লালমনিরহাটে শুধু যানবাহনই নয়, বন্ধ হয়েছে কৃষকদের হালচাষ ও সেচ পাম্প

লালমনিরহাট প্রতিনিধি: জ্বালানী তেল না পেয়ে যানবাহনের মতই বন্ধ হয়ে পড়েছে কৃষকদের হাল চাষের ট্রাক্টর ও সেচ পাম্প। অনিদিষ্টকালের কর্মবিরতীর প্রথম দিনেই চরম বিপাকে পড়েছেন লালমনিরহাটের মানুষ।
স্থানীয়রা জানান, ১৫ দফা দাবিতে গতকাল রোববার (১ ডিসেম্বর) সকাল থেকে গভীর রাত অবদি দেশের তিনটি বিভাগের ন্যায় লালমনিরহাটেও জ্বালানী তেল বিক্রি, বিপনন ও সরবরাহ বন্ধ রাখে পেট্রোলপাম্প ও ট্যাংকলরী মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদ।
হঠাৎ করে তেল বিক্রি বন্ধ করায় চরম বিপাকে পড়েছেন জেলার ৫টি উপজেলার মানুষ। কর্মবিরতীর মাত্র ৬ ঘন্টায় সড়কে যান চলাচল অনেকটাই কমে গেছে। এতে চাহিদা বেড়েছে ব্যাটারী চালিত অটোরিক্সা ও ভ্যান গাড়ির।
তেলের অভাবে চলতি রবি মৌসুমে বিভিন্ন সবজি ক্ষেতে সেচ দিতে পারছেন না চাষিরা। একই ভাবে আমন তোলার পরে আলুসহ বিভিন্ন সবজি চাষের জন্য জমি কর্ষন দিতে পারছেন না কৃষকরা।গরু আর লাঙ্গল ছেড়ে ট্রাক্টরে নির্ভর আধুনিক চাষ পদ্ধতি অভ্যস্থ কৃষকরা জ্বালানী তেলের অভাবে জমি চাষ করতেও পারছেন না। তেল নিতে এসে খালি হাতেই ফিরতে হয়েছে কৃষকদের।
সরেজমিনে জেলার বিভিন্ন ফিলিং স্টেশনে গিয়ে দেখা যায়, মোটর সাইকেল ও বিভিন্ন যানবাহনকে তেলের জন্য দাড়িয়ে থাকতে। তেলের পাম্পে এ চিত্র গভীর রাত পর্যন্ত লক্ষ্য করা যায়। এ সময় ফিলিং স্টেশনে চৌকিদার ছাড়া আর কাউকে দেখতে পাওয়া যায়নি।
লালমনিরহাট-বুড়িমারী মহাসড়কের আদিতমারী ফাতেমা ফিলিং স্টেশনে সকাল থেকে যানবাহনের চালকসহ হাজারো কৃষককে তেল ছাড়াই খালিপাত্র হাতে বাড়ি ফিরতে হয়েছে। অনেক চালক তেল না পেয়ে ফিলিং স্টেশনেই গাড়ি ফেলে চলে গেছেন।
মহিষখোচা থেকে তেল নিতে আসা ট্রাক্টর চালক শফিকুল ইসলাম মানিক বিটিসি নিউজকে বলেন, নিজেরসহ এলাকার কয়েক হাজার চাষির জমি কর্ষন করে দিতে হবে। তাই তেল নিতে এসে শুনি তেল বিক্রি বন্ধ। আগে জানানো হলে তেল সংগ্রহ করে ট্রাক্টর চালাইতাম। ট্রাক্টর বন্ধ থাকলে জমি চাষ হবে না। চাষাবাদ বন্ধ হবে কৃষকের। ক্ষতিগ্রস্থ হবে দেশের প্রাণ কৃষকরা।
কৃষক লালন শাহ বলেন, রবি মৌসুমের শুরুতে জ্বালানী বিক্রি বন্ধ হলে হালচাষ বা সেচ দিতে না পারলে সবজিসহ আগাম বোরো চাষাবাদ ব্যাহত হবে। এ সংকট নিরসনে দ্রæত পদক্ষেপ নিতে সরকারের ঊর্দ্ধতন মহলের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি।
ট্রাক চালক ও কৃষকেরা জানায় দ্রুত তেল সংকট সমাধান না হলে নিত্যপন্যের দামে এর প্রভাব পড়বে।
ফাতেমা ফিলিং স্টেশনের ম্যানেজার বিমল চন্দ্রবিটিসি নিউজকে বলেন, কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তে সকল ধরনের জ্বালানী তেল বিক্রি বন্ধ রয়েছে। সাধারনদের মতই পুলিশ, বিদ্যুৎসহ সরকারী কয়েকটি গাড়ি তেল ছাড়াই ফিরিয়ে দেয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ পেট্রোল পাম্প ও ট্রাংকলরী মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদের লালমনিরহাট জেলা শাখার সভাপতি জেলা আওয়ামীলীগের সিনিয়র সহ সভাপতি সিরাজুল হক বিটিসি নিউজকে বলেন, কেন্দ্রের সিদ্ধান্তে তেল বিক্রি বিপনন ও পরিবহন বন্ধ রয়েছে। বিষয়টি নিয়ে ঢাকায় একটি বৈঠকে বসেছি। ফলপ্রসু আলোচনা হলেই এ সংকট সমাধান হবে।

সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর লালমনিরহাট প্রতিনিধি হাসানুজ্জামান হাসান। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.