শিক্ষার্থীদের পোষাক, জুতা ও স্কুল ব্যাগ নেই তবু ও শিক্ষকের অবদানে শীর্ষ

নিজস্ব প্রতিবেদক: এক শিক্ষকের ব্যাক্তিগত অবদানে সরকারী প্রাথামিক বিদ্যালয় ও শিক্ষার্থীরা শীর্ষ স্থানের সুনাম বহন করছে। রাজশাহীর চারঘাট উপজেলার জাফরপুর গ্রামের প্রত্যন্ত অঞ্চলে এই বিদ্যালয়টি ১৯৭২ স্থাপিত এবং ১৯৮৭ সরকারী করণ হয়। ওই শিক্ষকের কারনে বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীরা সময় মতো চলে আসে। পরিবারের কোন সদস্যকে তাদের সন্তানদের বিদ্যালয় পাঠাতে বাধ্য করতে হয় না।   
দেশ স্বাধীনের পরেই বিদ্যালয়টি স্থানীয়দের উদ্দ্যোগে প্রতিষ্ঠিত হয়। ওই সময় পড়ালেখার গুরত্ব তেমন ভাবে না হলেও পরবর্তীতে হাটি হাটি পা পা করে অনেক উন্নতি হয়েছে বিদ্যালয়টির। বর্তমান সময়েও অনেকটা পিছিয়ে ছিল এই বিদ্যালয়ের মান উন্ন্য়ন।
তবে সহকারী শিক্ষক নাহিদ হাসান নিজ প্রচেষ্ঠায় বিদ্যালয়ের পরিবেশ ও লেখাপড়ার মান সর্বচ্চ পর্যায়ে উন্নতি করেছেন বলে জানায়, প্রতিষ্ঠানের কমিটি ও স্থানীয়রা। সাক্ষাৎকালে স্থানীয়রা বলেন, এক শিক্ষকের অক্লান্ত পরিশ্রম এবং শিক্ষার্থীদের নিত্য প্রয়োজনিয়তা প্রায় পূরণ করেন তিনি। বিদ্যালয়ের বরাদ্দের অপেক্ষা না করে বিদ্যালয়ের পরিবেশ ও শিক্ষার মান উন্নয়ন করে যাচ্ছেন। তার প্রমান বয়ে চলেছে উপজেলার বার্ষিক পরিক্ষাসহ পিএসসির ফলাফল।
প্রসঙ্গত, সহকারী শিক্ষক নাহিদ হাসান বলেন, প্রকৃত অর্থে নিজেকে দিয়ে অন্যের জীবনের প্রত্যাশা গুলো উপলব্দি হয়। প্রত্যন্ত অঞ্চলের বিদ্যালয়ের সিংহভাগ শিক্ষার্থীরা হলো দিনমুজুর, কৃষক, ভ্যান চালক, অটো রিক্সা চালকসহ খেটে খাওয়া মানুষের সন্তান। এই সকল ছাত্র-ছাত্রীদের অনেকের ভালোমানের পোষাক নেই, জুতা ও স্কুল ব্যাগ নেই। অনেক সময় সকালের খাবার ও তাদের হয় না। অজানতে অনেকে ছাত্র-ছাত্রী না খেয়ে স্কুলে পাঠদান শেষে করে বাড়ি ফিরছে। হয়তো দুপুরের খাবার তাদের ভাগ্যে হচ্ছে নতুবা রাতের বেলায় দু-মুঠো খেয়ে দিনটি পার করছে।
এছাড়া ওই সকল পরিবার তাদের সন্তানের জন্য গৃহ শিক্ষকের খরচ বহন করতে পারছে না। তার জন্য শিক্ষার্থীদের তিনি নিজেই পাঠদান দেন। ওই শিক্ষকের সাধ্যের মধ্যে চেষ্ঠা করে যাচ্ছেন, আল্লাহর রহমতে ভবিষ্যৎতেও বিদ্যালয়ের জন্য সর্বচ্চ সেবা করার চেষ্ট করে যাবেন।
বর্তমান এই বিদ্যালয়ের ২শত ৯জন শিক্ষার্থী। মোট ৫ জন শিক্ষক ও ১জন পিয়ন নিয়ে বিদ্যালয়ের প্রতিদিনের কর্মসূচী পালিত হয়। ২জন পুরুষ এবং ৩জন নারী শিক্ষক দিয়ে ১ম শ্রেনী হতে ৫ম শ্রেনী পর্যন্ত পাঠদান দেয়া হয়। ওই সকল শিক্ষকের মধ্যে অনেক মাতৃকালিন ছুটি, কেউ বা অসুস্থ থাকছে কিন্ত শিক্ষক নাহিদ হাসান তার দায়িত্ব পালনে অটুট। তার অবদানের ঋণ পরিশোধ করা যাবে না বলে জানান, প্রধান শিক্ষক তাজ মোহাম্মদ আশরাফুল ইসলাম।
একইভাবে উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার নাহিদা বলেন, ওই শিক্ষক প্রকৃত অর্থেই শিক্ষার্থীদের জন্য কাজ করছেন।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, উপজেলার মধ্যে জাফরপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পরিবশে ও শিক্ষার্থীদের পড়ালেখার মান বেশ সুনাম বহন করছে। বিদ্যালয়ের এই সুনামের দাবিদার শিক্ষক নাহিদ হাসান।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর নিজস্ব প্রতিনিধি মো. মাসুদ রানা রাব্বানী / রাজশাহী। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.