সংসদে বিরোধীদের মোকাবিলার কৌশল শেখালেন নরেন্দ্র মোদী

(সংসদে বিরোধীদের মোকাবিলার কৌশল শেখালেন নরেন্দ্র মোদী–ছবি: প্রতিনিধির)
কলকাতা-হাওড়া (ভারত) প্রতিনিধি: আক্রমণ রুখতে শুধুমাত্র প্রতিরোধ নয়, চাই পাল্টা আক্রমণও।  তবে অবশ্যই সংসদীয় রীতি-নীতি মেনে, শান্তি বজায় রেখে, গণতান্ত্রিক পথে। সংসদের বাদল অধিবেশনের বাকি দিনগুলোতে এবারে বোধহয় এই পথেই হাঁটতে চায় বিজেপি।
আজ মঙ্গলবার (০৩ আগস্ট) সেই কৌশলেরই পাঠ নিলেন বিজেপি সাংসদরা। বাদল অধিবেশনে কীভাবে আরও সুসংহতভাবে বিরোধী আক্রমণের মোকাবিলা করা যায়, তা স্থির করতে আজ বসেছিল সংসদীয় দলের বৈঠক। সেখানে পৌরহিত্য করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। জোটবদ্ধ বিরোধী আক্রমণ প্রতিহত করতে সাংসদদের ভূমিকা কী হবে তা বুঝিয়ে বলেন প্রধানমন্ত্রী।
এদিন প্রধানমন্ত্রীর ব্যস্ততা ছিল তুঙ্গে। ফলে বাংলা থেকে নির্বাচিত বিজেপি সাংসদদের একটি প্রতিনিধিদলকে আলাদাভাবে সময় দিতে পারেননি তিনি। পশ্চিমবঙ্গে ভোট-পরবর্তী হিংসা, ভুয়ো  টিকাকরণ, ভ্যাকসিন-দুর্নীতির মতো গুরুত্বপূর্ণ অভিযোগ নিয়ে মোদীজির সঙ্গে দেখা করতে চেয়েছিলেন বাংলার সাংসদরা। নেতৃত্বে ছিলেন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর প্রতিনিধি হিসেবে তাঁদের সঙ্গে কথা বলেন কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান।
তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হলো, পশ্চিমবঙ্গ থেকে নির্বাচিত সমস্ত বিজেপি সাংসদকে আজ সন্ধ্যায় দিল্লির আরএসএস কার্যালয়ে হাজির হতে বলা হয়েছে। কারণটা সুস্পষ্টভাবে ব্যাখ্যা করা না হলেও, রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের ধারণা,বাংলার সাংসদদের এবারে কঠোর অনুশাসনে বাঁধতে চাইছে সঙ্ঘ। তাঁদের কারও কারও কথাবার্তা-আচরণ সংগঠনের নীতি এবং আদর্শের পরিপন্থী বলে মনে হয়েছে নেতৃত্বের। সাম্প্রতিক কিছু ঘটনা, মন্তব্য এবং বিতর্ক জনমনে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে বলে আশঙ্কাও করা হচ্ছে। তাই ভবিষ্যতের জটিলতা এড়াতে সম্ভবত এখন থেকেই সংসদ সদস্যদের সচেতন করতে চায় সঙ্ঘ। বিশেষ করে বিজেপিতে নবাগতদের মধ্যে দলের নীতি এবং আদর্শ সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা তৈরি করে দিতে চায় গেরুয়া শিবির। সেই লক্ষ্যেই সাংসদদের ক্লাস নেওয়ার কথা সঙ্ঘের। ক্লাসে অবশ্যই উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষকে।
পেট্রোপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি, করোনা সঙ্কট, বিশেষ করে পেগাসাস ইস্যুতে বিরোধীদের ক্রমাগত আক্রমণ সংসদে নিঃসন্দেহে গভীর অস্বস্তিতে ফেলেছে বিজেপি সরকারকে। এর মোকাবিলার গণতান্ত্রিক কৌশলটাই আজ বিজেপি সংসদীয় দলের বৈঠকে প্রাধান্য পেয়েছে স্বাভাবিকভাবেই। কিন্তু সাংসদদের উদ্বুদ্ধ করতে প্রধানমন্ত্রী তাঁর সরকারের বেশ কিছু ইতিবাচক দিকও তুলে ধরেছেন। যেমন, জিএসটি আদায়ের হার বেড়েছে উল্লেখযোগ্যভাবে। কোভিড পরিস্থিতিতেও ঘুরে দাঁড়াচ্ছে দেশের অর্থনীতি। করোনা রুখতে ভ্যাকসিন দেওয়ার হারও অত্যন্ত স্বস্তিদায়ক। আসে অলিম্পিক্সে সাফল্যের প্রসঙ্গও।এ ছাড়া গোটা আগস্ট মাসটাকেই সরকারের সাফল্যের মাস হিসেবে তুলে ধরতে চাইছেন প্রধানমন্ত্রী।
সংসদের বাদল অধিবেশন চলবে আগামী ১৩ আগস্ট পর্যন্ত। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর মোটিভেশন সংসদে দলের ভূমিকাকে কীভাবে আরও প্রাণবন্ত করে তোলে,সেটাই এখন দেখার বিষয়।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ (বাংলাদেশ) এর কলকাতা-হাওড়া (ভারত) প্রতিনিধি সৌম্য সিংহ। # 

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.