নাগেশ্বরী পৌরসভার প্রতীক মুক্তমঞ্চে পথসভার মাধ্যমে পদযাত্রা সমাপ্তি ঘোষণা করেন তিনি। এ সময় বক্তব্য রাখেন হানিফ বাংলাদেশি, ফেলানীর বাবা নুর ইসলাম, মা জাহানারা বেগম প্রমুখ।

হানিফ তার বক্তব্যে জানায় ২০১১ সালের ৭ জানুয়ারী অনন্তপুর সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে প্রাণ হারান বাংলাদেশি কিশোরী ফেলানী। হত্যার ৯ বছর অতিবাহিত হলেও বিচার পায়নি ফেলানীর পরিবার। সীমান্তে বছরের পর বছর ভারতীয় বিএসএফ পাখির মতো গুলি করে মেরে ফেলে বাংলাদেশি নাগরিককে।

অথচ এ যাবত কারও কোনো বিচার পায়নি। বাংলাদেশ-ভারত প্রতিবেশী ও বন্ধুপ্রতিম দেশ। বাংলাদেশ ভারতের কাছে মানবিক আচরণ প্রত্যাশা করে। কিন্তু বিএসএফ মাঝে মাঝেই বাংলাদেশীদের গুলি করে হত্যা করে। কেউ চোরাকারবারি হলে আইনের আওতায় বিচার করা যেতে পারে। কিন্তু সীমান্তে গুলি করে হত্যা মানবতার চরম লঙ্ঘন।’

হানিফ আরও বলেন, যখন যে দল রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসে তারা দীর্ঘ মেয়াদে ক্ষমতায় থাকার জন্যে ভারতে তোষামোদী ছাড়া জনগণের জানমাল ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় কোন সরকারই কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহন করেনি।

এই সরকারের ১২ বছরের শাসন আমলে বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে এমনকি কোন কোন ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ভূখন্ডের অভ্যন্তরে অনুপ্রবেশ করে প্রায় ৫০০ জন বাংলাদেশিকে হত্যা করেছে বিএসএফ।

গত ১৯৯৬ সাল থেকে ২৫ বছরে ১২৬৩ জনকে হত্যা করা হয়েছে। স্বাধীনতার পর গত ৫০ বছরে প্রায় ৩ হাজার বাংলাদেশিকে হত্যা করেছে বিএসএফ। শাসক দলগুলোর দুর্বল ও নতজানু পররাষ্ট্রনীতি এবং ক্ষমতা আঁকড়ে রাখার হীনস্বার্থে ভারত তোষণ নীতির কারণে বিএসএফ ধারাবাহিক হত্যাকা- চালিয়ে যেতে পারছে।

অথচ আমরা দেখেছি অপেক্ষাকৃত ছোটদেশ নেপালের একজন নাগরিককে হত্যা করার পর নেপালের জনগণ ও সরকারের তীব্র প্রতিক্রিয়ার মুখে আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমা চেয়েছিল ভারত।

আমরা অত্যন্ত স্পষ্টভাবে বাংলাদেশ সরকারকে জানিয়ে দিতে চাই, অবিলম্বে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী কর্তৃক বাংলাদেশের নাগরিকদের হত্যাকা- বন্ধ করতে হবে। বহুমাত্রিক কূটনৈতিক তৎপরতার মাধ্যমে ভারতের সাথে বাংলাদেশের মানুষের স্বাধীন ও মর্যাদাপূর্ণ প্রতিবেশীর সম্পর্ক নিশ্চিত করতে হবে।

ফেলানির বাড়ি পর্যন্ত না যাওয়ার ব্যাপারে বলেন, আমার খুব ইচ্ছে ছিলো বোন ফেলানির বাড়িতে যাবো। তার বাবা মায়ের সাথে দেখা করব, কথা বলব। যেহেতু ফেলানির নিজ উপজেলা সদরে এসে ফেলানির বাবা মায়ের সাথে দেখা হলো, কথা হলো সেহেতু আমি এখান থেকেই আমার পদযাত্রা শেষ করলাম।

এদিকে ফেলানী হত্যার ৯ বছর অতিক্রম হলেও বিচার না পেয়ে হতাশ ফেলানির পরিবার। তার বাবা মায়ের দাবি দ্রুত তাদের মেয়ে হত্যার বিচার করে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান করা হোক।

হানিফের বাড়ি নোয়াখালীর সুধারাম উপজেলার নিয়াজপুর ইউনিয়নের জাহানাবাদ গ্রামে। নোয়াখালী বুলুয়া ডিগ্রি কলেজ থেকে ১৯৯৯ সালে উচ্চমাধ্যমিক পাস করেন তিনি।

সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি মো. হাফিজুর রহমান হৃদয়। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.