সিংড়ার বামিহাল শান্তির জনপদকে অশান্ত করার পায়তারা দুঃসহ স্মৃতি বয়ে বেড়াচ্ছেন অনেকে

নাটোর প্রতিনিধি: নাটোরের সিংড়া উপজেলার এক সময় সর্বহারা আতংকের জনপদ ছিলো বামিহাল। তাছাড়া আধিপত্য বিস্তার কেন্দ্র করে এই জনপদ বারবার রক্তাক্ত হয়েছে। সর্বহারারা বিতারিত হলেও শান্তির ফিরে আসেনি।
এমতাবস্থায় ২০০৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন তরুন সংসদ জুনাইদ আহমেদ পলক।
তিনি এ জনপদে শান্তির স্থাপন করেন। কিন্তু প্রতিপক্ষ আফজাল ও আফতাব বাহিনীর নির্মমতায় বারবার রক্তাক্ত হয়েছে। সর্বশেষ ২০১৯ সালে ৬ জানুয়ারি সেদিন হাটবার আফজাল বাহিনীর সেকেন্ড ইন্ড কমান্ড আত্তাব মুরশেদুলকে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে কালামের চা স্টলে আসতে বলে তখন বামিহাল গ্রাম শান্তি সুবাতাস বইতে ছিল।
কালামের চা স্টলে আসা মাত্র চা পাতি দিয়ে কুপিয়ে মুরশেদুলের বাম পা শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন এবং ডান পা হাতুড়ি দিয়ে ভেঙে দিয়ে কাঁটা পা নিয়ে যায়। তারপর সন্ত্রাসীদের সাথে গুলি বিনিময়ে আফজাল বাহিনীর প্রধান আফজাল নিহত হয়। তারপর থেকে বামিহালে আবারও শান্তি ফিরে আসে।
স্থানীয় সাবেক ইউপি সদস্য ফরিদুল ইসলাম বিটিসি নিউজকে জানান, আফজাল বাহিনীর নেতৃত্ব এখন আফতাব ওরফে আত্তার হাতে। তার দ্বারা এ জনপদের কেউ নিরাপদ নয়। অথচ সে এখন এলাকায় ফিরে এসেছে। আবারো আধিপত্য বিস্তারে চেষ্টা করছে। সাধারণ মানুষকে হুমকি,ধামকি দিচ্ছে। মামলা তুলে নেয়ার জন্য আমাদের লোকজনকে হুমকি দিচ্ছে। যেকোনো সময় তারা আবারো এ জনপদকে রক্তাক্ত করতে পারে।
তিনি আরো বলেন, ইউনিয়নে পুরনো আওয়ামী লীগ আমরা। আমরাই তথাকথিত নব্য আওয়ামী লীগের হাতে বারবার রক্তাক্ত হয়েছি। জানা যায়, আফজাল ও আফতাব বাহিনীর হাতে নির্মমভাবে নিহত হন অনেকে। দুঃসহ স্মৃতি নিয়ে অনেকে বেঁচে আছেন।
১৯৯৮ সালে ১০ ডিসেম্বর দুদুর চা স্টলে হামলায় আফজাল গ্রুপের লোকজন মান্নানকে তার দোকানে বসে থাকা অবস্থায় দোকান ঘর থেকে টেনে হেচরে বেরিয়ে নিয়ে এসে শরীরের বিভিন্ন জায়গায় চাইনিজ কুড়াল দিয়ে এলোপাথাড়ি কুপিয়ে হত্যা করে। মান্নানের মৃত্যু নিশ্চিত করে খোকা আকন্দের দোকানে আশ্রয় নেয়া রাজ্জাক ও রশিদকে এলোপাথাড়ি কুপিয়ে জখম করে। রাজ্জাকের বাম হাতের দুইটি আঙ্গুল কেটে যায়। ঐদিনই কছিমের বাড়িতে হাসেম কে এলোপাথাড়ি কুপিয়ে গুরুতর জখম করে লোকজন ধরাধরি করে ভুটভুটিতে উঠিয়ে নিয়ে সিংড়া হাসপাতালে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত্যু ঘোষণা করে।
২০১২ সালে রাস্তার মধ্যে ভ্যান গাড়ি দিয়ে আলহাজ আব্দুল কুদ্দুসের মটরসাইকেলের পথরোধ করে চা পাতি দিয়ে কুপিয়ে বাম পায়ের হাড্ডি থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেয় সাথে সাথে কাঁটা পা নিয়ে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসকদের পরামর্শে ঢাকা পুঙ্গ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় দীর্ঘদিন চিকিৎসা করে কাঁটা হাড্ডি জোরা লাগানো হয় এখনও কুদ্দুস স্বাভাবিক ভাবে চলতে পারে না।
২০১২ সালে বামিহাল হাটবারে মোঃ মজিবর আকন্দকে বাড়িতে ডেকে নিয়ে ডান পা কেটে বিচ্ছিন্ন করে দেয়। মজিবরের পা নিজেদের জিম্মায় রেখে দেয় এখন পর্যন্ত কাঁটা পা ফেরত পাওয়া যায়নি সে। ২০১৩ সালে সকাল বেলা বামিহাল বাসস্ট্যান্ডে সেলিম সরকার ও নাজিমকে আফজাল বাহিনী এলোপাথাড়ি কুপিয়ে গুরুতর জখম করে সেলিম সরকারকে ঘটনাস্থলে মৃত্যু নিশ্চিত করে এবং নাজিমের শরীরে বিভিন্ন জায়গায় চাইনিজ কুড়াল দিয়ে কুপিয়ে জখম করে। সে দুঃসহ স্মৃতি বহন করে নাজিম জীবনযাপন করছে।
স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, এলাকার আধিপত্য বিস্তার কে কেন্দ্র করে এ জনপদকে বারবার রক্তাক্ত করেছে আফজাল বাহিনী। তাঁর ম‚ত্যুর পর আফতাব নেতৃত্ব দিচ্ছে। আফতাবের নেতৃত্বে এনামুল, বায়েজিদ, আইয়ুব সহ ১০/১২ জন জামিন নিয়ে এলাকায় অবস্থান করছে। এতে করে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে বিরাজ করছে আতংক।
দীর্ঘদিন পর আবারো অশান্ত হয়ে উঠছে। এ জন্য স্থানীয় সংসদ সদস্য জুনাইদ আহমেদ পলক এমপির সুদৃষ্টি কামনা এবং আইন শৃংখলা রক্ষায় প্রশাসনকে কঠোর ভূমিকা রাখার দাবি জানিয়েছে।
এ বিষয়ে সিংড়া থানার অফিসার ইনচার্জ নুরে আলম সিদ্দিকী বিটিসি নিউজকে জানান, আইন শৃংখলা রক্ষায় আমরা কাজ করছি। অপরাধ কেউ করলে তাঁকে আইনের আওতায় আনা হবে।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর নাটোর প্রতিনিধি খান মামুন। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.